সর্বশেষ আপডেট : ৭ ঘন্টা আগে
মঙ্গলবার, ২৮ মার্চ ২০২৩ খ্রীষ্টাব্দ | ১৪ চৈত্র ১৪২৯ বঙ্গাব্দ |

DAILYSYLHET
Fapperman.com DoEscorts

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তিতে বৈবাহিক অবস্থা লিখতে বাধ্য করা যাবে না: হাইকোর্ট

ডেইলি সিলেট ডেস্ক ::

বৃহস্পতিবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) বিচারপতি নাঈমা হায়দারের নেতৃত্বাধীন হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন। রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত দাশ গুপ্ত।

রাজশাহীতে ধর্ষণের শিকার এক নার্সকে রাজশাহী সরকারি নার্সিং কলেজে ভর্তি না নেয়ায় তিনি ২০১৩ সালে রিট দায়ের করেন। সেই রিটেরই চূড়ান্ত নিষ্পত্তি করে আজ রায় দেন হাইকোর্ট।

২০১৭ সালের ১৪ নভেম্বর একটি জাতীয় দৈনিকে ‘মেয়েটি এখন কী করবে?’ শীর্ষক এক প্রতিবেদন যুক্ত করে সেই বছরের ১১ ডিসেম্বর হাইকোর্টে একটি রিট করেন ফাহ্রিয়া ফেরদৌস ও নাহিদ সুলতানা জেনি।

ওই প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০১৩ সালের ৬ জুন দশম শ্রেণিতে পড়ার সময় ধর্ষণের শিকার হন মেয়েটি। ধর্ষকের সঙ্গে মেয়েটির বিয়ে দেওয়ার জন্য গ্রামের লোকজন চাপ দিতে থাকেন। স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদে এ নিয়ে সালিশও হয়। কিন্তু সেখানে অভিযুক্ত যুবক সবকিছু অস্বীকার করেন। সালিশ ভেঙে যায়। প্রতিপক্ষের হুমকির মুখে মেয়ের পরিবার মামলা করতে পারে না।

একপর্যায়ে সন্তানসম্ভবা হলে মেয়েটিকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) ভর্তি করা হয়। তখন ওসিসি থেকেই ধর্ষণ মামলা করা হয়। মামলার পর পুলিশ আসামিকে গ্রেপ্তার করে।

এরপর ওই যুবক, মেয়ে এবং তার সন্তানের ডিএনএ পরীক্ষা করা হয়। পরীক্ষায় প্রমাণ হয় ওই যুবকই শিশুটির বাবা। আদালতে মামলার বিচার শুরু হয়। আদালত ওই মেয়েটিকে ‘মহিলা সহায়তা কর্মসূচি’র রাজশাহী বিভাগীয় আবাসনকেন্দ্রে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

সেখানে থাকা অবস্থায় মেয়েটির এসএসসি পরীক্ষা শুরু হয়। পরীক্ষা চলাকালে ২০১৪ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে একটি পুত্রসন্তানের জন্ম দেন ওই তরুণী।

আবাসনকেন্দ্রে থাকতেই এসএসসি পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হয়। বিজ্ঞান বিভাগে জিপিএ-৪.১৯ পেয়ে তিনি এসএসসি পাস করেন। পরে সেখানে থেকেই এইচএসসি পরীক্ষাও অংশ নেন।

পরবর্তীতে ওসিসির আইনজীবী আশুরা খাতুন এবং জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতির রাজশাহী বিভাগীয় সমন্বয়কারী দিল সেতারার সহযোগিতায় মেয়েটিকে বাড়িতে রেখে আসা হয়। এরই মধ্যে পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হয়। এবারও জিপিএ-৩.১৭ পেয়ে উত্তীর্ণ হন তিনি।

পরে ২০১৪ সালের ৩০ মে আদালতের রায়ে ধর্ষকের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয়। আদালতের রায়ে সন্তানের দায়ভার বাবাকে নিতে বলা হয়েছে। সেই সঙ্গে বাবার ১ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়।

সন্তান হওয়ার কারণে বিবাহিত না হলেও তরুণীটিকে ফেলা হয়েছে বিবাহিত নারীর কাতারে। তিনি নার্সিং কলেজের ফরমই পূরণ করতে পারবেন না। বিয়ে না করলেও তার সন্তান রয়েছে। তাকে এখন বিবাহিত নারী হিসেবে গণ্য করা হচ্ছে। অথবা ফরমে তাকে স্বামী পরিত্যক্তা লিখতে হবে। যদিও মেয়েটি কোনো দলেই পড়েন না।

রাজশাহী সরকারি নার্সিং কলেজের অধ্যক্ষ মনিজ্জা খাতুন মেয়েটির অবস্থার কথা শুনে বলেন, নিয়ম অনুযায়ী ভর্তি পরীক্ষার ফরম পূরণ করার সময় অবশ্যই অবিবাহিত লিখতে হবে অথবা স্বামী পরিত্যক্তা লিখতে হবে। তাছাড়া সন্তান হওয়ার বিষয়টি পরীক্ষায় ধরা পড়বে। এই ক্ষেত্রে মেয়েটিকে স্বামী পরিত্যক্তা লিখতে হবে।

এ অবস্থায় রিটের পর হাইকোর্ট ২০১৭ সালের ১১ ডিসেম্বর রুল জারি করেন। রুলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তির ক্ষেত্রে বৈবাহিক অবস্থা জানতে চাওয়া কেন অসাংবিধানিক ঘোষণা করা হবে না এবং এ বিষয়ে একটি অর্থপূর্ণ নীতিমালা কেন করা হবে না তা জানতে চেয়েছেন। এছাড়াও মেয়েটিকে অবিলম্বে নার্সিং কলেজে ভর্তি করতে নির্দেশ দেন।

ওই রুলের চূড়ান্ত শুনানি শেষে আজ রায় ঘোষণা করলেন হাইকোর্ট।

সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ বিভাগের অন্যান্য খবর

নোটিশ : ডেইলি সিলেটে প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, আলোকচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও বিনা অনুমতিতে ব্যবহার করা বেআইনি -সম্পাদক

© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত

২০১১-২০১৭

সম্পাদকমন্ডলীর সভাপতি: মকিস মনসুর আহমদ
সম্পাদক ও প্রকাশক: খন্দকার আব্দুর রহিম, নির্বাহী সম্পাদক: মারুফ হাসান
অফিস: ৯/আই, ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি, ৯ম তলা, জিন্দাবাজার, সিলেট।
ফোন: ০৮২১-৭২৬৫২৭, মোবাইল: ০১৭১৭৬৮১২১৪
ই-মেইল: dailysylhet@gmail.com

Developed by: