সর্বশেষ আপডেট : ৯ ঘন্টা আগে
শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪ খ্রীষ্টাব্দ | ১৪ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ |

DAILYSYLHET
Fapperman.com DoEscorts

সিলেটে যে প্রকল্প নিয়ে অনেক প্রশ্ন

ওয়েছ খছরু:সিলেটের একটি প্রকল্প ৮ মাস ধরে ঝুলছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আব্দুল মোমেন ও মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী ডিও দিয়েছেন। বার বার যোগাযোগ করেছেন; কিন্তু প্রকল্পটি অনুমোদন দেয়া হচ্ছে না। মাত্র চার কোটি টাকার এই প্রকল্প নিয়ে অনেক ক্ষোভ সিলেটে। জবাবদিহিতার মুখোমুখি হতে হচ্ছে সংশ্লিষ্টদের। সিলেটের মানুষের জীবন বাঁ’চানোর প্রকল্পটি কেন অনুমোদিত হচ্ছে না- এই প্রশ্নের উত্তর কারও জানা নেই। আগে সম্পন্ন হলে এই প্রকল্পে চার কোটি টাকায়ই শেষ হতো, এখন নতুন করে এটিতে এসে যু’ক্ত হয়েছে অক্সিজেন প্ল্যান্টও। ফলে চার কোটি টাকায়ও এখন আর প্রকল্পটি ম্পূর্ণ হবে না।

শামসুদ্দিন আহম’দ হাসপাতালকে করো’না ডেডিকেডেট হাসপাতাল করা হলেও সেটিতে অক্সিজেন সা’পোর্ট দেয়া ও আইসিইউ বাড়ানো নিয়ে সংকট দেখা হয়। তখন এগিয়ে এসেছিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আব্দুল মোমেন। তার প্রচেষ্টায় হাসপাতা’লে আইসিইউ সা’পোর্ট বাড়ানো হয়।

প্রবাসীরা এগিয়ে এসে সেন্ট্রাল অক্সিজেন সা’পোর্টের জন্য অক্সিজেন প্ল্যান্ট বসানোসহ নানা বিষয়ে সহযোগিতা করেন। বেসরকারি উদ্যোগ থেকে সহায়তা নিয়ে চিকিৎসক ও রোগীদের জন্য দুটি গাড়ির ব্যবস্থা করেন মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী। প্রবাসীদের সহায়তায় কিডনি ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে শামসুদ্দিন ছাড়াও সিলেটের অন্য দুটি কোভিড হাসপাতাল খাদিমপাড়া ও দক্ষিণ সুরমায় চিকিৎসা শুরু করা হয়।

প্রথমে দরজা বন্ধ রাখলেও পরবর্তীতে পরিস্থিতি বিবেচনায় সিলেটের বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকে করো’না চিকিৎসা শুরু করেন। আর এখন করছেন রীতিমতো যু’দ্ধও। সিলেটের করো’নার চিকিৎসায় সরকারি সুবিধা বলতে প্রথম পর্যায়ে ততটা প্রয়োজন পড়েনি। এমনকি কোভিড ছাড়া অন্য রোগীদের চিকিৎসা স্বাভাবিক রাখতে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালকে রিজার্ভ রাখা হয়। কিন্তু ভা’রতীয় ভ্যারিয়েন্ট শুরু হওয়ার আগেই প্রস্তুতি বিবেচনায় নিয়ে সিলেটে সরকারিভাবে করো’না চিকিৎসার পরিধি বাড়াতে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতা’লের নতুন ভবনের দুটি তলায় সাড়ে ৪শ’ বেডের আইসোলেশন সেন্টার চালুর প্রস্তাব করা হয়। হাসপাতা’লের ব্যবস্থাপনা কমিটির সভায় সিদ্ধান্ত নিয়ে আইসোলেশন সেন্টার চালুর বিষয়টি চূড়ান্ত হয়। এরপর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ নিজেদের অর্থায়নে দুটি ওয়ার্ডে বেডসহ সরঞ্জামাদি জোগান দেন। কিন্তু বাদ সাধে সেন্ট্রাল অক্সিজেন ব্যবস্থা। করো’না রোগীদের উন্নত চিকিৎসার জন্য সেন্ট্রাল অক্সিজেন সা’পোর্ট খুবই প্রয়োজন।

এজন্য প্রয়োজন চার কোটি টাকা। ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ওই চার কোটি টাকা বরাদ্দ চেয়ে গত ডিসেম্বরে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠায় এবং বার বার ভা’র্চ্যুয়াল আলোচনায় মন্ত্রণালয়ের শীর্ষ কর্মক’র্তাদের কাছে প্রকল্পটির বিষয়ে কথা বলেন। কিন্তু বার বার আশ্বা’স দেয়া হলেও ওই প্রকল্পের ছাড় দেয়া হয়নি।

এমনকি সিলেট-১ আসনের এমপি ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আব্দুল মোমেন ও সিলেটের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী প্রকল্পের যৌক্তিকতা তুলে ধরে ডিও দিলেও তাতে মন্ত্রণালয়ের কর্মক’র্তারা কর্ণপাত করেননি। সম্পূর্ণ প্রস্তুত থাকার পর মাত্র চার কোটি টাকা ব্যয়ে সেন্ট্রাল অক্সিজেন ব্যবস্থা চালু না করতে পারায় খেসারত এখন দিতে হচ্ছে সিলেটের মানুষকে। করো’নার ভ’য়াবহ সংক্রমণ ঘটেছে সিলেটে। পরিসংখ্যান বলেছে; সিলেটের অর্ধেক মানুষই এখন করো’না আ’ক্রান্ত। গত জুলাই মাসে সিলেটে করো’নায় আ’ক্রান্ত হয়েছে প্রায় ১৩ হাজার।

আইসিইউ ও অক্সিজেন সা’পোর্ট না পেয়ে ২ শতাধিক মানুষের মৃ’ত্যু হয়েছে। দিনে দিনে সিলেটে ভ’য়ঙ্কর হয়ে উঠেছে করো’না পরিস্থিতি। এখন হাসপাতা’লে রোগী ভর্তির জায়গা নেই। প্রায় সব বেসরকারি হাসপাতা’লের অর্ধেক জায়গা ছেড়ে দিয়েও করো’না রোগীর ঠাঁই দিতে পারছে না।

ওসমানী হাসপাতা’লের চারটি ওয়ার্ডে প্রায় ৩০০ বেডের জায়গা করার পর বেশি সংখ্যক রোগী হাসপাতালমুখী হওয়ার কারণে এখন ফ্লোরিং করা হচ্ছে। আগস্টে এসেও হাসপাতালমুখী রোগীর স্রোত কমছে না। বাড়ছে মৃ’ত্যুর মিছিল। এই অবস্থায় সবচেয়ে বেশি আ’লোচিত হচ্ছে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতা’লের প্রস্তাবিত সাড়ে ৪শ’ বেডের আইসোলেশন সেন্টার স্থাপনের বিষয়টি। শুধু মাত্র অক্সিজেনের অভাবের কারণেই করো’না চিকিৎসার আইসোলেশন সেন্টারটি চালু করা সম্ভব হচ্ছে না।

হাসপাতা’লের সহকারি পরিচালক ডা. আবুল কালাম আজাদ জানিয়েছেন- ‘হাসপাতা’লে নতুন আইসোলেশন সেন্টার চালু করতে এখন অক্সিজেন সা’পোর্ট নতুন করে বাড়াতে হবে। এজন্য অক্সিজেন প্ল্যান্টও প্রয়োজন। অক্সিজেন প্ল্যান্ট বসানো ছাড়া নতুন আইসোলেশন সেন্টার চালু করা সম্ভব হবে না। কারণ- রোগী ভর্তি করলে অক্সিজেন সা’পোর্ট দিতে হবে।’ তিনি জানান- ‘প্রকল্পটি নিয়ে আম’রা যোগাযোগ রাখছি। আশা করছি সরকারের তরফ থেকে এ ব্যাপারে দ্রুতই সিদ্ধান্ত পাওয়া যাবে।’

এদিকে হাসপাতা’লের সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন- বর্তমান সময়ে ওসমানীতে বেড়েছে অক্সিজেনের চাহিদা। ওয়ার্ডে থাকা রোগীদের ৯০ শতাংশেরই অক্সিজেন সা’পোর্ট লাগছে। এ কারণে বর্তমানে যে সেন্ট্রাল অক্সিজেন ব্যবস্থা রয়েছে সেটি দিয়ে চালানো হচ্ছে কার্যক্রম। প্রয়োজন বিবেচনায় এখন একদিন অন্তর অন্তর অক্সিজেন কোম্পানি হাসপাতা’লে প্ল্যান্টে অক্সিজেন সরবরাহ করতে হচ্ছে। সরকারিভাবে ৪শ’ বেডের আইসোলেশনের সেন্টারের জন্য মাত্র চার কোটি টাকা বরাদ্দ না দেয়ায় ক্ষুব্ধ সিলেটের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী। এখন আর টাকার জন্য বসে থাকবেন না বলে জানিয়েছেন। শুধু তিনি অনুমতি চান। সিলেটের মানুষের সহযোগিতা নিয়ে এই আইসোলেশন সেন্টার চালু করার কথা জানিয়েছেন।

ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতা’লের দীর্ঘ দিন উপ-পরিচালক ছিলেন ডা. হিমাংশু লাল রায়। এখন তিনি স্বাস্থ্য বিভাগ সিলেটের পরিচালক। প্রকল্পটি কেন অনুমোদিত হচ্ছে না- এ প্রশ্নের উত্তরও তার কাছে জানা নেই। জানালেন- ‘সিলেটের নগর ভবনের বৈঠকে শেষ পর্যন্ত জানিয়ে দেয়া হয়েছে; টাকা দিতে না পারলে যেন জানিয়ে দেয়া হয়। এরপর স্থানীয়ভাবে এই প্রকল্পটি নিয়ে চিন্তা-ভাবনা করা হবে বলে জানান তিনি।’

সংবাদটি শেয়ার করুন

Comments are closed.

এ বিভাগের অন্যান্য খবর

নোটিশ : ডেইলি সিলেটে প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, আলোকচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও বিনা অনুমতিতে ব্যবহার করা বেআইনি -সম্পাদক

© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত

২০১১-২০১৭

সম্পাদকমন্ডলীর সভাপতি: মকিস মনসুর আহমদ
সম্পাদক ও প্রকাশক: খন্দকার আব্দুর রহিম, নির্বাহী সম্পাদক: মারুফ হাসান
অফিস: ৯/আই, ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি, ৯ম তলা, জিন্দাবাজার, সিলেট।
ফোন: ০৮২১-৭২৬৫২৭, মোবাইল: ০১৭১৭৬৮১২১৪
ই-মেইল: dailysylhet@gmail.com

Developed by: