সর্বশেষ আপডেট : ৩ ঘন্টা আগে
শুক্রবার, ২১ মার্চ ২০২৫ খ্রীষ্টাব্দ | ৭ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ |

DAILYSYLHET
Fapperman.com DoEscorts

কবরস্থানে ফেলে যাওয়া দম্পতির ঠাঁই মেয়ের বাসায়, পাশে প্রশাসন

ডেইলি সিলেট ডেস্ক ::
সিরাজগঞ্জের চৌহালী উপজেলার দুর্গম চরাঞ্চল উমারপুর ইউনিয়নের হাপানিয়া গ্রাম। সেখানকার বাসিন্দা হামিদ মোল্লা (৮৬) ও তার স্ত্রী ফজিলা খাতুন (৭৭)। এই দম্পতির পাঁচ ছেলে। অনেক আগেই যমুনা নদীর ভাঙনে বসতভিটা বিলীন হয়েছে তাদের। দুই মেয়ের বিয়েও দিয়েছেন। কিন্তু পাঁচ ছেলের কেউ তার বাবা মায়ের দায়িত্ব নিতে চাননা। কয়েকদিন আগে বৃদ্ধ ওই দম্পতিকে উপজেলার সম্ভুদিয়া জান্নাতুল বাকি কবরস্থান এলাকার নির্জন স্থানে ফেলে রেখে যান স্বজনরা।

পাঁচ ছেলের কেউই দায়িত্ব নিতে রাজি না হওয়ায় ওই দম্পতির পাশে দাঁড়িয়েছে উপজেলা প্রশাসন। বৃদ্ধ দম্পতি আপাতত আছেন তাদের বড় মেয়ের বাড়িতে। কিন্তু তারও আর্থিক সঙ্গতি নেই। এই অবস্থায় পরিবারটিকে দেয়া হয়েছে আর্থিক সহায়তা, পাশাপাশি এই প্রবীণ দম্পতির জন্য বেশ কিছু উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। পাশাপাশি বাবা-মাকে ভরণপোষণ না করার অপরাধে ছেলেদের বিরুদ্ধে মামলার প্রস্তুতি চলছে।

প্রশাসনের কর্মকর্তারা জানান, মাস দুয়েক আগে সেজ ছেলের মানিকগঞ্জের বাড়ি থেকে এই দম্পতিকে চৌহালী উপজেলার উমারপুর ইউনিয়নের হাঁপানিয়া চরে পাঠিয়ে দেয়া হয়। পরে বৃদ্ধের ভাগ্নের বাড়িতে আশ্রয় হয় তাদের। সেখানেও অবহেলার শিকার হন তারা। কয়েকদিন আগে পাশের বাঘুটিয়া ইউনিয়নে সম্ভুদিয়া কবরস্থানের পাশে ফেলে রেখে যাওয়া হয় দুজনকে। পাশেই তাদের বড় মেয়ে মনোয়ারা খাতুনের বাড়ি। তিনিও স্বামী হারা। থাকেন সন্তানের কাছে।

বিষয়টি জানতে পেরে মনোয়ারা বাবা-মাকে তাদের বাড়িতে তোলেন। তিনি বলেন, আমি নিজেই স্বামী হারা। দরিদ্র সন্তানদের সংসারে থাকি। আমার পাঁচ ভাইয়ের কেউ বাবা মাকে ভরণপোষণ করে না। এই বৃদ্ধ বয়সে তাদের বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছে। অভাব অনটনের সংসারে অসুস্থ বৃদ্ধ বাবা মাকে ভরণপোষণ আমার জন্য কষ্টসাধ্য। বিষয়টি জানতে পেরে অসহায় বাবা-মায়ের পাশে দাঁড়িয়েছে উপজেলা প্রশাসন।

চৌহালী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাহবুব হোসেন জানান, শুক্রবার সকালে সহকারী কমিশনার (ভূমি) সাইফুল ইসলাম ও বাগুটিয়া ইউপি চেয়ারম্যান আবুল কালাম মোল্লা এবং এক চিকিৎসকদের সমন্বয়ে একটি দলকে ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়েছিল।

উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে এই দম্পতিকে নগদ ১০ হাজার টাকা ও প্রয়োজনীয় ওষুধপত্র দেয়া হয়েছে। তাদেরকে সাময়িকভাবে মেয়ের বাড়িতেই থাকতে বলা হয়েছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাদের প্রয়োজনীয় সহায়তা করা হবে।

ইউএনও বলেন, এই দম্পতিকে দ্রুত সময়ের মধ্যে একটি ঘর তুলে দেয়ার সিদ্বান্ত নেয়া হয়েছে। অন্যদিকে, বৃদ্ধ বাবা-মাকে ভরণপোষণ না করার অপরাধে ছেলেদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য থানার ওসিকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

উল্লেখ্য, ২০১৩ সালের অক্টোবরে জাতীয় সংসদে পাস হওয়া পিতামাতার ভরণপোষণ আইন অনুযায়ী বৃদ্ধ বাবা মায়ের ভরণপোষণ সন্তান নিশ্চিত করবে। একাধিক সন্তান থাকলে আলোচনা করে এটা নিশ্চিত করতে হবে। কোনো সন্তান পিতা-মাতাকে তাদের ইচ্ছার বিরুদ্ধে কোনো বৃদ্ধনিবাস বা আলাদাভাবে অন্য কোথাও বসবাসের জন্য বাধ্য করতে পারবে না। প্রত্যেক সন্তানকে পিতা-মাতার স্বাস্থ্য ও চিকিৎসাসেবা সম্পর্কে নিয়মিত খোঁজ রাখতে হবে। আইনে বলা আছে, সন্তানের আয়ের ১০ শতাংশ তাদের বৃদ্ধ বাবা-মাকে দিতে হবে।

সংবাদটি শেয়ার করুন

Comments are closed.

নোটিশ : ডেইলি সিলেটে প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, আলোকচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও বিনা অনুমতিতে ব্যবহার করা বেআইনি -সম্পাদক

© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত

২০১১-২০১৭

সম্পাদক ও প্রকাশক: খন্দকার আব্দুর রহিম
নির্বাহী সম্পাদক: মারুফ হাসান
অফিস: ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি, ৯ম তলা, জিন্দাবাজার, সিলেট।
মোবাইল: ০১৭১২ ৮৮৬ ৫০৩
ই-মেইল: dailysylhet@gmail.com

Developed by: