cialis fiyat cialis sipariş http://umraniyetip.org/
Fapperman.com DoEscortscialis viagra viagra cialis cialis viagra cialis20mgsite.com geciktirici sprey azdırıcı damla
মা’ওলানা মিজানুর রহমানের মন খা’রাপ। গত ২০ বছরে ৪০টি ঈদ পালিত হয়েছে। দেশে থেকেও একটি ঈদ তিনি পরিবারের সঙ্গে কা’টাতে পারেননি। এবারের ঈদও তাকে পরিবার থেকে দূরে, ভীষণ রকম একলা কা’টাতে হবে। এ বিষয়টা বারবারই তার মন খা’রাপ বাড়িয়ে দিচ্ছে।
মুয়াজ্জিন হিসাবে মা’ওলানার পথচলা দুই দশকের। ২০০২ সালের জুন মাসে তিনি বিয়ে করেন। জুলাই মাসে যু’ক্ত হন পুরান ঢাকার বেচারাম দেউড়ির আবদুল্লাহ জামে ম’সজিদে। মুয়াজ্জিন হিসাবেই তার নিয়োগ।
কখনো কখনো ই’মাম সাহেব না থাকলে ই’মামের দায়িত্বও পালন করেন তিনি। তবে ই’মাম সাহেব একটু আধটু ছুটিছাঁটা পেলেও তিনি পান না। তাকে বাড়ি যেতে হয় ঈদের পর।
তিনি বলেন, ‘এখন ঈদের নামাজ শেষ করে তারপর বাড়ি যাই। কিন্তু বাড়ি যাওয়ার আগে আজান দেওয়ার দায়িত্ব অন্য কাউকে দিয়ে যেতে হয়। কমিটির কেউ সেই দায়িত্ব নেন না। একটি সময় ছিল ই’মাম সাহেব ঈদের নামাজ পড়িয়ে বাড়ি চলে যেতেন। ফিরতেন ঈদের তৃতীয় দিন। আমাকে তখন ঈদের তিনদিন পর বাড়ি যেতে হতো।’
ঈদের প্রধান অনুষঙ্গ ঈদের নামাজ। ঈদকে কেন্দ্র করে আনন্দে মেতে উঠে সবাই। ঈদের কর্মবিরতিতে সবাই ফিরে যায় আপনজনদের কাছে। কিন্তু ঈদের নামাজ সুষ্ঠুভাবে পালন করার জন্য ই’মাম-মুয়াজ্জিনরা রয়ে যান ম’সজিদে। উৎসর্গ করেন পরিবারের সঙ্গে ঈদ উদযাপনের আনন্দ।
মা’ওলানা মিজানুর বললেন, ‘চাঁদরাতে প্রচণ্ড একলা লাগে। সকালে মু’সল্লিরা আসেন, কুলাকুলি করেন, বাড়ি গিয়ে খেয়ে আসার দাওয়াত দেন, চলে যান। সবাই নামাজ পড়ে চলে গেলে আবার একলা হয়ে যাই। সবাই তো পরিবার নিয়ে ঈদ আনন্দে ব্যস্ত। আমা’র পরিবার দূরে, আমি একলা ম’সজিদে। আমি নিজে রান্না করে খাবার খাই। ঈদের দিনের ব্যস্ততায় রান্না করতে পারি না। সবাই বলে বাড়ি গিয়ে খেয়ে আসতে। কিন্তু কেউ সঙ্গে করে নিয়ে যায় না। কিংবা খাবার দিয়ে যায় না। ফলে না খেয়ে থাকতে হয়। এটা আগে প্রায়ই হতো, এখন কম হয়। দীর্ঘ সময় এখানে থাকার কারণে অনেকের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা তৈরি হয়েছে। তারা খেয়াল করেন।’
ঢাকার ই’মাম সাহেবদের অবস্থা সচ্ছল। তারা গ্রাম থেকে পরিবার ঢাকায় নিয়ে আসতে পারেন। কিন্তু মুয়াজ্জিনদের বেতন এত অল্প, তারা চাইলেই পরিবার ঢাকায় আনার সাহস করতে পারেন না।
মা’ওলানা বলেন, ‘সন্তানদের সঙ্গে কখনো ঈদ করতে পারিনি। আমাকে ছাড়া ঈদ করেই তারা অভ্যস্ত। ইচ্ছা হয় তাদের ঢাকায় নিয়ে আসি। কিন্তু বিশ বছর এক আমা’র বেতন একের কোটা অ’তিক্রম করেনি। ঢাকায় পরিবার আনার সাহস করব কী’ভাবে। ম’সজিদ কমিটির শতভাগ মনোযোগ ই’মাম সাহেবদের প্রতি। মুয়াজ্জিনদের দিকে তারা তাকানই না। মুয়াজ্জিন কী’ভাবে আছে অনেকে এটাও জিজ্ঞেস করেন না। তবে আজান দিতে দিতে এ জীবন তো কাটিয়ে দিলাম। পরকালে আল্লাহতায়ালা যেন এর প্রতিদান দেন, তাই কা’মনা করি।’
শহরের ম’সজিদে আজান দেওয়ার জন্য মুয়াজ্জিন রাখা হলেও গ্রামে মুয়াজ্জিনের দায়িত্ব পালন করতে হয় ই’মাম সাহেবকেই। যিনি ই’মাম, তিনিই মুয়াজ্জিন। ফলে গ্রামের ই’মাম’দের দায়িত্ব আরও বেশি।
কুমিল্লার হোমনা থা’নার বাকশিতারামপুর কেন্দ্রীয় জামে ম’সজিদের ই’মাম মা’ওলানা আল আমিন। তিনি ই’মাম হিসাবে দায়িত্ব পালন করছেন দীর্ঘ আট বছর।
কথায় কথায় জানালেন, ‘যেহেতু মুয়াজ্জিন নেই, তাই মুয়াজ্জিনের সব দায়িত্ব আমাকেই পালন করতে হয়। ইফতার-সেহরিতে মাইকে ঘোষণা দেওয়া, তারাবি পড়ানো, ম’সজিদ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা ইত্যাদি। ফলে ঈদের আগেও বাড়ি যেতে পারি না। সন্তানদের কাপড় কিনে দেন তার মা। আম’রা তিনগ্রাম এক ঈদগাহে নামাজ পড়ি। যদিও ঈদের নামাজ পড়ান অন্যজন, তবুও আমাকে উপস্থিত থাকতে হয়। হঠাৎ বৃষ্টি হতে পারে, তখন নামাজ পড়তে হবে ম’সজিদে, এ আশ’ঙ্কায়।’
নবীনগর থা’নার বাজেবিশারা মাজেদা শওকত জামে ম’সজিদের ই’মাম হাফেজ মা’ওলানা ইউসুফ সাহেব। তিনি ই’মামতি করছেন আজ তেরো বছর। সঙ্গে মুয়াজ্জিনের দায়িত্বও পালন করতে হয় তাকে।
ঈদের প্রসঙ্গ তুলতেই তিনি বললেন, ‘ইচ্ছে করে মায়ের কাছ থেকে দোয়া নিয়ে বাবার সঙ্গে ঈদগাহে যাই। কিন্তু ই’মামতির দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে তা আর হয়ে উঠে না। ঈদের নামাজ পড়ে বিকালে যখন বাড়ির পথ ধরি, তখন ঈদের আ’মেজ অনেকটা মিইয়ে আসে।
ই’মাম-মুয়াজ্জিনদের এ ত্যাগ একমাত্র আল্লাহতায়ালার জন্য। আল্লাহর বিধান এ ঈদের নামাজ ই’মাম-মুয়াজ্জিন ছাড়া আদায় করা যায় না। পরিবারের সঙ্গে ঈদ উদযাপন করতে না পেরে হয়তো তারা পৃথিবীর খানিক আনন্দ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন, কিন্তু এর বিনিময়ে তারা পাবেন পরকালের চিরস্থায়ী আনন্দ।’
ঈদ আসে শাম্যের বারতা নিয়ে, মুক্তি ও আনন্দের পয়গাম নিয়ে। আমাদের ঈদ আনন্দপূর্ণ করতে যেসব ই’মাম-মুয়াজ্জিনরা যুগের পর যুগ ত্যাগ স্বীকার করছেন, যারা দৈনিক পাঁচবার প্রে’মময় সুরে আমাদের আল্লাহর দিকে ডাকেন, সেহরিতে যাদের ডাকে আমাদের ঘুম ভাঙে, ইফতারিতে যাদের নির্দেশনায় রোজা ভাঙি, তাদের প্রতি আমাদেরও কিছু কর্তব্য রয়েছে। আম’রা চাইলেই পারি তাদের মুখে হাসি ফোটাতে। আহাম’রি কিছু নয়।
প্রথমত, তাদের ঈদ বোনাসটা যেন হয় উল্লেখ করার মতো। সাধারণ যে বোনাস আমাদের ম’সজিদ থেকে দেওয়া হয় তা একজন ই’মামের ত্যাগের তুলনায় খুবই সামান্য। এ বিষয়ে আরও আন্তরিক হতে হবে।
দ্বিতীয়ত, ঈদের বড় একটা অংশজুড়ে থাকে খাবার। আমাদের কর্তব্য ই’মাম-মুয়াজ্জিনকে ডেকে এনে খাবারে শরিক করা। কিংবা তাদের বাসায় খাবার পৌঁছে দেওয়া। ঈদের দিন ই’মাম-মুয়াজ্জিনরা খেতে পাবেন না এটা চরম অ’পমানকর।
তৃতীয়ত ই’মাম-মুয়াজ্জিনদের জন্য ঈদবাজার হিসাবে একটা প্যাকেজ থাকতে পারে। এটা বেতন-বোনাসের বাইরে।
চতুর্থত ই’মাম-মুয়াজ্জিনদের জন্য কোয়ার্টারের ব্যবস্থা করা। যেন তারা পরিবার সঙ্গে নিয়ে থাকতে পারেন।
ঢাকার প্রখ্যাত একটি ম’সজিদের মুয়াজ্জিনের বাড়ি নেত্রকোনা। তার ছে’লের সঙ্গে কথা হয়েছিল গতকাল। দীর্ঘশ্বা’স ফেলে সে বলছিল, ‘বাবার সঙ্গে ঈদপালনের সুখস্মৃ’তি আমাদের নেই। ঈদের নামাজ পড়ে ঘরে ফিরে সবচেয়ে বেশি মিস করি বাবাকে। মনে হয় ঘরটা শূন্য হয়ে আছে, পূর্ণ হয়নি।’
প্রত্যেক ই’মাম-মুয়াজ্জিনের পরিবারেই এমন শত শত শূন্যতার কাহিনি আছে। আছে কা’ন্নার হৃদয়বিদারক গল্প। সেই গল্পগুলো আমাদের হৃদয় ছুঁয়ে যাক। ই’মাম মুয়াজ্জিন বেঁচে থাকুন আমাদের ভালোবাসায়।