সর্বশেষ আপডেট : ৩ মিনিট ৫৭ সেকেন্ড আগে
রবিবার, ১৯ মে ২০২৪ খ্রীষ্টাব্দ | ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ |

DAILYSYLHET
Fapperman.com DoEscorts

প্রধানমন্ত্রীকে বরণে প্রস্তুত মহেশখালী

ডেইলি সিলেট ডেস্ক ::

দীর্ঘ ২৮ বছর পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আগমন উপলক্ষে দ্বীপ উপজেলাকে সাজানো হয়েছে বর্ণিল সাজে। প্রধানমন্ত্রী আজ শনিবার (১১ নভেম্বর) কক্সবাজারের মহেশখালীর মাতারবাড়ী সফরে আসছেন। প্রধানমন্ত্রীকে বরণে প্রস্তুত মহেশখালী। এ সফরে তিনি মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্রবন্দর চ্যানেল উদ্বোধন এবং প্রথম টার্মিনাল নির্মাণ কাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন।

শনিবার দুপুরে মাতারবাড়ী কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্র সংলগ্ন টাউনশিপ মাঠে উপজেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখবেন শেখ হাসিনা। এদিকে, প্রধানমন্ত্রীর আগমন ঘিরে প্রায় এক মাস ধরে চলা নানা প্রস্তুতি ইতিমধ্যে শেষ হয়েছে।

শেখ হাসিনাকে স্বাগত জানাতে জেলা জুড়ে তৈরি করা হয়েছে শতাধিক তোরণ। জনসভাস্থলের আশপাশের সড়ক সংস্কার ও মনোরম করা হয়েছে। সরকার প্রধানের জনসভাকে কেন্দ্র করে মহেশখালীসহ পুরো কক্সবাজারে বিরাজ করছে উৎসবের আমেজ। এদিকে, জনসভাস্থলসহ পুরো জেলা জুড়ে সতর্ক অবস্থানে রয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। তৈরি করা হয়েছে কয়েক স্তরের নিরাপত্তা।

মহেশখালী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও কালারমারছড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান তারেক বিন ওসমান শরীফ বলেন, বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার হাত ধরে এই উন্নয়ন সম্ভব হয়েছে। তলাবিহীন ঝুড়ি থেকে স্মার্ট বাংলাদেশ উপহার দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। মহেশখালীসহ পুরো কক্সবাজারে প্রধানমন্ত্রী যেসব উন্নয়ন করেছেন তা কখনো ভোলার মতো নয়। তাকে আমাদের আবারও উন্নয়নের সুযোগ দিতে হবে। মাতারবাড়ীতে শেখ হাসিনাকে বরণে প্রস্তুত লাখো মানুষ।

মহেশখালী কুতুবদিয়া আসনের সংসদ সদস্য আশেকউল্লাহ রফিক বলেন, প্রধানমন্ত্রী দেশের বড় বড় প্রকল্পগুলো মাতারবাড়ীতে বাস্তবায়ন করছেন বলে আমরা সৌভাগ্যবান। এই উপহারের জন্য দ্বীপ উপজেলা মহেশখালী ও কুতুবদিয়ার মানুষ প্রধানমন্ত্রীর কাছে চির কৃতজ্ঞ। প্রধানমন্ত্রীর আজকের জনসভায় দুই দ্বীপ উপজেলার অন্তত তিন লাখ মানুষ ছাড়াও পার্শ্ববর্তী উপজেলাগুলো থেকে হাজার হাজার মানুষ যোগ দেবেন।

উল্লেখ্য, কক্সবাজার জেলা প্রশাসক শাহিন ইমরান জানান, প্রধানমন্ত্রী কক্সবাজারে ১১টি প্রকল্প উদ্বোধন ও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন। এসব প্রকল্পে মোট ব্যয় প্রায় ৫৩ হাজার কোটি টাকা।

প্রকল্পগুলোর মধ্যে আরও রয়েছে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়ের অধীনে নির্মিত মাতারবাড়ী ১৩০০ মেগাওয়াট কয়লাভিত্তিক তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র এবং সাবমেরিন ক্যাবলের মাধ্যমে দ্বীপ উপজেলা কুতুবদিয়ায় জাতীয় গ্রিডের বিদ্যুৎ সংযোগ।

এছাড়াও রয়েছে শেখ কামাল আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়াম উদ্বোধন, কক্সবাজারকে সিটি করপোরেশন ঘোষণা এবং কক্সবাজার ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির উদ্বোধন।

শনিবার বেলা ১১টা ৪০ মিনিটে প্রধানমন্ত্রী কক্সবাজার সদরে ঢাকা-চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রেলপথের উদ্বোধনসহ অন্যান্য প্রকল্পগুলো উদ্বোধন করবেন। ভাষণ দেবেন সুধী সমাবেশে। বিকেল ৩টায় মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্রবন্দর চ্যানেলের উদ্বোধন ও প্রথম টার্মিনাল নির্মাণের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন। এরপর মহেশখালী উপজেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় বক্তব্য দেবেন। বিকেলে তিনি ঢাকা ফিরে আসবেন।

দোহাজারী-কক্সবাজার রেললাইন প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক প্রকৌশলী মোহাম্মদ মফিজুর রহমান জানান, শনিবারের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান সামনে রেখে কয়েকবার পরীক্ষামূলক ট্রেন চালিয়ে দেখা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর উদ্বোধনের পর শুরু হবে রেল চলাচল।

২০১০ সালে ১ হাজার ৮৫২ কোটি টাকার এই রেললাইন প্রকল্পটি অনুমোদন দেয়া হয়। ওই প্রকল্পে সিঙ্গেল লাইন মিটারগেজ রেলপথ নির্মাণের কথা ছিল। কিন্তু ট্রান্স এশীয় রেলপথের সঙ্গে সংযুক্ত হতে ব্রডগেজ রেলপথ লাগবে। তাই প্রকল্প সংশোধন করা হয় ২০১৬ সালের ১৯ এপ্রিল। জমি অধিগ্রহণসহ প্রকল্পের বিভিন্ন অনুষঙ্গে ব্যয় দাঁড়ায় ১৬ হাজার ১৮২ কোটি টাকা।

দোহাজারী-কক্সবাজার রেললাইনের আওতায় ৩৯টি বড় আকারের সেতু নির্মাণ করা হয়েছে। পাহাড়ি ঢলে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পর ত্রুটিগুলো চিহ্নিত করে পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। প্রায় ২২৩টি ছোট সেতু ও কালভার্ট, বিভিন্ন শ্রেণির ৯৬টি লেভেলক্রসিং নির্মাণ করা হয়েছে। হাতি চলাচলের জন্য আলাদা করে আন্ডারপাস করা হয়েছে।

কক্সবাজারে আইকনিক স্টেশন নির্মাণের পাশাপাশি নির্মাণ ও সংস্কার করা দোহাজারী, সাতকানিয়া, লোহাগাড়া, হারবাং, চকরিয়া, ডুলাহাজরা, ইসলামাবাদ এবং রামু রেলস্টেশন।

উদ্বোধনের অপেক্ষায় থাকা গভীর সমুদ্র বন্দর চ্যানেলের ব্যাপারে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের (সিপিএ) সচিব ওমর ফারুক জানান, কোল পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি বাংলাদেশ লিমিটেড (সিপিজিসিবিএল) থেকে অধিগ্রহণ করা চ্যানেলটি চালুর জন্য সিপিএ সর্বাত্মক প্রস্তুতি নিয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী উদ্বোধনের পর ৪৬০ মিটার দীর্ঘ কন্টেইনার জেটি এবং ১৮.৫ মিটার ড্রাফ্টসহ ৩০০ মিটার দীর্ঘ একটি বহুমুখী জেটি এবং একটি কন্টেইনার ইয়ার্ডসহ বন্দরের অন্যান্য সুবিধার নির্মাণ কাজ শুরু হবে।

সিপিজিসিবিএল-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবুল কালাম আজাদ জানিয়েছেন, আনুষ্ঠানিকভাবে কোম্পানিটি ইতিমধ্যেই মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্র বন্দর চ্যানেলটি সিপিএ চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল মোহাম্মদ সোহেলের কাছে হস্তান্তর করেছে। ২০২৬ সালে বন্দরটির কার্যক্রম শুরু হওয়ার কথা রয়েছে।

রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন সিপিজিসিবিএল ইতোমধ্যে কয়লা বিদ্যুৎ প্রকল্পের অংশ হিসাবে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য এই চ্যানেলের মাধ্যমে ১২০টি জাহাজ চলাচলের জন্য চ্যানেল এবং দুটি জেটি নির্মাণ করেছে।

দেশের প্রথম এবং একমাত্র গভীর সমুদ্র বন্দর প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে মাতারবাড়ি বন্দর উন্নয়ন প্রকল্পটি প্রায় ১৭ হাজার ৭৭৭ কোটি টাকা ব্যয়ে হাতে নেওয়া হয়।

২০১৮ সালের ২৯ নভেম্বর নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় এবং বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের মধ্যে স্বাক্ষরিত চুক্তি অনুযায়ী মাতারবাড়ী বন্দর নির্মাণের জন্য চ্যানেলের প্রস্থ ১০০ মিটার বাড়িয়ে ৩৫০ মিটার করা হয়েছে।

সংবাদটি শেয়ার করুন

Comments are closed.

নোটিশ : ডেইলি সিলেটে প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, আলোকচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও বিনা অনুমতিতে ব্যবহার করা বেআইনি -সম্পাদক

© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত

২০১১-২০১৭

সম্পাদকমন্ডলীর সভাপতি: মকিস মনসুর আহমদ
সম্পাদক ও প্রকাশক: খন্দকার আব্দুর রহিম, নির্বাহী সম্পাদক: মারুফ হাসান
অফিস: ৯/আই, ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি, ৯ম তলা, জিন্দাবাজার, সিলেট।
ফোন: ০৮২১-৭২৬৫২৭, মোবাইল: ০১৭১৭৬৮১২১৪
ই-মেইল: dailysylhet@gmail.com

Developed by: