সর্বশেষ আপডেট : ৬ ঘন্টা আগে
শুক্রবার, ১৪ নভেম্বর ২০২৫ খ্রীষ্টাব্দ | ৩০ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ |

DAILYSYLHET
Fapperman.com DoEscorts

গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশ বাদ দিয়ে দুদক অধ্যাদেশের খসড়া অনুমোদন, টিআইবির উদ্বেগ

ডেইলি সিলেট ডেস্ক ::

দুদক সংস্কার কমিশনের ‘বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ কৌশলগত সুপারিশমালা’ বাদ দিয়ে দুর্নীতি দমন কমিশন (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫-এর খসড়া উপদেষ্টা পরিষদে অনুমোদিত হওয়ায় গভীর উদ্বেগ ও বিস্ময় প্রকাশ করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।

বুধবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তারা এই উদ্বেগ প্রকাশ করে। পাশাপাশি দুদক সংস্কার কমিশনের প্রণীত প্রতিবেদনের সুপারিশমালার সঠিক প্রতিফলন নিশ্চিত করে দুর্নীতি দমন কমিশন অধ্যাদেশ প্রণয়নের জোর দাবি জানিয়েছে সংস্থাটি। টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান ছিলেন দুর্নীতি দমন কমিশন সংস্কার কমিশনের প্রধান।

বিবৃতিতে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘খসড়া অধ্যাদেশটি বিদ‍্যমান আইনের চেয়ে কিছুটা উন্নত সংস্করণ এবং এতে দুদক সংস্কার কমিশনের কোনো কোনো সুপারিশের প্রতিফলন ঘটেছে। তবে সংস্কার কমিশনের বেশ কিছু কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশ খসড়ায় বাদ দেওয়া বা অবমূল্যায়ন করা হয়েছে, যা হতাশাজনক।’

কমিশনার নিয়োগ-প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা ও কমিশনের দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে জবাবদিহি নিশ্চিত করতে সংস্কার কমিশন ‘বাছাই ও পর্যালোচনা কমিটি’ গঠনের প্রস্তাব করেছিল বলে উল্লেখ করেন ইফতেখারুজ্জামান। তিনি বলেন, ‘সরকার পর্যালোচনা অংশটি বা দুদকের দায়িত্ব পালনে সাফল‍্য-ব‍্যর্থতার ষাণ্মাসিক পর্যালোচনার সুপারিশটি প্রত‍্যাখ‍্যান করেছে। অর্থাৎ যে কারণে জন্মলগ্ন থেকে দুদক ক্ষমতাসীনদের সুরক্ষা আর প্রতিপক্ষের হয়রানির হাতিয়ারে পরিণত হয়েছে, সরকার সে অবস্থার পরিবর্তন চাইছে না।’

টিআইবির নির্বাহী পরিচালক বলেন, দুদক চেয়ারম্যান ও কমিশনার বাছাই কমিটিতে সদস্য হিসেবে সংসদে বিরোধী দলের প্রতিনিধি মনোনয়নের এখতিয়ার বিরোধী দলের নেতার পরিবর্তে অযাচিতভাবে স্পিকারের হাতে দেওয়া হয়েছে; যা বাস্তবে সরকারি দলের প্রভাব জোরদার করার অশুভ প্রয়াস ছাড়া কিছুই নয়। একই সঙ্গে দুর্নীতিবিরোধী ও সুশাসনের কাজে অভিজ্ঞতাসম্পন্ন একজন বাংলাদেশি নাগরিককে কমিটির সদস্য হিসেবে মনোনয়নের দায়িত্ব প্রধান বিচারপতির ওপর ন্যস্ত করার প্রস্তাব করা হয়েছিল। কিন্তু তা রাষ্ট্রপতির হাতে অর্পণ করা হয়েছে। তা ছাড়া প্রার্থীদের সংক্ষিপ্ত নামের তালিকা প্রকাশের প্রস্তাবিত বিধানটিও বাদ দিয়ে সরকার নিয়োগপ্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা নিশ্চিতের সুযোগ প্রত‍্যাখ‍্যান করেছে।

অধ‍্যাদেশের মাধ্যমে দুদক আইনের সংশোধন, দুদক সংস্কার কমিশনের সুপারিশমালার মধ্যে আশুকরণীয় হিসেবে নির্ধারিত বিষয়ের অংশবিশেষ মাত্র বলে উল্লেখ করেন টিআইবির নির্বাহী পরিচালক।

দুদক সংস্কার কমিশন প্রতিবেদনের একটি সুপারিশের কথা উল্লেখ করে ইফতেখারুজ্জামান বলেন, দুদককে গতিশীল ও প্রতিষ্ঠানটির কাজে অভিনবত্ব আনার স্বার্থে কমিশনার হিসেবে নিয়োগের জন্য ‘আইনে, শিক্ষায়, প্রশাসনে, বিচারে, শৃঙ্খলা বাহিনীতে, আর্থিক প্রতিষ্ঠানে, হিসাব ও নিরীক্ষা পেশায় বা সুশাসন কিংবা দুর্নীতিবিরোধী কার্যক্রমে নিয়োজিত সরকারি বা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে অন্যূন ১৫ (পনের) বৎসরের অভিজ্ঞতার প্রস্তাব করা হয়েছিল, অথচ খসড়া অধ্যাদেশে তা ২৫ (পঁচিশ) বৎসর নির্ধারণ করা হয়েছে। তা ছাড়া কমিশনারের সংখ্যা তিনজন থেকে বাড়িয়ে পাঁচজন করার প্রস্তাবও উপেক্ষা করা হয়েছে, যা দুঃখজনক।’

টিআইবির নির্বাহী পরিচালক বলেন, বাদ দেওয়া এ ধরনের সুপারিশগুলো প্রায় সব রাজনৈতিক দলের সমর্থন পেয়েছে, যা দুদক এবং সরকারের অজানা নয়। তারপরও ইচ্ছামতো সেগুলো বাতিল করা হচ্ছে। কারণ, সম্ভবত সরকার ও এমনকি দুদকের ভেতরে কিছু স্বার্থান্বেষী ও প্রভাবশালী মহল এসব বিষয়ে ভিন্নমত পোষণ করছে, যারা দুদকের অকার্যকরতার ফলে লাভবান হওয়ার সুযোগ অব‍্যাহত রাখতে চায় বলে। রাষ্ট্রসংস্কারের দায়িত্বপ্রাপ্ত সরকারের জন্য এটি হতাশাজনক, স্ববিরোধী ও সংস্কার পরিপন্থী নজির। সরকার নিজেই সংস্কার কমিশন গঠন করেছে এবং জাতীয় ঐকমত্যের সুযোগ সৃষ্টি করেছে, আবার নিজেই সেগুলো উপেক্ষা করছে। বিশেষ করে যেসব বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছে, সেগুলো কোন যুক্তিতে সরকার বা দুদক অবমূল্যায়ন বা এমনকি ধামাচাপা দিতে পারে? বলে প্রশ্ন করেছেন টিআইবির নির্বাহী পরিচালক।

সংবাদটি শেয়ার করুন

Comments are closed.

নোটিশ : ডেইলি সিলেটে প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, আলোকচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও বিনা অনুমতিতে ব্যবহার করা বেআইনি -সম্পাদক

© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত

২০১১-২০১৭

সম্পাদক ও প্রকাশক: খন্দকার আব্দুর রহিম
নির্বাহী সম্পাদক: মারুফ হাসান
অফিস: ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি, ৯ম তলা, জিন্দাবাজার, সিলেট।
মোবাইল: ০১৭১২ ৮৮৬ ৫০৩
ই-মেইল: dailysylhet@gmail.com

Developed by: