সর্বশেষ আপডেট : ১৫ ঘন্টা আগে
বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪ খ্রীষ্টাব্দ | ১১ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ |

DAILYSYLHET
Fapperman.com DoEscorts

এক সপ্তাহে সিলেটসহ সারাদেশে বজ্রপাতে ৫৬ জনের মৃত্যু

ফেব্রুয়ারি থেকে নভেম্বর পর্যন্ত সময়ে দেশে সাধারণত বজ্রপাত হয়ে থাকে। তবে কালবৈশাখী সক্রিয় থাকলে বজ্রপাত বেড়ে যায়। চলতি মাসে প্রতিদিনই বজ্রপাত হচ্ছে দেশের বিভিন্ন এলাকায়। এতে নিয়মিত মানুষের মৃ’ত্যুও হচ্ছে।

জুনের প্রথম সপ্তাহেই বজ্রপাতে সারাদেশে ৫৬ জনের মৃ’ত্যুর তথ্য রয়েছে। তাদের মধ্যে- ৭ জুন ৯ জন, ৬ জুন ২৫ জন, ৫ জুন ৭ জন, ৪ জুন ৯ জন, ৩ জুন ৫ জন এবং ১ জুন একজনের মৃ’ত্যু হয়েছে। ২ জুন বজ্রপাতে কারও মৃ’ত্যুর কথা জানা যায়নি।

আবহাওয়াবিদরা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে দেশে বজ্রপাতের পরিমাণ বেড়েছে। তবে বজ্রপাত স’ম্পর্কে সচেতন হলে মৃ’ত্যুর সংখ্যা কমিয়ে আনা সম্ভব।

এ বিষয়ে আবহাওয়াবিদ মজিদুল ইস’লাম বলেন, ‘ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু করে নভেম্বর পর্যন্ত যখনই মেঘ হোক তখনই বজ্রপাত হতে পারে। কালবৈশাখী যতক্ষণ সক্রিয় থাকে, সেটা বজ্রপাতের জন্য উপযু’ক্ত পরিবেশ। তবে শীতকালে বজ্রপাত হয় না, কারণ তখন মেঘ তৈরি হয় না। আর জুনে মৌসুমী বায়ু এলে বজ্রপাত কমে যায়। বজ্রপাতের জন্য যে মেঘগুলো দরকার, সেগুলো হলে যেকোনো সময় বজ্রপাত হতে পারে।’

আরেক আবহাওয়াবিদ বলেছেন, ‘অনেক বজ্রপাত হয়। কিন্তু আম’রা দেখি কম। বড় বজ্রপাত হলে আম’রা দেখতে পাই। অথবা মেঘ থেকে যেটা মাটি পর্যন্ত স্প’র্শ করে সেটা দেখি। অসংখ্য বজ্রপাত হয়, যা চিন্তাও করা যায় না।’

জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বজ্রপাতের পরিমাণও বেড়েছে বলেও মনে করেন এই আবহাওয়াবিদ।

বজ্রপাত গণনার যন্ত্র বিকল?

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বজ্রপাত পর্যবেক্ষণ করতে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদফতরের গণনার যন্ত্র থাকলেও তা আপাতত কাজ করছে না। ফলে দেশে প্রতিনিয়ত কী’ পরিমাণ বজ্রপাত হচ্ছে, তা জানাও সম্ভব হচ্ছে না।

বজ্রপাতের বিষয়ে তথ্য জানতে চাইলে সম্প্রতি এক আবহাওয়াবিদ  বলেন, ‘বজ্রপাত গণনা করার যন্ত্র আছে। কিন্তু বন্ধ দেখতে পাচ্ছি। আমি ২ থেকে ৩ মাস ধরে এটা বন্ধ দেখছি। জানি না যে, জিনিসটাই কি নষ্ট নাকি মনিটরটাই নষ্ট।’

এ বিষয়ে বজ্রপাত পর্যবেক্ষণ যন্ত্র স্থাপন প্রকল্প সংশ্লিষ্ট কর্মক’র্তা ও আবহাওয়াবিদ মজিদুল ইস’লাম  বলেন, ‘আমাদেরটা টেস্টিং পর্যায়ে আছে। ওটা বসানো হয়েছে, ফাইনালি কমিশনিং এখনও হয়নি। কখনো ইন্টারনেট থাকে না, কখনো বিদ্যুৎ থাকে না – এসব সমস্যা সমাধান করা হচ্ছে।’

তাহলে বাংলাদেশে কি এখনও এই প্রযু’ক্তি চালু হয়নি জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘রানিং (চালু) অবস্থাতেই আছে। তবে যে সমস্যাগুলো পাচ্ছি, সেগুলো আম’রা এখন সমাধান করছি। চলতি জুনের শেষে এই প্রকল্প শেষ হবে। প্রকল্প শেষ হওয়ার আগে কমিশনিং হচ্ছে না। আমাদের এটা চলমান আছে, কমিশনিং করেই এর টাকা দেব।’

সম্প্রতি এক আবহাওয়াবিদ যন্ত্র কাজ না করার বিষয়টি অবহিত করেছেন, এ বিষয়ে জানতে চাইলে মজিদুল ইস’লাম বলেন, ‘যে বলেছে, তাকে দেখিয়ে দিতে বলতেন যে, এটা চলে না। যন্ত্র সচল আছে। অনেক সময় ইন্টারনেট থাকে না, তখন ডাটা দেখতে পারবে না। ইন্টারনেট এলে ডাটা চলে আসবে সার্ভা’রে। এই সমস্যাগুলো সারা বাংলাদেশেই। দুর্গম এলাকায় ইন্টারনেট নিয়মিত থাকে না, এটা সবাই জানে। আপনি এলে আমা’র সার্ভা’রে ডাটা দেখিয়ে দিতে পারব। এখন ইন্টারনেট নাই, সেই সমস্যা তো আমাদের সমাধান করতে হবে।’

গত ফেব্রুয়ারি থেকে মে পর্যন্ত কত বজ্রপাত হয়েছে, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমি থাকি এক জায়গায়, আর এর সার্ভা’র অন্য জায়গায়। জুনে প্রচুর ব্যস্ততা আছে। তাই এসব তথ্য নিতে জুনের পর আসেন।’

সমস্যাগুলো সমাধান হলে সার্ভা’র দেখতে যাওয়ার জন্য বলেন তিনি।

বজ্রপাত থেকে বাঁচতে যা করবেন

বজ্রপাত স’ম্পর্কে সচেতন হলেই অনেক মৃ’ত্যু এড়ানো সম্ভব। বজ্রপাতের সময় মৃ’ত্যু এড়াতে বেশকিছু পরাম’র্শ দিয়েছে আবহাওয়া অধিদফতর। সেগুলো হলো-

পাকা বাড়ির নিচে আশ্রয় নিন : ঘন ঘন বজ্রপাত হতে থাকলে কোনো অবস্থাতেই খোলা বা উঁচু জায়গায় থাকা যাবে না। এ অবস্থায় সবচেয়ে ভালো হয়, কোনো দালানের নিচে আশ্রয় নিতে পারলে।

উঁচু গাছপালা ও বিদ্যুতের লাইন থেকে দূরে থাকুন : সাধারণত উঁচু গাছপালা বা বিদ্যুতের খুঁটিতে বজ্রপাতের সম্ভাবনা বেশি থাকে। তাই এসব জায়গায় যাবেন না বা কাছাকাছি থাকবেন না। ফাঁকা জায়গায় কোনো যাত্রী ছাউনি বা বড় গাছ ইত্যাদিতে বজ্রপাত হওয়ার সম্ভাবনা অ’ত্যন্ত বেশি থাকে।

জানালা থেকে দূরে থাকুন : বজ্রপাতের সময় বাড়িতে থাকলে জানালার কাছাকাছি থাকবেন না। জানালা বন্ধ রাখু’ন এবং ঘরের ভেতর থাকুন।

ধাতব বস্তু এড়িয়ে চলুন : বজ্রপাত ও ঝড়ের সময় বাড়ির ধাতব কল, সিঁড়ির রেলিং, পাইপ ইত্যাদি স্প’র্শ করবেন না। এমনকি ল্যান্ড লাইন টেলিফোনও স্প’র্শ করবেন না। বজ্রপাতের সময় এগুলোর সংস্প’র্শ এসে অনেকে আ’হত হন।

টিভি-ফ্রিজ থেকে সাবধান : বজ্রপাতের সময় বৈদ্যুতিক সংযোগযু’ক্ত সব যন্ত্রপাতি স্প’র্শ করা থেকে বিরত থাকুন। টিভি, ফ্রিজ ইত্যাদি বন্ধ করা থাকলেও ধরবেন না। বজ্রপাতের আভাস পেলে আগেই এগুলোর প্লাগ খুলে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন করুন। অব্যবহৃত যন্ত্রপাতির প্লাগ আগেই খুলে রাখু’ন।

গাড়ির ভেতরে থাকলে : বজ্রপাতের সময় রাস্তায় গাড়িতে থাকলে যত দ্রুত সম্ভব নিরাপদ অবস্থানে ফেরার চেষ্টা করুন। যদি প্রচণ্ড বজ্রপাত ও বৃষ্টির সম্মুখীন হন, তবে গাড়ি কোনো গাড়িবারান্দা বা পাকা ছাউনির নিচে নিয়ে যান। এ সময় গাড়ির কাঁচে হাত দেয়া বিপৎজনক হতে পারে।

পানিতে নামা যাবে না : ঝড়-বৃষ্টির সময় রাস্তায় পানি জমাটা আশ্চর্য নয়। তবে বাজ পড়া অব্যাহত থাকলে সে সময় রাস্তায় বের না হওয়াই মঙ্গল। একে তো বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে দুর্ঘ’টনার সম্ভাবনা থাকে। উপরন্তু কাছাকাছি কোথাও বাজ পড়লে বিদ্যুত্‍স্পৃষ্ট হওয়ার সম্ভাবনাও থেকে যায়।

খালি পায়ে বা পা খোলা জুতো নয়: বজ্রপাতের সময় চামড়ার ভেজা জুতা বা খালি পায়ে থাকা খুবই বিপৎজনক। যদি একান্ত বেরোতেই হয়, তবে পা ঢাকা জুতো পরে বের হন। রাবারের গামবুট এক্ষেত্রে সব চেয়ে ভালো কাজ করবে।

চারপাশে খেয়াল রাখু’ন: বজ্রপাতের সময় রাস্তায় চলাচলের সময় আশেপাশে খেয়াল রাখু’ন। যেদিকে বাজ পড়ার প্রবণতা বেশি সেদিকটি বর্জন করুন। কেউ আ’হত হলে তাকে দ্রুত হাসপাতা’লে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করুন।

সংবাদটি শেয়ার করুন

Comments are closed.

নোটিশ : ডেইলি সিলেটে প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, আলোকচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও বিনা অনুমতিতে ব্যবহার করা বেআইনি -সম্পাদক

© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত

২০১১-২০১৭

সম্পাদকমন্ডলীর সভাপতি: মকিস মনসুর আহমদ
সম্পাদক ও প্রকাশক: খন্দকার আব্দুর রহিম, নির্বাহী সম্পাদক: মারুফ হাসান
অফিস: ৯/আই, ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি, ৯ম তলা, জিন্দাবাজার, সিলেট।
ফোন: ০৮২১-৭২৬৫২৭, মোবাইল: ০১৭১৭৬৮১২১৪
ই-মেইল: dailysylhet@gmail.com

Developed by: