সর্বশেষ আপডেট : ২ ঘন্টা আগে
শনিবার, ৩ জুন ২০২৩ খ্রীষ্টাব্দ | ২০ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩০ বঙ্গাব্দ |

DAILYSYLHET
Fapperman.com DoEscorts

প্রথমবারের মতো দেখা গেল পানির নিচে সম্পূর্ণ টাইটানিক

ডেইলি সিলেট ডেস্ক ::

বিশ্বের সবচেয়ে ‘বিখ্যাত জাহাজডুবি’ টাইটানিকের ঘটনা সবারই কমবেশি জানা। এবার প্রথমবারের মতো সেই জাহাজটির ধ্বংসাবশেষ এমনভাবে উন্মোচিত হয়েছে, যা আগে দেখা যায়নি। গভীর সমুদ্রের ম্যাপিং ব্যবহার করে আটলান্টিক মহাসাগরে ৩ হাজার ৮০০ মিটার (১২,৫০০ ফুট) নিচে অবস্থিত টাইটানিকের প্রথম পূর্ণ আকারের ডিজিটাল স্ক্যান তৈরি করা হয়েছে।

ক্যামেরায় তোলা ৭ লক্ষ ছবির সমন্বয়ে তৈরি করা হয়েছে এই ছবিগুলো। ছবিগুলো পুরো জাহাজের একটি অসাধারণ থ্রিডি ভিউ তুলে ধরেছে। মনে হচ্ছে যেন জাহাজটির ধ্বংসাবশেষের চারপাশ থেকে সব পানি নিষ্কাশন করে ফেলা হয়েছে।

বিশেষজ্ঞরা আশা করছেন, ১৯১২ সালে ডুবে যাওয়া এই জাহাজটির সাথে ঠিক কি ঘটেছিল তা জানতে নতুন একটি সুযোগ তৈরি করতে পারে এই ছবিগুলো। ইংল্যান্ডের সাউদাম্পটন থেকে নিউইয়র্ক যাওয়ার উদ্দেশে প্রথমবারের মত সমূদ্রে যাত্রা করে জাহাজটি। সেই প্রথম যাত্রায় জাহাজটি একটি বিশাল আইসবার্গের সাথে ধাক্কা লেগে ডুবে যায়। এ ঘটনায় দেড় হাজারেরও বেশি মানুষ প্রাণ হারান।
১৯৮৫ সালে ধ্বংসাবশেষ আবিষ্কৃত হওয়ার পর থেকে টাইটানিককে ঘিরে ব্যাপক অনুসন্ধান হয়েছে।কিন্তু জাহাজটি এতটাই বিশাল যে- পানির নিচে গভীর অন্ধকারে, ক্যামেরাগুলি কেবল ক্ষয়িষ্ণু জাহাজের কিছু স্ন্যাপশট দেখাতে পারে, পুরো জাহাজটি কখনোই দেখাতে পারেনি।

নতুন প্রকাশিত এই ডিজিটাল স্ক্যানটি ধ্বংসাবশেষের একটি পরিপূর্ণ দৃশ্য তুলে ধরেছে। জাহাজটি দুটি অংশে ভাগ হয়ে সমূদ্রতলে পড়ে আছে। ভাঙা জাহাজটিকে ঘিরে রয়েছে বিশাল ধ্বংসস্তূপ।

স্ক্যানটি ২০২২ সালের গ্রীষ্মে ম্যাগেলান লিমিটেড নামের একটি গভীর-সমুদ্র ম্যাপিং কোম্পানি এবং আটলান্টিক প্রোডাকশন কোম্পানি মিলে তৈরি করেছে। একইসাথে তারা প্রকল্পটি সম্পর্কে একটি তথ্যচিত্রও তৈরি করছে।

টাইটানিকের এই ডিজিটাল স্ক্যান তৈরি করতে তাদের সময় লেগেছে ২০০ ঘণ্টারও বেশি। তারা টাইটানিকের প্রতিটি কোণ থেকে ছবি তুলেছে। প্রায় ৭ লক্ষ ছবির সমন্বয়ে তৈরি হয়েছে টাইটানিকের এই ডিজিটাল ছবিটি।

এই অভিযানের পরিকল্পনা এবং নেতৃত্ব দিয়েছিলেন ম্যাগেলানের গেরহার্ড সিফার্ট। তিনি জানান, এটি তার হাতে নেয়া সবচেয়ে বড় আন্ডারওয়াটার স্ক্যানিং প্রকল্প। টাইটানিক যেখানে আছে, মহাসাগরের সেই স্থানটির গভীরতা প্রায় ৪ হাজার মিটার। এটি তাদের কাজের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ ছিল। তীব্র স্রোতও জয় করতে হয়েছে তাদের। তিনি বলেন, আমরা জাহাজের কোনও কিছু স্পর্শ করিনি, যাতে ধ্বংসাবশেষের ক্ষতি না হয়।

তিনি আরও বলেন, আরেকটি চ্যালেঞ্জ ছিল- প্রতি বর্গসেন্টিমিটারের মানচিত্র তৈরি করা। তা না হলে পুরো জাহাজের চিত্র তুলে ধরা সম্ভব ছিলনা। কিছু কিছু স্থানে ধ্বংসাবশেষ কাদামাটিতে ডুবে ছিল। সেগুলো স্ক্যান করা ছিল খুব কঠিন।

হারিয়ে যাওয়ার ১০০ বছর পরেও জাহাজটির বডি অনেকটা ভালো আছে। এখনও তাৎক্ষণিকভাবে দেখে চেনা যায়- এটাই টাইটানিক।

বহু বছর ধরে টাইটানিক নিয়ে গবেষণা করা পার্ক স্টিফেনসন জানান, তিনি প্রথম যখন স্ক্যানগুলো দেখেছিলেন, তখন বিস্মিত হয়েছিলেন।

তিনি বলেন, স্ক্যান করে তৈরি করা টাইটানিকের অবস্থা দেখে আপনি ধ্বংসাবশেষ সম্পর্কে সম্পূর্ণরূপে ধারণা পাবেন। নতুন এই স্ক্যানে বিভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে দেখতে পাবেন জাহাজটি। ধ্বংসাবশেষের একদম আসল অবস্থা দেখতে পাওয়া যাবে এখানে।

পার্ক স্টিফেনসন আরও বলেন, স্ক্যানগুলো রিসার্চ করে ১৯১২ সালের সেই ভয়ানক রাতে টাইটানিকের সঙ্গে কী ঘটেছিল, সে সম্পর্কে নতুন ধারণা পাওয়া যেতে পারে। আমরা সত্যিই হিমশৈলের সঙ্গে জাহাজের সংঘর্ষের ধারণাটি বুঝতে পারি না। জাহাজটি কীভাবে সমুদ্রের তলদেশে আঘাত হানে, সেটিও এখন গবেষণা করা যেতে পারে।

সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

নোটিশ : ডেইলি সিলেটে প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, আলোকচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও বিনা অনুমতিতে ব্যবহার করা বেআইনি -সম্পাদক

© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত

২০১১-২০১৭

সম্পাদকমন্ডলীর সভাপতি: মকিস মনসুর আহমদ
সম্পাদক ও প্রকাশক: খন্দকার আব্দুর রহিম, নির্বাহী সম্পাদক: মারুফ হাসান
অফিস: ৯/আই, ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি, ৯ম তলা, জিন্দাবাজার, সিলেট।
ফোন: ০৮২১-৭২৬৫২৭, মোবাইল: ০১৭১৭৬৮১২১৪
ই-মেইল: dailysylhet@gmail.com

Developed by: