সর্বশেষ আপডেট : ৪৫ মিনিট ৫৭ সেকেন্ড আগে
মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪ খ্রীষ্টাব্দ | ১০ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ |

DAILYSYLHET
Fapperman.com DoEscorts

বইখাতা-কলমের পরিবর্তে তারা ধরেছে রিকশা-ভ্যানের হাতল

মেহেরপুরে অন্তত দুই লাখ শিক্ষার্থী রয়েছে। তবে করো’না সংক্রমণ প্রতিরোধে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ থাকায় নিম্নবিত্ত পরিবারের অনেক শিক্ষার্থীই পারিবারিক প্রয়োজনে রোজগারের পথে নেমেছে। যদিও রোববার (১২ সেপ্টেম্বর) থেকে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া হয়েছে, তারপরও কোমলমতি এসব শিক্ষার্থীকে বিদ্যালয়ে ফেরানোটাই এখন চ্যালেঞ্জ।

মেহেরপুরের গাংনীর কোদাইলকাটি গ্রামের রবিউলের ছে’লে ছলিম ও সাবের। স্থানীয় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চ’ম শ্রেণির ছাত্র। করো’না সংকটে দুই ভাই পড়াশোনা ছেড়ে উপার্জনে নেমেছে। লেদ মেশিনে কাজ করে তারা। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত খেটে পরিবারের আহার নিশ্চিত করাই তাদের লক্ষ্য। স্কুল যাওয়া নিয়েও তাদের মা’থাব্যথা নেই। পরিবারের আয়ের পথ না থাকায় তারা বাধ্য হয়েই কাজে নেমেছে।

শুধু ছলিম ও সাবের নয়, মহামা’রি করো’নার কারণে দীর্ঘ দেড় বছরের বেশি সময় দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় অনেক শিক্ষার্থী হাল ধরেছে সংসারের। যে কচি হাতে বইখাতা ও কলম ধ’রার কথা সেই হাতে অনেকেই ধরেছে রিকশা-ভ্যানের হাতল।

শিক্ষার্থীদের অনেকেই এখন কাজ করছে মোটর গ্যারেজ, কল-কারখানায়। আবার অনেকেই বাবার সঙ্গে কৃষিকাজে জড়িয়ে পড়েছে। কেউবা বইখাতা ছেড়ে বউ সেজে চলে গেছে শ্বশুরবাড়ি। তবে কর্তৃপক্ষ বলছে, ঝরে’পড়া এসব শিক্ষার্থীকে স্কুলে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করা হবে।

সূত্রের তথ্যমতে, মেহেরপুর জে’লায় ৩০৮টি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ১৮৮টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ১২০টি কেজি স্কুল, মাদরাসা ২৫টি এবং ১৫টি কলেজ রয়েছে।

কুঞ্জনগরের মহসিন আলী বলেন, বিদ্যালয় বন্ধ থাকায় তার অষ্টম শ্রেণিতে পড়ুয়া নাতি বক্কর ইঞ্জিনচালিত ভ্যান চালানো শুরু করে। দিনে ৩০০ টাকা থেকে ৪০০ টাকা রোজগার করে। টাকার লো’ভে এখন সে আর বিদ্যালয়ে যেতে চাইছে না।

গৃহবধু মঞ্জুরা খাতুন জানান, তার স্বামী অন্য মে’য়েকে বিয়ে করায় সংসারে অভাব-অনটন দেখা দেয়। বাধ্য হয়ে নবম শ্রেণিতে পড়ুয়া ছে’লে সজীবকে কৃষিকাজে নামিয়েছেন।

মেহেরপুরের গাংনী উপজে’লা সহকারী শিক্ষা কর্মক’র্তা সাজাহান রেজা জানান, যেহেতু দীর্ঘদিন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ছিল তাই শিক্ষার্থী ও অ’ভিভাবকদের সঙ্গে যোগাযোগ ছিল না। তাই শিক্ষার্থীদের কী’ অবস্থা সেটা বলা মুশকিল। তবে যেসব শিক্ষার্থী অনুপস্থিত থাকবে তাদের মনিটরিং করে বিদ্যালয়ে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করা হবে।

জানতে চাইলে গাংনী উপজে’লা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মক’র্তা মীর হাবিবুল বাশার বলেন, করো’না সংকটে নিম্নবিত্ত পরিবারগুলোর ওপর দিয়ে যে ঝড় বয়ে গেছে তা অস্বীকারের উপায় নেই। আর এ ঝড় থেকে পরিবারকে রক্ষায় শিক্ষার্থীদের কেউ হয়েছে উপার্জনের খুঁটি। প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেই করো’নাকালে শিক্ষার্থীদের মধ্যে ঝরে পড়ার সংখ্যা বেড়েছে। তবে তার পরিসংখ্যান বিদ্যালয় ও শিক্ষা অফিসে নেই। এখন বিদ্যালয় খুলেছে তাই কয়েকদিন পর প্রকৃত সংখ্যা জানা যাবে এবং ঝরে যাওয়া শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করা হবে।

জে’লা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার ভূপেশ রঞ্জন রায় বলেন, যেহেতু এখন কম সিলেবাস তাই কাজও কম। হোম ভিজিটের মাধ্যমে শিক্ষার্থী ও অ’ভিভাবকদের সঙ্গে মতবিনিময় করে শিক্ষার্থীরা যাতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আসে তার ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সংবাদটি শেয়ার করুন

Comments are closed.

নোটিশ : ডেইলি সিলেটে প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, আলোকচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও বিনা অনুমতিতে ব্যবহার করা বেআইনি -সম্পাদক

© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত

২০১১-২০১৭

সম্পাদকমন্ডলীর সভাপতি: মকিস মনসুর আহমদ
সম্পাদক ও প্রকাশক: খন্দকার আব্দুর রহিম, নির্বাহী সম্পাদক: মারুফ হাসান
অফিস: ৯/আই, ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি, ৯ম তলা, জিন্দাবাজার, সিলেট।
ফোন: ০৮২১-৭২৬৫২৭, মোবাইল: ০১৭১৭৬৮১২১৪
ই-মেইল: dailysylhet@gmail.com

Developed by: