সর্বশেষ আপডেট : ১৯ ঘন্টা আগে
সোমবার, ২১ এপ্রিল ২০২৫ খ্রীষ্টাব্দ | ৮ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ |

DAILYSYLHET
Fapperman.com DoEscorts

শাল্লায় শিশু ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগ : মামলা না করতে প্রভাবশালীদের চাপ

হাবিব সারোয়ার আজাদ, সুনামগঞ্জ ::

শাল্লা উপজেলার পুটকা গ্রামে এক শিশু কন্যাকে ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় এক যুবকের বিরুদ্ধে। অভিযুক্ত মানিক লাল দাস (৩০) গ্রামের প্রভাবশালী ব্যক্তি সুদর্শন দাসের ছেলে বলে জানা গেছে। ঘটনাটি ঘটেছে বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) সন্ধ্যায়।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শাল্লার প্রত্যন্ত এলাকার একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ুয়া এক দরিদ্র পরিবারের শিশু কন্যাকে তার বাড়ির পাশেই মায়ের সামনে জোরপূর্বক ধর্ষণ চেষ্টা চালায় মানিক লাল দাস। ঘটনাটি জানাজানি হওয়ার পর স্থানীয়রা ক্ষোভ প্রকাশ করেন এবং ঘটনার রাতেই পুটকা গ্রামে ভিকটিমের এক আত্মীয়ের বাড়িতে সালিস বৈঠক বসে।

সালিস বৈঠকে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) সদস্য দ্বিজেন্দ্র দাসসহ গ্রামের কয়েকজন প্রভাবশালী ব্যক্তি উপস্থিত ছিলেন। তবে অভিযুক্ত মানিক লাল দাস প্রথমে সালিস বৈঠকে আসেননি। পরে নেশাগ্রস্ত অবস্থায় তিনি উপস্থিত হন। সালিসে মানিক ভবিষ্যতে এমন কাজ না করার প্রতিশ্রুতি দিলেও, ভিকটিমের পরিবারকে থানায় অভিযোগ না করার জন্য চাপ দেওয়া হয়। এভাবে সালিস বৈঠক সমাপ্ত হয়।

স্থানীয়রা জানান, মানিক লাল দাস এর আগেও গ্রামে কমপক্ষে তিনটি ধর্ষণ চেষ্টার ঘটনা ঘটিয়েছে। প্রতিবারই পারিবারিক প্রভাব ও সালিসের মাধ্যমে ঘটনাগুলো ধামাচাপা দেওয়া হয়েছে। এবারও একই পদ্ধতি অবলম্বন করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

শনিবার (১৬ মার্চ) ঘটনাস্থলে গিয়ে সালিস বৈঠকে অংশগ্রহণকারী রণজিৎ সরকার বলেন, “সালিসে ইউপি সদস্য দ্বিজেন্দ্র দাসসহ অনেকেই উপস্থিত ছিলেন। অভিযুক্ত মানিক প্রথমে সালিসে আসেনি, পরে নেশাগ্রস্ত অবস্থায় উপস্থিত হয়।” তিনি আরও বলেন, “এ ধরনের ঘটনা সালিসের মাধ্যমে মীমাংসা করা উচিত নয়।”

স্থানীয় বাসিন্দা বিকাশ দাস বলেন, “ধর্ষণ চেষ্টার মতো গুরুতর অভিযোগ এভাবে ধামাচাপা দেওয়া ঠিক নয়। গ্রামের অনেক নারী ও কিশোরী মানিক লাল দাসের ভয়ে শঙ্কিত হয়ে জীবনযাপন করছেন।”

ঘটনায় মর্মাহত হয়ে ভিকটিম শিশুটির স্কুলের প্রধান শিক্ষক বলেন, “এ ধরনের ঘটনা শুনে আমি খুবই মর্মাহত। ভিকটিমকে আইনি সহায়তা দেওয়া জরুরি। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সহযোগিতা কামনা করছি, যেন ভবিষ্যতে কেউ এমন অপকর্ম করার সাহস না পায়।”

ভিকটিমের পরিবার জানায়, তারা আইনি সহায়তা চাইলেও স্থানীয় সালিসীগণের চাপের কারণে থানায় অভিযোগ করতে পারছেন না। শনিবার সকালে শাল্লা থানার ওসি মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, “ঘটনাটি শুক্রবার রাতে আমাদের গোচরে আসে। আমরা অভিযুক্তকে গ্রেফতারের জন্য অভিযান চালিয়েছি, কিন্তু তাকে গ্রেফতার করতে পারিনি। তদন্ত চলছে।”

এ ঘটনায় স্থানীয়রা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কঠোর পদক্ষেপ কামনা করেছেন এবং অভিযুক্তকে দ্রুত গ্রেফতারের দাবি জানিয়েছেন।

সংবাদটি শেয়ার করুন

Comments are closed.

এ বিভাগের অন্যান্য খবর

নোটিশ : ডেইলি সিলেটে প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, আলোকচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও বিনা অনুমতিতে ব্যবহার করা বেআইনি -সম্পাদক

© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত

২০১১-২০১৭

সম্পাদক ও প্রকাশক: খন্দকার আব্দুর রহিম
নির্বাহী সম্পাদক: মারুফ হাসান
অফিস: ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি, ৯ম তলা, জিন্দাবাজার, সিলেট।
মোবাইল: ০১৭১২ ৮৮৬ ৫০৩
ই-মেইল: dailysylhet@gmail.com

Developed by: