সর্বশেষ আপডেট : ১৩ ঘন্টা আগে
শনিবার, ৫ অক্টোবর ২০২৪ খ্রীষ্টাব্দ | ২০ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ |

DAILYSYLHET
Fapperman.com DoEscorts

সব কার্টুন শিশুদের মানসিক বিকাশে সহায়ক নয়

মাইশা শওকত

ছোটো বাচ্চাদের বিনোদনের অন্যতম উপাদান হলো কার্টুন। কার্টুন এমন একটি মাধ্যম যার মধ্য দিয়ে একটি শিশু নিজেকে কল্পনা করতে ভালোবাসে। তবে প্রত্যেক বাবা-মার উচিত তাদের সন্তান কী ধরনের কার্টুন দেখছে, তার ওপর নজর রাখা। একটি কার্টুন ছোটো বাচ্চাদের মানসিক বিকাশে অনেক বেশি ভূমিকা রাখে। বাচ্চারা কল্পনাপ্রবণ। তারা কার্টুন চরিত্রের সঙ্গে নিজেকে মেলাতে চেষ্টা করে। কিন্তু শিশুদের কার্টুন দেখার ক্ষেত্রে যথেষ্ট জটিল কিছু বিষয় পরোক্ষভাবে ঢুকে যায় সে বিষয়ে কেউ খেয়াল রাখেন না। বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) ইত্তেফাক পত্রিকায় প্রকাশিত এক নিবন্ধে এ তথ্য জানা যায়।

নিবন্ধে আরও জানা যায়, সব কার্টুন এক নয়, তবে কিছুসংখ্যক কার্টুনের ফলে শিশুদের মানসিক বিকাশ সঠিকভাবে হচ্ছে কি না, তা নিয়ে আমি সন্দিহান। নিচে কিছু বিষয়ের মাধ্যমে সেটি তুলে ধরার চেষ্টা করছি: ১. এক রাজার সাত স্ত্রী কিংবা একের অধিক স্ত্রী। স্বভাবতই রূপকথার গল্পে এ বিষয়টি অহরহ দেখা যায়। আমরাও আমাদের ছোটোবেলা পার করেছি এ ধরনের কার্টুন দেখে। কিন্তু আমার কাছে মনে হয় এ বিষয়টি একটি শিশুর মনে পরোক্ষভাবে ঢুকিয়ে দিচ্ছে যে, একজন ব্যক্তির একাধিক স্ত্রী থাকা অস্বাভাবিক কিছু নয়! শুধু রূপকথা কেন, এটা ঠিক যে রাজা-বাদশা কিংবা নবাবদের আমলেও একের অধিক স্ত্রী থাকা অস্বাভাবিক কিছু ছিল না। কিন্তু বর্তমান যুগে সেটি বিরল। যেহেতু কার্টুন বাচ্চাদের জন্য একটি শিক্ষণীয় মাধ্যম সুতরাং এ বিষয়টি কার্টুনে না থাকাই ভালো। ২. কার্টুনের রাজকুমারী বা মূল নায়িকা অনেক ফর্সা আর আকর্ষণীয় দেহগঠনের অধিকারী হয়ে থাকে। আর খলনায়ক, খলনায়িকা, রাক্ষসী, দৈত্যরা হয়ে থাকে কালো রঙের এবং বিশাল আকৃতির। এছাড়া দৈবশক্তিতে পুকুরে ডুবে কালো মেয়ে দুধে-আলতা রং পেয়ে যাচ্ছে আর পাপকাজ করে পুকুরে ডুবে কালো রং ধারণ করছে। একটি বাচ্চা যার গায়ের রং শ্যামবর্ণের সেই বাচ্চার মনে একটু হলেও ঢুকে যায় সে কালো এবং কালো মানেই অসুন্দর। এর মাধ্যমে সে নিজেকে অভিশপ্ত মনে করতে থাকে। পাশ্চাত্যের অনেক বিখ্যাত ঔপন্যাসিকের লেখা কার্টুনগুলো বাংলায় ডাবিং করে শিশুদের দেখানো হয়। যেরকম একটি ডায়লগ, ‘বলো তো আয়না আমার চেয়ে বেশি ফর্সা এ দুনিয়ায় আর কেউ আছে কি না।’

আমি জানি না, সেই দেশে গল্পটি এরকমভাবেই রচিত কি না। কিংবা যদি রচিত হয়েও থাকে সেটা সে দেশের জন্য উপযুক্ত, আমাদের দেশের জন্য নয়। আমাদের দেশে ২০২০ সালে এসেও সৌন্দর্যের সংজ্ঞা গায়ের চামড়ার মাঝে নিহিত বলে মনে করেন তথাকথিত মানুষ। ৩. কোনো পরিশ্রম না করেই সোনা মণি-মুক্তো পাওয়া কতটা যৌক্তিক, সেটা আমার মাথায় আসে না। যদিও এটি রূপকথার গল্প কিন্তু একটি বাচ্চার মনে ঢুকিয়ে দেওয়া হচ্ছে সোনা, রুপা, টাকাই সব এবং সেই সঙ্গে তা পরিশ্রম ছাড়াই পাওয়া যায়। ৪. এছাড়া বাচ্চাদের মনে ছোটোবেলা থেকেই রূপ দেখে মোহিত হওয়ার শিক্ষা দেওয়া হচ্ছে। রাজকন্যার রূপে মোহিত হয়ে রাজকুমার পাগল হয়ে গেলেন। যেখানে গুণকে প্রাধান্যসহ, মনের সৌন্দর্যের কদর প্রকৃত অর্থে দেওয়া উচিত সেখানে প্রথম দেখায় প্রেমে পড়ে যাওয়ার মতো বিষয়গুলো দেখানো হয়। যেই কার্টুন বাচ্চাদের মানসিক বিকাশে সাহায্য করবে, শিক্ষণীয় হবে এবং সেইসঙ্গে একটি শিশুর জীবনবোধকে জাগ্রত করবে, সেই কার্টুনই বাচ্চাদের দেখানো উচিত বলে আমি মনে করি।

লেখক : সংগীত বিভাগ, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়।

সংবাদটি শেয়ার করুন

Comments are closed.

এ বিভাগের অন্যান্য খবর

নোটিশ : ডেইলি সিলেটে প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, আলোকচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও বিনা অনুমতিতে ব্যবহার করা বেআইনি -সম্পাদক

© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত

২০১১-২০১৭

সম্পাদকমন্ডলীর সভাপতি: মকিস মনসুর আহমদ
সম্পাদক ও প্রকাশক: খন্দকার আব্দুর রহিম, নির্বাহী সম্পাদক: মারুফ হাসান
অফিস: ৯/আই, ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি, ৯ম তলা, জিন্দাবাজার, সিলেট।
ফোন: ০৮২১-৭২৬৫২৭, মোবাইল: ০১৭১৭৬৮১২১৪
ই-মেইল: dailysylhet@gmail.com

Developed by: