সর্বশেষ আপডেট : ২২ ঘন্টা আগে
বৃহস্পতিবার, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩ খ্রীষ্টাব্দ | ১৩ আশ্বিন ১৪৩০ বঙ্গাব্দ |

DAILYSYLHET
Fapperman.com DoEscorts

এরদোয়ান যেন এক অটোমান সুলতান

ডেইলি সিলেট ডেস্ক ::

তুরস্ক নতুন এক ইতিহাস সৃষ্টি করলো। গত এক হাজার বছরের ইতিহাসে তুরস্কের রাজনীতিতে বড় ধরনের বাঁকবদল। ১৯২৩ সালে অটোমানদের পতনের পর ইউরোপের মিত্র কামাল আতাতুর্কের হাত ধরে নতুন ধারার রাজনীতিতে প্রবেশ করে তুরস্ক। তার ঠিক ১০০ বছর পর এরদোয়ানের হাত ধরে তুরস্কের আর্থ-সামাজিক ও বৈশ্বিক রাজনীতিতে দেশটির অবস্থান কেবলই উন্নতির দিকে।

দুই দশকের ক্ষমতায় সামলেছেন সামরিক অভ্যুত্থান, বিরোধী দলের ষড়যন্ত্র আর পশ্চিমা চাপ। এর পাশাপাশি মহামারি করোনা, ভূমিকম্পের তাণ্ডব আর অর্থনৈতিক সংকটতো ছিলই। তা সত্ত্বেও ভোটে চমক দেখালো এরদোয়ানের ম্যাজিক। ভোটাররা বলছেন অভ্যন্তরীণ জনবান্ধব নীতি আর কার্যকর পররাষ্ট্র নীতির কারণেই আবারও এরদোয়ানকেই পছন্দ করেছেন তারা।

আমাদের মসজিদ হবে ব্যারাক, মিনার হবে বেয়নেট আর গম্বুজ হবে হেলমেট…। ১৯৯৪ সালের মেয়র নির্বাচনের প্রচারণায় এই ভাষণ দিয়েই যে ঝড় তুলেছিলেন; তা দুই দশকে পরিণত হয়েছে শক্তিশালী টাইফুনে। একক ও অদ্বিতীয় রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ানের মধ্যে দিয়েই ফেরৎ এসেছেন অটোমান সাম্রাজ্যের অজেয় কোনো সুলতান।

কিন্তু কি আছে এরদোয়ান ম্যাজিকে, যা রুটি-শরবত বিক্রেতাকে পরিণত করেছে রাজনীতির ময়দানের পাকা খেলোয়াড়ে? ৭০ এর দশকে ছাত্র আন্দোলন দিয়ে রাজনীতিতে হাতেখড়ি। ঢেলে সাজিয়েছেন দল, পাল্টেছেন নীতিমালা। অর্থনীতি, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য কাঠামোয় করেছেন ঢালাও পরিবর্তন। তাই তো, ২০১৬ সালের অভ্যুত্থান চেষ্টায়, এরদোগানের পাশে দাঁড়াতে ভোলেননি তুর্কিরা। ইস্তাম্বুলের মেয়র পদ দিয়ে যে যাত্রা শুরু হয়েছিল, এরপর তিন দফায় প্রধানমন্ত্রী আর তৃতীয়বারের মতো প্রেসিডেন্ট হলেন এরদোয়ান।

শুধু দেশে নন, এরদোয়ানের ক্যারিশমাটিক নেতৃত্ব বিশ্বমঞ্চে গুরুত্বপূর্ণ ফ্যাক্টরে পরিণত করেছে তুরস্ককে। কখনো ভারসাম্য, আবার কখনও চাপ প্রয়োগ, বিশ্ব রাজনীতির পালাবদলে নিয়েছেন স্বার্থহীন এক বিচারকের ভূমিকা। তাই, ন্যাটোতে রয়েছে তুরস্কের বড় প্রভাব। আঞ্চলিক দেশগুলোর যুদ্ধ-সংঘাত থামাতে অন্যতম মধ্যস্থতাকারীও দেশটি।

তবে, মুসলিম দেশগুলোর মধ্যে সমন্বয় এবং সহায়তার কারণেই বেশি প্রশংসনীয় এরদোয়ান। ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরায়েলি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে তিনি বরাবরই বজ্রকণ্ঠ। পাশাপাশি, সিরিয়া সংঘাত বন্ধ এবং দেশটির সাথে আরব দেশগুলোর সম্পর্ক উন্নয়ন, রোহিঙ্গা সংকট এবং উইঘুরদের ওপর দমনপীড়ন বন্ধে মুখর তুর্কি প্রেসিডেন্ট।

এক তুর্কি নাগরিক বলেন, এরদোয়ান তুরস্কের পুরো সিস্টেমটাকেই বদলে দিয়েছেন। যদি তিনি ক্ষমতা থেকে সরে যান তাহলে আমরা আবারও আগের তুরস্কে ফিরে যাবো। এটা আমরা কখনোই চাই না।

আরেক নাগরিক বলেন, আল্লাহর কাছে শুকরিয়া এরদোয়ানের জয় হয়েছে। তিনি যদি পরাজিত হতেন, তাহলে তুর্কিরা নিজস্ব যে সংস্কৃতি আর ঐতিহ্যকে ধারণ করছে, সেটা মুছে যেতো। এরদোয়ান তো কোনো সামরিক শাসক নন। আমরা জনগণ তাকে নির্বাচিত করেছি। কারণ আমরা মনে করি তুরস্ককে বিশ্ব মঞ্চে নেতৃত্ব দেয়ার যোগ্যতা শুধু তারই আছে।

২০০৩ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত ছিলেন তুরস্কের প্রধানমন্ত্রী। এরপর দেশটির প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন তিনি। ২০১৮ সালের ভোটেও তার ওপরই আস্থা রাখেন তুরস্কের জনগণ। টানা মোট১১ নির্বাচনে জয়, অভ্যন্তরীণ আর আন্তর্জাতিক ইস্যুতে সফলতা এরদোয়ানকে নিয়ে গেছে অনন্য উচ্চতায়। কামাল আতাতুর্কের পর তুরস্কের সবচেয়ে প্রভাবশালী নেতা হিসেবে মানা হয় তাকে।

সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ বিভাগের অন্যান্য খবর

নোটিশ : ডেইলি সিলেটে প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, আলোকচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও বিনা অনুমতিতে ব্যবহার করা বেআইনি -সম্পাদক

© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত

২০১১-২০১৭

সম্পাদকমন্ডলীর সভাপতি: মকিস মনসুর আহমদ
সম্পাদক ও প্রকাশক: খন্দকার আব্দুর রহিম, নির্বাহী সম্পাদক: মারুফ হাসান
অফিস: ৯/আই, ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি, ৯ম তলা, জিন্দাবাজার, সিলেট।
ফোন: ০৮২১-৭২৬৫২৭, মোবাইল: ০১৭১৭৬৮১২১৪
ই-মেইল: dailysylhet@gmail.com

Developed by: