cialis fiyat cialis sipariş http://umraniyetip.org/
Fapperman.com DoEscortscialis viagra viagra cialis cialis viagra cialis20mgsite.com geciktirici sprey azdırıcı damla
মোঃ কায়ছার আলী: বাংলাদেশ নদীমাতৃক দেশ। ছোট বড় মিলে ১৩৫০টি নদ-নদী এ দেশে আছে। তাইতো এদেশকে হাজার নদীর দেশ বলা হয়। নদ-নদীকে নিয়ে অনেক গান, কবিতা লেখা হয়েছে। মাইকেল মধুসূদন দত্তের বাংলা ভাষায় লিখিত ‘কপোতাক্ষ নদ’ এক অমর সৃষ্টি। ধরিত্রীকে জননী আর নদীকে বলা হয় বোন। ছোটবেলায় পাঠ্যবইয়ে পড়েছি পৃথিবীতে তিনভাগ জল আর এক ভাগ স্থল। ৯৭% লোনা জল, ২% পানের অযোগ্য আর মাত্র ১% হল পানের উপযোগী পানি। পানি ছাড়া কোন প্রাণী এবং উদ্ভিদ বাঁচতে পারে না। তাইতো পানির অপর নাম জীবন। খাল, বিল, নদী, নালা, হাওড়, বাওড়-পানি তার বক্ষে ধারণ করে।
সেই প্রাগৈতিহাসিক সময় থেকে নদ-নদীগুলো ছিল বাধাহীন। তাদের গতিপথ ছিল উন্মুক্ত এবং সর্পিলাকার। পাহাড়-পর্বত, উঁচু-নীচু মরুভূমি, জঙ্গল, বন-বনান্তর জনপদ এর ভেতর দিয়ে নদ-নদীগুলো সাগর মহাসাগরে মিশেছে। আদিকাল থেকে দূর-দুরান্তের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করে চলেছে নদ-নদীগুলো। শহর, বন্দর, গঞ্জ, হাটবাজার এমনকি সভ্যতা নদ-নদীকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে।
সিন্ধু নদের তীরে সিন্ধু সভ্যতা ২৭০০ খ্রীঃ পূর্বে দুইটি নগর হরপ্পা মহেঞ্জোদারো। ২৪০০ বছর আগে ব্রহ্মপুত্র নদের তীরে উয়ারী বটেশ্বর। করতোয়া নদীর তীরে ২৪০০ বছর আগে মহাস্থানগড় (পুন্ড্রনগর)। ৫০০০ বছর আগে নীল নদের তীরে মিশরীয় সভ্যতা। খিস্টপূর্বে ৪০০০ অব্দে ইরাকের টাইগ্রীস ও ইউফ্রেটিস নদীর তীরে মেসোপটেমীয় সভ্যতা। ২
০০০ খ্রীঃ পূর্বে হোয়াংহো ও ইয়াংসিকিয়াং নদীর তীরে চীন সভ্যতা। প্রধান প্রধান শহর রাজধানীগুলো নদীর তীরে যেমন টেমস নদীর তীরে লন্ডন, মস্কোভা নদীর তীরে মস্কো, সীন নদীর তীরে প্যারিস, হাডসন নদীর তীরে নিউইয়র্ক, হুগলী নদীর তীরে কলকাতা ও বুড়িগঙ্গার তীরে ঢাকা আর আমাদের প্রাণের শহর দিনাজপুর পুনর্ভবা নদীর তীরে। বিশাল জলরাশির ধারক ও বাহক নদী।
আজ নদ-নদী গুলোর করুণ দশা। পরিবেশ, প্রকৃতি, জীববৈচিত্র্য, কৃষিকাজ এবং দেশের মানুষের জীবন জীবিকার ক্ষেত্রে চরম সমস্যার বিষয়, যেমন বর্ষায় বন্যা, শুষ্ক মৌসুমে পানি শুন্যতা যেটি দেশের নিয়তি হয়ে দাঁড়িয়েছে। কিছু লোকের অপকর্ম তথা অবৈধ দখল বা স্থাপনা নির্মাণের ফলে নদীগুলো স্বাভাবিক চলার পথে বাধা পাচ্ছে। আবার কল-কারখানার ময়লা বর্জ্য পদার্থ মিশে নদীর পানিকে ভয়াবহ দূষিত করে ব্যবহারের অনুপযোগী করছে।
দেশের ছোট বড় সব শহরের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত নদীগুলো আজ নালা বা ঘাগড়ায় পরিণত হয়েছে। শহরের সমস্ত ময়লা আবর্জনা পয়ঃনিষ্কাশন অবৈধ দখলের ফলে সামান্য বৃষ্টি হলেই জলাবদ্ধতায় গ্রাস করছে পুরো শহরকে। ফলে বিষময় হয়ে উঠছে পরিবেশ। কোথাও ব্রিজের কাছে অবৈধ বালু উত্তোলন করে ব্রিজগুলোকে হুমকির মুখে ফেলে দিচ্ছে। অথচ নদীর উপর ব্রিজ উঁচু করে পরিকল্পনা মাফিক তৈরি করা হয়েছে এজন্য যে, বর্ষা বা অন্য যে কোন সময় ব্রিজের নিচ দিয়ে নৌকা, লঞ্চ, স্টিমার, পানি জাহাজ যেন অনায়াসে চলাচল করতে পারে। “বাঁচলে নদী বাঁচবে দেশ, বাঁচবে সবুজ পরিবেশ” এ মহান লক্ষ্যকে সামনে রেখে নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয় আজ কাজ করে যাচ্ছে। নদী শাসন পানি উন্নয়ন বোর্ডের কাজ, ভূমির দায়িত্বে ভূমি মন্ত্রণালয়, পরিবেশ রক্ষার দায়িত্বে আছে পরিবেশ মন্ত্রণালয়। তাই সকলকে একসাথে কাজ করতে হবে।
দেশরত্ন মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সাহসিকতা ও সমর্থনের কারণে নদী তীর দখলমুক্ত করার চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয় আর্তনাদ ও মুমূর্ষু বুড়িগঙ্গা এবং তুরাগ নদের তীর রক্ষা প্রকল্প বৃক্ষরোপনের মাধ্যমে বাস্তবায়িত হচ্ছে। নদীর তীর দখলকারীরা শক্তিশালী ও ক্ষমতাবান কিন্তু এর চেয়েও বেশি ক্ষমতাবান সরকার। নদী দুটি ৯০ ভাগ দখলমুক্ত করে আজ সীমানা, পিলার পাকা দেয়াল এবং ওয়ার্কওয়ের কাজ দৃশ্যমান। সরকারের মাষ্টারপ্লান অনুযায়ী ঢাকার মধ্যদিয়ে নৌ চলাচলের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। মাননীয় নৌ-পরিবহন প্রতিমন্ত্রী জনাব খালিদ মাহমুদ চৌধুরী চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদী রক্ষার পাশাপাশি তাঁর মন্ত্রণালয়ের অঙ্গাঅঙ্গিভাবে জড়িত সকল কিছুই তীক্ষ্মভাবে দেখভাল করছেন, উন্নয়ন করছেন।
তিনি যথার্থই বলেছেন, “চট্টগ্রাম বন্দর বাংলাদেশের লাইফ লাইন। তাই চট্টগ্রাম বন্দর উন্নয়নে আমাদের দায়বদ্ধতা আছে”। চট্টগ্রাম বন্দরের আওতায় মাতার বাড়ী গভীর সমুদ্র বন্দর, বে- টার্মিনাল, পতেঙ্গা কন্টেইনার টার্মিনাল (পিসিটি) সহ অনেক প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। চট্টগ্রাম বন্দরকে ৬৪তম থেকে ৩০-৫০ তম স্থানে সরকার নিয়ে যেতে চায়। ঢাকা সদরঘাট ওপারে ডকইয়ার্ড স্থানান্তরের কর্মকান্ড চলমান। গত ২৯ শে জুন বুড়িগঙ্গায় লঞ্চ দূর্ঘটনা না ঘটে পরিকল্পিত হত্যাকান্ড ঘটে। ব্যাপক বা প্রবল স্রোত, কাল বৈশাখী ঝড়, ঘন কুয়াশা, অন্ধকার রাতে দিক হারিয়ে ফেলা, যান্ত্রিক ত্রুটি, অতিরিক্ত যাত্রী ও পন্য বোঝাইয়ের কারণে নৌ দূর্ঘটনা ঘটে। কিন্তু সে দিন ময়ুর-২ লঞ্চটি হঠাৎ করেই মর্নিং বার্ড লঞ্চের দিকে তেড়ে আসছিল এবং পেছন দিক থেকে জোরে ধাক্কা দিলে কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই লঞ্চটি ডুবে। ঘটনার পর ময়ুর-২ লঞ্চের মাষ্টার, ড্রাইভার ও সুকানীকে দায়ী করা হয়।
বর্তমানে মামলায় ঘাতক ময়ূর-২ লঞ্চের সুকানী নাসির মৃধা আদালতে দায় স্বীকার করে জবানবন্দী দিয়েছে। অপরদিকে লঞ্চের ইঞ্জিন চালক মোঃ শিপন হাওলাদার ও মোঃ শাকিল হাওলাদারকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। লঞ্চের মালিক প্রধান আসামী মোসাদ্দেক সোয়াদকে পূর্বেই গ্রেফতার করা হয়েছে। সে দিনেই তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় মাননীয় প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরীর বক্তব্য (মন্তব্য/অনুমান) আজ সত্যে পরিণত হতে চলেছে।
তিনি গত ১৯ শে জুলাই ২০২০ আরটিভি তে সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় সাংবাদিক শ্যামল দত্তের উপস্থাপনায় “এই মুহুর্তে বাংলাদেশ” অনলাইন সাক্ষাৎকারে তাঁর মন্ত্রণালয়ের কিছু কর্মকান্ডের আলোকপাত করেন। দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ১৭টি জেলায় নৌযাত্রা নিরাপদ করার লক্ষ্যে ডিসি. এসপি, মেয়র বিভাগীয় কমিশনার, বিআরটিসি চেয়ারম্যান মালিক গ্রুপসহ সবাইকে নিয়ে কিভাবে ঈদ এবং পরবর্তী যাত্রা নিশ্চিত করা যায় তা বাস্তবায়নের জন্য পরিকল্পনা মাফিক কাজ করে যাচ্ছেন।
তিনি জীবনের ঝুকি নিয়ে অতি প্রয়োজন ছাড়া ঈদে বাড়ী না ফেরার পরামর্শ দিয়েছেন এবং মাস্ক ব্যবহার (স্বাস্থ্য বিধি) বাধ্যতামূলক করে অসুস্থ যাত্রী পরিবহণে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছেন। আজ সরকার শত বছরের ডেল্টা প্লান কর্মসূচী গ্রহণ করেছেন। কার্যকর নদী ব্যবস্থাপনায় নদী মাতৃক এদেশে ১০ হাজার কিলোমিটার নৌপথ খননসহ বা ঢেলে সাজিয়ে নদীর বিলুপ্ত হওয়া গতিপথ ফিরিয়ে এনে নদীর নাব্যতা বজায় রাখার তথা সোনালী হারানো অতীত ফিরিয়ে আনার জন্য সরকার সাধ্যমত কাজ করে যাচ্ছেন। নৌ পথ হবে আগামী সামাজিক অনুষ্ঠান। ভূগর্ভস্থ পানির উপর থেকে চাপ কমাতে হবে তা না হলে পানির অভাবে দেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতি যেমন ব্যাহত হবে, তেমনি মানবিক বিপর্যয়ের শঙ্কা রয়েছে।
লেখকঃ শিক্ষক, প্রাবন্ধিক ও কলামিস্ট
kaisardinajpur@yahoo.com