cialis fiyat cialis sipariş http://umraniyetip.org/
Fapperman.com DoEscortscialis viagra viagra cialis cialis viagra cialis20mgsite.com geciktirici sprey azdırıcı damla
করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) এখন বিশ্বে মহামারি পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে। বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি এতটাই জটিল হয়ে উঠেছে যে, প্রকৃত অর্থে দিনে কত মানুষ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হচ্ছে তা বলা মুশকিল।
বিশেষ করে সিলেটের চিত্রটা তুলে ধরতে চাই। নিজের অভিজ্ঞতা ও পর্যালোচনা থেকে বলছি-
এই মুহূর্তে করোনার সঙ্গে আমার বসবাস। একটু পরিষ্কার করে বলি- সপ্তাহ দিন ধরে করোনা উপসর্গ থাকায় গত ২৬ মে আমার স্ত্রীর নমুনা দেই। ২৮ মে দুপুরে গোয়েন্দা অফিস থেকে আমাকে জানানো হল- আমার স্ত্রীর কোভিড-১৯ পজিটিভ এসেছে। ঠিক আগের দিন থেকে অর্থাৎ, ২৭ মে সকাল থেকে আমি শারিরিকভাবে ব্যথা অনুভব করছিলাম। ২৮ মে দুপুরে বিষয়টি আরো পরিষ্কার হয়ে যায়।
রাতে মায়ের শরীর খারাপ হতে লাগল। শাশুড়ির শারিরিক অবস্থা আগে থেকেই খারাপ। রাতে খবর পেলাম উনি শ্বাসকষ্টে ভোগছেন। আমার এক বন্ধু ৩৫তম বিসিএস-এ নিয়োগ পেয়ে বর্তমানে একটি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার। তার সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ ছিল। তার পরামর্শে ঔষুধের ব্যবস্থা করি। আমার সহধর্মিনীর যেহেতু আগে থেকে উপসর্গ ছিল তার চিকিৎসা আগেই শুরু হয়ে গেছে।
পরদিন সকালে উঠে চলে গেলাম শহীদ শামসুদ্দিন আহমদ হাসপাতালে। হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসারের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করে জানলাম- এখন থেকে নুমনা দিতে হলে আগে রেজিস্ট্রেশন প্রয়োজন হয়। শামসুদ্দিনে গিয়ে সারিতে দাঁড়ালাম।
এখানে একটি কথা বলে রাখা ভাল- এই সারিতে দাঁড়ানো প্রায় প্রত্যেকটা লোকের করোনা উপসর্গ রয়েছে। আবার কেউ কেউ উপসর্গবিহীন হলেও কোভিড-১৯ সনাক্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে ছিলেন। কিন্তু, সারিতে দাঁড়ানোর লোকজনের প্রায় ৯০ ভাগ লোক শারিরিক দূরত্ব বজায় রাখার ব্যাপারে একেবারেই উদাসীন। ধরে নিতে হবে- এখানে যত লোক নমুনা দিতে এসেছেন তাদের মধ্যে যারা এখনও আক্রান্ত হননি তারা নিঃসন্দেহে ভাইরাস বহন করে বাড়ি ফিরবেন।
দুপুর সাড়ে ১২টায় সুযোগ এলো। ৫ হাত দূর থেকে ঘরের বাইরে দাঁড়িয়ে কথা বলতে হয় চিকিৎসকের সঙ্গে। জানালায় কাঁচ লাগানো। মাইকে কথা বলতে হয়। চিকিৎসক প্যানেল ভেতরে বসা। জানালাম- আমার স্ত্রী কোভিড-১৯ পজিটিভ। আমার গায়ে করোনা উপসর্গ, ৭৫ বছর বয়সী মায়ের শারিরিক অবস্থাও ভাল নেই। শাশুড়ির অবস্থা খারাপ।
চিকিৎসকগণ বললেন- মা এবং শাশুড়িকে নিয়ে লাইনে দাঁড়াতে হবে! অন্যথায় উনারা রেজিস্ট্রেশন দেবেন না। আমাকেও উনারা ফেরত পাঠালেন। বললেন- আগামীকাল উনাদের নিয়ে সকাল ৯টায় এসে লাইনে দাঁড়াবেন!! মনে কষ্ট পেলাম।
বিষয়টি আরএমও মহোদয়কে অবগত করলাম। তিনি আমাকে সহযোগিতার আশ্বাস দিলেন। বাসায় ফিরে আমার শারিরিক অবস্থার অবনতি ঘটল। এরই মধ্যে মেডিসিন ও ঘরোয়া চিকিৎসা চালিয়ে গেলাম। ঘটনাটি ছিল ২৯ মে তারিখের।
দুইদিনের চিকিৎসায় কিছুটা উন্নতি ঘটল। ১ জুন আবার ছুটে গেলাম শামসুদ্দিনে। রাতে মায়ের নাম- ঠিকানা লিখে আরএমও-কে ক্ষুদেবার্তা পাঠালাম যাতে মায়ের রেজিস্ট্রেশন নিয়ে ঝামেলা পোহাতে না হয়। নিজে সকাল সাড়ে ৯টা থেকে লাইনে দাঁড়ানো। সামনে মাত্র ২২ থেকে ২৪ জন নারী-পুরুষ। সিরিয়াল পেতে পৌনে ১১টা হয়ে গেলো। চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলতেই উনারা জানালেন- এরই মধ্যে রেজিস্ট্রেশন লিমিটেড হয়ে গেছে। অথচ, এই ২২-২৪ জনের মধ্যে অর্ধেক রোগীকে উনারা রেজিস্ট্রেশন দেননি। হালকা উপসর্গ থাকায় চিকিৎসা দিয়ে বিদায় করেছেন। চিকিৎসক আমাকেও জানালেন, আজ উনারা আমাকে রেজিস্ট্রেশন দিতে পারবেন না। পরের দিন আবার লাইনে দাঁড়াতে হবে!!
মনটা আবারো খারাপ হলো। এরই মধ্যে আরএমও জানালেন, রোগির চাপ বেশি। আমার মায়ের টেস্টের জন্য তিনি সহযোগিতা করতে পারবেন না। মাকে লাইনে নিয়ে দাঁড় করাতেই হবে।
একটা প্রশ্ন রাখতে চাই- ৭৩ বছর বয়সী আমার মা যেখানে উচ্চ ডায়াবেটিসে ভোগছেন। এর মধ্যে করোনার উপসর্গ। তাঁকে তিনঘন্টা তো দূরে থাক, পাঁচ মিনিটও লাইনে দাঁড় করিয়ে রাখার সাহস আমার হবে না। আর লাইনের পরিস্থিতি তো আগেই বলেছি।
আমি মায়ের টেস্টের চিন্তা বাদ দিয়ে দিলাম। চিকিৎসককে জানালাম- যে কোন মূল্যে আমাকে রেজিস্ট্রেশন দিতে হবে। অনেক অনুরোধের পর তিনি আমাকে একটি কাগজ ধরিয়ে দিয়ে বললেন, পরের দিন সকাল ৯টায় গিয়ে লাইনে দাঁড়াতে হবে না, এই কাগজ দেখালেই রেজিস্ট্রেশন দেবেন।
উপায় না দেখে বিষয়টি প্রেসক্লাব সাধারণ সম্পাদককে অবগত করলাম; যেহেতু আমি এই ক্লাবের একজন নিয়মিত মেম্বার এবং সর্বশেষ কমিটির কার্যনির্বাহী সদস্য ছিলাম। প্রেসক্লাব সাধারণ সম্পাদক আমাকে আশ^স্ত করলেন, কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলবেন এবং পরের দিন মাকে নিয়ে গিয়ে নমুনা দিতে পারবো।
রীতিমত পরদিন ২ জুন সকালে আমি হাজির। গিয়ে যা দেখলাম, আগের দিনের ধারণা সম্পূর্ণ পাল্টে গেলো। দীর্ঘ লাইন রাস্তা পর্যন্ত গড়িয়েছে। লাইনে দাঁড়ানো কয়েকজন উদ্যত হয়ে আমার দিকে ছুটে এলেন। একধরণের টেঁনেহিচড়ে নিয়ে যাবেন অবস্থা।
উনাদের বক্তব্য- ‘আমরা সকাল সাড়ে ৭টা থেকে লাইনে দাঁড়িয়ে আছি। আপনি এসেই কথা বলার সুযোগ নেবেন তা হবে না। লাইনে সিরিয়ালে দাঁড়ান।’ আগের দিনের কাগজ দেখালাম- কোন লাভ হল না।
এমতাবস্থায় মায়ের রেজিস্ট্রেশনের বিষয়টিও নাকচ হয়ে গেলো! প্রেসক্লাব সেক্রেটারি জানালেন, কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে কোন ফায়দা হয়নি। উনারা সবার জন্য সমান নীতিতে মাকে নিয়ে লাইনে দাঁড়ানোর পরামর্শ দিয়েছেন। খুব বেশি হতাশ হলাম। একইসঙ্গে ক্লান্তি ভর করলো মনে, মারাত্মকভাবে।
এক পর্যায়ে আমি বিষয়টি স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সিলেটের সহকারি পরিচালককে অবগত করলাম। উনি আমাকে আশ^াস দিলেন এবং ৫ মিনিটের মধ্যে কল ব্যাক করে জানালেন, আপনার রেজিস্ট্রেশনের ব্যবস্থা করা হয়েছে, আপনি বেলা দেড়টায় এসে নমুনা দিয়ে যাবেন।।
কথা এখানেই শেষ নয়। আজ যখন আমি এই লেখাটি লিখছি তখনও আমি জানি না আমার কোভিড-১৯ পজিটিভ নাকি নেগেটিভ! প্রতিদিন সকাল ও রাতে দুইবেলা খবর নিচ্ছি- কর্তৃপক্ষ বলছেন- আমাদের নমুনা ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। আজ ৬ জুন রাত ১১টা পর্যন্ত আমি ফলাফল জানতে পারিনি। আল্লাহর রহমতে, আমার স্ত্রী অনেকটা সুস্থ হয়ে উঠেছে, আমার শারিরিক অবস্থাও বেশ ভাল। মায়ের অবস্থা এখনও ৫০-৫০। জানি না, পুরোপুরি সুস্থ হয়ে ওঠার পর হয়তো জানতে পারবো- আমি কোভিড-১৯ পজিটিভ ছিলাম। অনেকের তো মৃত্যুর পর রেজাল্ট আসে।
সেদিন লাইনে দাঁড়িয়ে যে বিষয়টা আঁচ করেছিলাম সেটি এরই মধ্যে গণমাধ্যমে প্রচার হয়েছে। সিলেটে একদিকে কিট সংকট অন্যদিকে নমুনা জ্যাম পড়ে আছে। সিলেট ওসমানী মেডিকেল ও শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ^বিদ্যালয়ের ল্যাবে অধিক সংখ্যক নমুনা রয়েছে যা পরীক্ষা করতে আরো ৫ থেকে ৬ দিন সময় লাগবে। তাহলে আমিসহ যারা ২ জুন নমুনা জমা দিয়েছি তারা ফলাফল কবে জানতে পারবো?
অথচ, আমি হলফ করে বলতে পারি- সিলেটে যে পরিমাণ রোগী রয়েছে তার অর্ধেক সংখ্যক লোকও টেস্টের জন্য যাচ্ছে না। আমি অসুস্থ শোনে অনেকেই টেলিফোন করেছেন। খোঁজ নিয়েছেন। এর মধ্যে অধিকাংশ স্বজন জানাচ্ছেন- তাদের শরীরেও একই ধরণের লক্ষণ রয়েছে। কিন্তু, হাসপাতালে টেস্টের জন্য গিয়ে হয়রান হওয়ার কোন ইচ্ছে নেই। তারা বাসায় আইসোলেশনে থেকে ঘরোয়া চিকিৎসা নিচ্ছেন। আবার অনেকে ফার্মেসি থেকে প্রাথমিক চিকিৎসসেবা গ্রহণ করছেন!
আজ সিলেটের একটি অনলাইন পোর্টালের বরাতে জানতে পারলাম- ওসমানীতে প্রায় ১২শ’ নমুনা জমে আছে। এগুলো টেস্ট করার জন্য ঢাকায় প্রেরণ করার চিন্তা করছেন কর্তৃপক্ষ।
আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি- এই মুহূর্তে সিলেটে যে পরিমাণ টেস্ট প্রয়োজন তার ৫০ শতাংশ ব্যবস্থা বা প্রস্তুতি আমাদের নেই। আর সামনে তো অবস্থা কতটা নাজুক হবে তা বলার বাইরে।
এখন কথা হল- আক্রান্ত রোগীদের চিহ্নিত করতে হলে কী করতে হবে? সহজ উত্তর- টেস্টের পরিধি বাড়াতে হবে। সিলেটের একটি প্রাইভেট মেডিকেল হাসপাতাল করোনা চিকিৎসা শুরু করেছি। নর্থ ইস্ট মেডিকেল কর্তৃপক্ষ সরকারের সঙ্গে আলোচনাও করছে। তাদের এখানে দুইশ’ শয্যার করোনা চিকিৎসাকেন্দ্র করা গেলে একটি পিসিআর মেশিন বসানো অসম্ভব নয়। অন্যদিকে, শাবির মতো সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি ল্যাব স্থাপন করা যেতে পারে।
অন্যভাবে যদি বলি- টেস্টের পরিধি বাড়িয়ে কতটা লাভ হবে? এই মুহূর্তে করোনা চিকিৎসার জন্য চৌহাট্টাস্থ শহীদ শামসুদ্দিন হাসপাতালে মাত্র একশ’ বেড রয়েছে। কিন্তু, সিলেট জেলায় এখনই করোনা চিহ্নিত রোগীর সংখ্যা চারশ’র বেশি (সুস্থ হয়ে ওঠা রোগীদের বাদ দিয়ে)। বিভাগে তা এক হাজারের মতো। এই পরিসংখ্যান মাত্র এক সপ্তাহে তিন হাজার ছাড়িয়ে যেতে পারে যদি সেভাবে টেস্ট বাড়ানো হয়।
গ্রামগঞ্জে মানুষ এখনও বিশ^াস করে- করোনা বলতে কিছু নেই। সিজোনাল জ¦রের মতো এই সমস্যা আসত্ইে পারে। সেটা করোনা ভাইরাস নাকি সাধারণ জ¦র সেই ব্যাখ্যার প্রয়োজন মনে করে না তারা। বরং, হাসপাতাল সেবাকে তারা ভোগান্তি বা মৃত্যুর কারণও মনে করে। সার্বিক বিবেচনায় কিছুটা বাস্তবতার সঙ্গে মিলও আছে। এইসব অব্যবস্থাপনা, ঘাটতি ও মানুষের বিশ^াসের সুযোগ এ অঞ্চলের সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ছে করোনাভাইরাস।
লেখক: সংবাদকর্মী