cialis fiyat cialis sipariş http://umraniyetip.org/
Fapperman.com DoEscortscialis viagra viagra cialis cialis viagra cialis20mgsite.com geciktirici sprey azdırıcı damla
ডেইলি সিলেট ডেস্ক ::
শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর রাজধানীসহ সারা দেশে প্রায় দেড় হাজার ভাস্কর্য, রিলিফ ভাস্কর্য, ম্যুরাল ও স্মৃতিস্তম্ভ ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও উপড়ে ফেলা হয়েছে। এসব ভাস্কর্য ও ম্যুরালের বেশির ভাগই ছিল বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের, স্বাধীনতাসংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধকেন্দ্রিক। ধ্বংস করা হয়েছে ময়মনসিংহের শশীলজের ভেনাসের মূর্তি, সুপ্রিম কোর্টের থেমিস ও শিশু একাডেমির দুরন্ত ভাস্কর্যটিও।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ৫ থেকে ১৪ আগস্টের মধ্যে ৫৯টি জেলায় ১ হাজার ৪৯৪টি ভাস্কর্য, রিলিফ ভাস্কর্য (সিরামিক বা টেরাকোটা দিয়ে দেয়ালে খোদাই করে ফুটিয়ে তোলা অবয়ব), ম্যুরাল ও স্মৃতিস্তম্ভ ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও উপড়ে ফেলার তথ্য পেয়েছেন। বেশির ভাগ ভাঙচুর ও আগুন লাগানোর ঘটনা ঘটেছে ৫, ৬ ও ৭ আগস্ট।
ঢাকা মহানগর এলাকার ১৫টি স্থানে ১২২টির বেশি ভাস্কর্য, ম্যুরাল ও রিলিফ ভাস্কর্য ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও উপড়ে ফেলা হয়েছে। শেখ মুজিবুর রহমানের পরিপূর্ণ অবয়ব কাঠামোর ভাস্কর্য ধ্বংস করা হয়েছে ৭টি। ঢাকা বিভাগে ২৭৩টি, চট্টগ্রাম বিভাগে ২০৪, রাজশাহীতে ১৬৬, খুলনায় ৪৭৯, বরিশালে ১০০, রংপুরে ১২৯, সিলেটে ৪৯ ও ময়মনসিংহ বিভাগে ৯২টিসহ মোট ১ হাজার ৪৯২টি ভাস্কর্য, রিলিফ ভাস্কর্য, ম্যুরাল ও স্মৃতিস্তম্ভ ভেঙে, উপড়ে ফেলে এবং আগুনে পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে।
ভাস্কর্য, ম্যুরাল ভাঙচুর প্রসঙ্গে দেশের প্রথিতযশা ভাস্কর্যশিল্পী হামিদুজ্জামান খান বলেন, ‘আমি খুবই দুঃখিত, ভারাক্রান্ত। এমন না হওয়াই উচিত ছিল। আর যেন এমন ঘটনা না ঘটে। প্রত্যাশা করি দ্রুত সংস্কারকাজ শুরু হবে।’
ধানমন্ডির ৩২ নম্বরের বাড়িতে হামলা–ভাঙ্চুরের সময় ক্ষতিগ্রস্ত করা হয়েছে দুটি বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল। রাজধানীতে ক্ষতিগ্রস্ত ও ধ্বংসপ্রাপ্ত পাঁচটি ভাস্কর্যের স্থান ঘুরে দেখা গেছে, কোথাও হাতুড়ি-শাবল দিয়ে পুরোপুরি ধ্বংস করা হয়েছে, কোথাও উপড়ে ফেলা হয়েছে, কোনো কোনো ভাস্কর্য পোড়ানো হয়েছে আগুনে।
মুক্তিযোদ্ধা, শিল্পী শামীম শিকদারের ‘স্বাধীনতাসংগ্রাম’ ভাস্কর্যটি রাজধানীর পলাশীর মোড়ে অবস্থিত। সেখানে ছোট-বড় শতাধিক পৃথক ভাস্কর্য রয়েছে। এর মধ্যে অক্ষত আছে মাত্র পাঁচটি। বাকিগুলো উপড়ে ফেলা হয়েছে। ১১ আগস্ট দুপুরে সরেজমিনে দেখা যায়, মাটিতে লুটাচ্ছে দেশ-বিদেশের কবি, সাহিত্যিক, বিপ্লবী, রাজনীতিবিদ, বিজ্ঞানীদের আবক্ষ ভাস্কর্য। এর মধ্যে আছে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর থেকে ইয়াসির আরাফাত, জগদীশচন্দ্র বসু থেকে লালন।
শিশু একাডেমি চত্বরের ‘দুরন্ত’ পুড়ে যাওয়ার খবর জানা গেছে ৮ আগস্ট। সেদিন বিকেলে শিশু একাডেমিতে গিয়ে দেখা যায়, ধ্বংসস্তূপের মধ্যে পড়ে আছে দুরন্তর অঙ্গার শরীর। অক্ষত ছিল শুধু শিশু মুখটুকু। কাঠি দিয়ে চাকা নিয়ে ছুটে চলা কিশোরের দুরন্ত ভাস্কর্যটি স্থাপন করা হয়েছিল ২০০৮ সালে। পাশে থাকা শেখ রাসেলের ম্যুরালটিও পুড়ে ছাই।
বিজয় সরণিতে শেখ মুজিবুর রহমানের ‘মৃত্যুঞ্জয়’ ভাস্কর্য স্থাপিত হয় সাম্প্রতিক সময়ে। গত বছরের ১০ নভেম্বর ‘মৃত্যুঞ্জয়ী প্রাঙ্গণ’ উদ্বোধন করা হয়। ৫ আগস্ট বিকেলে দেখা যায়, বিজয় সরণিতে বিশাল অবয়বের ভাস্কর্যটি ভাঙার চেষ্টা চলছে। দড়ি বেঁধে টেনে, আগুন দিয়ে, শাবল চালিয়ে একপর্যায়ে ধ্বংস করা হয় মৃত্যুঞ্জয়।
সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের বর্ধিত ভবনের সামনে স্থাপিত থেমিসের ভাস্কর্যটি উপড়ে ফেলা হয়েছে দুই পর্বে। এই ভাস্কর্য নিয়ে ২০১৬ সাল থেকেই ছিল নানা মতবিরোধ। গ্রিক দেবী থেমিসের আদলে ন্যায়বিচারের প্রতীক হিসেবে গড়ে তোলা এই ভাস্কর্যের হাতে ছিল ন্যায়দণ্ডের প্রতীক। ৭ আগস্ট উপড়ে ফেলা হয় এটি।
মেহেরপুরের ‘মুজিবনগর স্মৃতি কমপ্লেক্স’কে একক ভাস্কর্য হিসেবে ধরা হলেও সেখানে পাঁচ শতাধিক পৃথক ভাস্কর্য ছিল। কমপ্লেক্সের অন্তত ৩০৩টি ছোট–বড় ভাস্কর্য ভাঙচুর করা হয়েছে। সবার আগে ভাঙা হয় বঙ্গবন্ধুর বিশাল ভাস্কর্যটি। ৫ আগস্ট বিকেল পাঁচটার দিকে শতাধিক যুবক রড, বাঁশ ও হাতুড়ি নিয়ে স্মৃতি কমপ্লেক্সে প্রবেশ করে। প্রথমে তারা বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যটির মাথা ভেঙে গুঁড়িয়ে দেয়। একই সময় এলোপাতাড়িভাবে আঘাত করে ‘১৭ এপ্রিলের গার্ড অব অনার’ ভাস্কর্যটিতে।
ময়মনসিংহের শশীলজে থাকা ভেনাসের ভাস্কর্যটি ভাঙা হয়েছে, চুরি হয়েছে মাথাটি। শশীলজের জাদুঘরের তত্ত্বাবধায়ক সাবিনা ইয়াসমিন প্রথম আলোকে বলেছেন, ‘শত শত লোক দলবেঁধে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করে। ভাস্কর্যের মাথার অংশ পাওয়া যায়নি। এটি অমূল্য সম্পদ ছিল।’ এ শহরে জয়নুল সংগ্রহশালার সামনে থাকা শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিনের আবক্ষ মূর্তিটিও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অবশ্য স্থানীয় শিল্পীরা মিলে পরে সেটি সংস্কার করেছেন।
খুলনায় শেখ মুজিবুর রহমানের দুটি ভাস্কর্য পুরোপুরি ভেঙে ফেলা হয়েছে। জেলা শহর মাদারীপুরে নির্মাণাধীন মুক্তিযুদ্ধের একটি স্মৃতিকেন্দ্রের নাম ছিল ‘পলাশী থেকে ধানমন্ডি’। শহরের প্রাণকেন্দ্র শকুনির লেকপাড়ে অবস্থিত এই স্মারকের ভেতরের সবকিছু নষ্ট করা হয়েছে ৭ আগস্ট বিকেলে।
৫ আগস্টের পর গাজীপুরে তিনটি স্থানে ভাস্কর্য ভাঙচুর করা হয়। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সাত বীরশ্রেষ্ঠের রিলিফ ভাস্কর্য। এটি ছিল জয়দেবপুরের ভেতরের দিকে। সিলেটে শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়, এমসি কলেজ, জেলা পরিষদ, জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে থাকা ১২টির বেশি ম্যুরাল ভাঙা হয়েছে। এর সব কটিই শেখ মুজিবুর রহমানের। নরসংদীতে জ্বালিয়ে দেয়া হয়েছে ‘তর্জনী’ নামে পরিচিত ভাস্কর্যটি। সেখানে শেখ মুজিবুর রহমানের ৭ মার্চ ভাষণের একটি আঙুল তুলে রাখা সেই দৃশ্যের অনুকরণে তর্জনী বানানো হয়েছিল।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের ভাস্কর্য বিভাগের চেয়ারম্যান নাসিমুল খবির বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত ভাস্কর্যের তালিকা প্রণয়নের কাজ চলছে। গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে সংস্কারের জন্য ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে যাওয়া ভাস্কর্য নির্বাচনে। কোনটি কোন প্রক্রিয়ায় সংস্কার হবে তা নির্ধারণে বিশেষজ্ঞদের সম্পৃক্ততা প্রয়োজন। তবে সবগুলোই সংস্কার করা সম্ভব নয়।