cialis fiyat cialis sipariş http://umraniyetip.org/
Fapperman.com DoEscortscialis viagra viagra cialis cialis viagra cialis20mgsite.com geciktirici sprey azdırıcı damla
ডেইলি সিলেট ডেস্ক ::
বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলে সিলেটে সৃষ্ট বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। রাতে পানি কমলেও বৃষ্টি অব্যাহত থাকায় ও সুরমা-কুশিয়ারা নদীর ১৫ স্থানে ডাউক (নদী প্রতিরক্ষা বাঁধ) ভেঙ্গে প্রবল বেগে নতুন করে প্লাবিত হচ্ছে জেলার জৈন্তাপুর, গোয়াইঘাট, কোম্পানীগঞ্জ কানাইঘাট উপজেলার আরও বেশ কিছু এলাকা। এতে চরম বিপাকে পড়েছেন প্লাবিত এলাকাগুলোর মানুষ। বহু পরিবার এখনও পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছেন। তাদের উদ্ধারে কাজ করছে প্রশাসন।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, উজান থেকে নেমে আসা ঢলে নতুন করে প্লাবিত হয়েছে সিলেটের গোয়াইনঘাট, জৈন্তাপুর, কোম্পানীগঞ্জ ও কানাইঘাট উপজেলার বেশ কিছু এলাকা। ফলে বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। বন্যায় প্লাবিত হয়েছে সিলেট-তামাবিল মহাসড়কসহ এই চার উপজেলার গুরুত্বপূর্ণ অনেক সড়ক। এতে ব্যাহত হচ্ছে যোগাযোগ ব্যবস্থা। নিম্নাঞ্চলের পানিবন্দিদের নিরাপদ স্থানে নিয়ে আসতে কাজ করছে প্রশাসন। খোলা হয়েছে আশ্রয়কেন্দ্রগুলো। ইতোমধ্যেই বহু পরিবার আশ্রয়কেন্দ্রে উঠেছেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। এছাড়াও সংশ্লিষ্ট এলাকার দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটি ইতিমধ্যে জরুরি বৈঠক করেছে।
জানা যায়, জৈন্তাপুর উপজেলার নিজপাট লামাপড়া, বন্দরহাটি, ময়নাহাটি, ফেরিঘাট, জাঙ্গালহাটি, বড়খেলা, মেঘলী, তিলকৈপাড়া, ফুলবাড়ী, নয়াবাড়ী, হর্নি, বাইরাখেল, গোয়াবাড়ী, ডিবির হাওর, ঘিলাতৈল, মুক্তাপুর, বিরাইমারা হাওর, খারুবিল, লমানীগ্রাম, কাটাখাল, বাউরভাগ ও বাওন হাওরসহ নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এ উপজেলায় ৪৮টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত করা হয়েছে। খোলা হয়েছে কন্ট্রোল রুম।
গোয়াইনঘাট উপজেলার ১৩টি ইউনিয়নের প্রায় ৭০ ভাগ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। ইতোমধ্যেই ২৫০টি পরিবার আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান করছেন। এখনও বহু পরিবার পানিবন্দি রয়েছেন। তাদের উদ্ধারে কাজ করছেন স্থানীয় প্রশাসন। উদ্ধার কার্যক্রমে অংশ নিয়েছে জাফলং পর্যটক ঘাটের দেড় শতাধিক নৌকা। এ উপজেলায় ৫৬টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
কোম্পানীগঞ্জের ৬টি ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। অনেকের ঘরের মধ্যে পানি ঢুকে গেছে। উপজেলায় ১৩৫টি পরিবার আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান করছেন। পানিবন্দিদের উদ্ধারে কাজ করছে প্রশাসন। এ উপজেলায় ৩৫টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
কানাইঘাট উপজেলার প্রায় সব ইউনিয়নের প্লাবিত হয়েছে। অনেকের ঘর-বাড়িতে পানি ঢুকেছে। উপজেলায় ১৮টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত করা হলেও কিছু আশ্রয়কেন্দ্রে পানি ঢুকে যাওয়ায় নতুন করে আরও কিছু আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে।
সিলেট পান্নি উন্নয়নের বোর্ডের সকাল ৯টার তথ্য অনুযায়ী, জেলার প্রধান নদ-নদীর পানি বিপদসীমার উপরে অবস্থান করছিল।
প্লাবিত হওয়ায় বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন অধিকাংশ উপজেলা
সিলেটের জৈন্তাপুর, কোম্পানীগঞ্জ, গোয়াইনঘাট ও কানাইঘাট উপজেলা বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। সৃষ্ট বন্যায় সব উপজেলার অধিকাংশ এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েছে লাখ লাখ বাসিন্দা। পানিতে তলিয়ে গেছে বিদ্যুতের পাওয়ার স্টেশনগুলো ফলে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া সম্ভব হচ্ছেনা বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড সিলেটের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী আরাফাত আল মাজিদ ভূইয়া জানান, সিলেটে কোনো লোডশেডিং নেই। তবে প্লাবিত এলাকার বিভিন্ন ফিডারে বন্যার পানিতে প্লাবিত হয়েছে। তাছাড়া অনেকের ঘরের মিটার পর্যন্ত পানি চলে এসেছে ফলে দুর্ঘটনা এড়াতে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন রাখা হয়েছে। বন্যা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলেই সংযোগ প্রদান করা হবে।
পর্যটনকেন্দ্র বন্ধ ঘোষণা
পরিস্থিতি বিবেচনায় সিলেটের বিভিন্ন এলাকার পর্যটন কেন্দ্র বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। সেই সাথে স্থানীয়দের সতর্কতা অবলম্বন করে চলতে বলা হয়েছে।
গোয়াইনঘাটের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. তৌহিদুল ইসলাম জানান, বন্যায় উপজেলার ৭০ ভাগ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। পানিবন্দি হয়েছেন লক্ষাধিক মানুষ। পর্যটন এলাকার পর্যটকবাহী নৌকা নিয়ে উদ্ধার অভিযান চলছে। উপজেলার ৫৬টি আশ্রয়কেন্দ্রে অন্তত ২৫০ পরিবার আশ্রয় নিয়েছেন। অনেক মানুষ পার্শ্ববর্তী উঁচু এলাকায় আশ্রয় নিয়েছেন।
কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুনজিত কুমার চন্দ বলেন, পরিস্থিতি বিবেচনায় উপজেলা সকল পর্যটন স্পট বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। তাছাড়া উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে একটি কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে।
কানাইঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফারজানা নাসরীন বলেন, উপজেলার প্রায় সব এলাকায় পানি প্রবেশ করে। পরিস্থিতি মোকাবেলায় উপজেলা প্রশাসন কাজ করে যাচ্ছে। ইতোমধ্যেই সবকটি আশ্রয় কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
জৈন্তাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উম্মে সালিক রুমাইয়া বলেন, উপজেলার পানিবন্দিদের উদ্ধারের কাজ চলমান রয়েছে। উপজেলার বেশিরভাগ এলাকায় নতুন করে প্লাবিত হচ্ছে। অনেকে আশ্রয়কেন্দ্রে এসে উঠেছেন। তাছাড়া উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে একটি কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে।
সিলেট আবহাওয়া অফিসের সহকারী আবহাওয়াবিদ শাহ মো. সজীব হোসাইন জানান, মে মাসের ২৯ দিনে ৭০৫ মিলি মিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। যেখানে মে মাসে স্বাভাবিক বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ৫৭০ মিলি মিটার।
পানি উন্নয়ন বোর্ড সিলেটের নির্বাহী প্রকৌশলী দীপক রঞ্জন দাশ বলেন, কুশিয়ার নদীর অন্তত ১৫ স্থানে নদী প্রতিরক্ষা বাঁধ (ডাইক) ভেঙে পানি লোকালয়ে প্রবেশ করছে। তাছাড়া অন্তত দুই কিলোমিটার এলাকায় সুরমা-কুশিয়ারা নদীর পানি বাঁধ উপচে লোকালয়ে প্রবেশ করছে। পরিস্থিতি মোকাবেলায় আমাদের টিম কাজ করছে। কিন্তু প্রবল স্রোতের কারণে ভাঙা ডাইক মেরামত করা সম্ভব হচ্ছে না। তাছাড়া বিভিন্ন স্থানে নদী উপচে পানি প্রবেশ করছে।
সিলেটের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোবারক হোসেন জানান, জেলার জৈন্তাপুর, কোম্পানীগঞ্জ, গোয়াইনঘাট ও কানাইঘাট উপজেলায় নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। নদ-নদীতে পানি বৃদ্ধির কারণে নতুন আরও কিছু এলাকা প্লাবিত হয়েছে। এসব এলাকায় আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে। তাছাড়া যারা পানিবন্দি রয়েছেন তাদের উদ্ধারে কাজ করে যাচ্ছে স্থানীয় প্রশাসন।
আকস্মিক বন্যা পরিস্থিতি মোকাবেলায় জেলা প্রশাসনের সবরকম প্রস্তুতি নিয়েছে। সকল উপজেলা নির্বাহী অফিসারদের সার্বক্ষণিক তদারকি করতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
জেলা প্রশাসক কার্যালয় থেকে আরও জানানো হয়েছে, ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে সৃষ্ট বন্যা পরিস্থিতি মোকাবেলার লক্ষ্যে সমগ্র সিলেট জেলায় মোট ৪৭০টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। এরমধ্যে গোয়াইনঘাট ৫৬টি, জৈন্তাপুর ৪৮টি, কানাইঘাট ১৮টি,কোম্পানীগঞ্জ ৩৫টি, জকিগঞ্জ ৫৮টি।
তাছাড়া, ১ হাজার বস্তা শুকনো খাবার, ৭৫ মেট্রিক টন চালসহ ২ লক্ষ ৫০ হাজার টাকার ত্রাণসামগ্রী উপজেলাসমূহে উপবরাদ্দ প্রদান করা হয়েছে।