সর্বশেষ আপডেট : ৭ ঘন্টা আগে
সোমবার, ২০ মার্চ ২০২৩ খ্রীষ্টাব্দ | ৬ চৈত্র ১৪২৯ বঙ্গাব্দ |

DAILYSYLHET
Fapperman.com DoEscorts

জাপানি শিশুদের বাবা ইমরানের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার আবেদন খারিজ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক ::

জাপানি দুই শিশু জেসমিন মালিকা ও লাইলা লিনার বাংলাদেশি বাবা ইমরান শরীফের বিরুদ্ধে শিশুদের মা নাকানো এরিকোর করা আদালত অবমাননার আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন আপিল বিভাগ।

বৃহস্পতিবার প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের ছয় সদস্যের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

এ সময় আপিল বিভাগের বিচারপতি নুরুজ্জামান বলেন, ‘এসব আবেদন করে সময় নষ্ট করবেন না।’

পরে আদালত এরিকো নাকানোর করা দুটি আবেদন খারিজ করে দেয় আদালত।

আদালতে আবেদনকারীর পক্ষে ছিলেন, আহসানুল করিম, আজমালুল হোসেন কিউসি ও শিশির মনির। অন্য দিকে ইমরান শরীফের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার আখতার ইমাম ও রাশনা ইমাম।

দুই কন্যাকে নিয়ে গ্রীষ্মের ছুটিতে জাপানে যাওয়া এবং সন্তান দুটির বাবা ইমরান শরীফের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগ খারিজ করে দেয় সর্বোচ্চ আদালত।

এর আগে ঢাকার পারিবারিক আদালতে করা মামলাটির (শিশুদের বাবার) নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত জাপান থেকে আসা দুই শিশু তাদের মা জাপানি নাগরিক নাকানো এরিকোর হেফাজতে থাকবে বলে আদেশ দিয়েছিলেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। আর পারিবারিক আদালতে থাকা মামলাটি তিন মাসের মধ্যে নিষ্পত্তি করতে সংশ্লিষ্ট আদালতকে নির্দেশ দিয়েছিলেন আপিল বিভাগ।

জাপান থেকে আসা দুই শিশু নিয়ে হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে তাদের মা নাকানো এরিকো করা আবেদন (লিভ টু আপিল) নিষ্পত্তি করে গত ১৩ ফেব্রুয়ারি প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বাধীন পাঁচ সদস্যের ভার্চুয়াল আপিল বিভাগের বেঞ্চ এই আদেশ দেন।

এর আগে শিশুদের মায়ের করা আবেদনের ওপর ৭ ফেব্রুয়ারি শুনানি শেষে আপিল বিভাগ ১৩ ফেব্রুয়ারি আদেশের জন্য দিন রাখেন। তারই ধারাবাহিকতায় ওইদিন বিষয়টি আদেশ দেন আদালত।

দুই শিশুকে তাদের বাবার হেফাজতে আটক রাখা বে-আইনি ঘোষণা করেন আপিল বিভাগ। আপিল বিভাগের এর আগের আদেশের পর দুই শিশু কূটনৈতিকপাড়ায় অবস্থিত একটি আবাসিক হোটেলে তাদের মায়ের সঙ্গে আছে। এখন ঢাকার পারিবারিক আদালতে থাকা মামলাটির নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত শিশুরা আগের মতোই মায়ের কাছে থাকবে বলে জানান মামলায় মায়ের পক্ষে থাকা জ্যেষ্ঠ আইনজীবী আহসানুল করিম।

ঘোষিত আদেশে আদালত বলেন, মামলার পারিপার্শ্বিকতা ও শিশুদের স্বার্থ বিবেচনায় শিশুদের এই আদালতের এখতিয়ারের বাইরে (দেশের বাইরে) নেওয়া যাবে না। ঢাকার পারিবারিক আদালতে ২০২১ সালে করা মামলাটি (শিশুদের বাবার) নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত দুই শিশু তাদের মায়ের হেফাজতে থাকবে।

আরও বলা হয়, আপিল বিভাগের আদেশের অনুলিপি পাওয়ার তিন মাসের মধ্যে সংশ্লিষ্ট পারিবারিক আদালতকে মামলাটি তিন মাসের মধ্যে নিষ্পত্তি করতে নির্দেশ দেওয়া হলো। হাইকোর্টের দেওয়া আদেশ বাতিল করা হলো। শিশুদের বাবা তাদের সঙ্গে দেখা করার সুযোগ পাবেন।

আদালতে ওইদিন শিশুদের বাবার পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী ফিদা এম কামাল, ফাওজিয়া করিম ফিরোজ ও ব্যারিস্টার অনীক আর হক। শিশুদের মায়ের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী ব্যারিস্টার আজমালুল হোসেন কিউসি, অ্যাডভোকেট আহসানুল করিম ও মোহাম্মদ শিশির মনির।

জাপানের নাগরিক নাকানো এরিকো ও বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ইমরান শরীফের ২০০৮ সালের ১১ জুলাই বিয়ে হয়। তাদের তিন মেয়ে রয়েছে। ২০২১ সালের ১৮ জানুয়ারি এরিকোর সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদের আবেদন করেন ইমরান। এরপর গত বছরের ২১ ফেব্রুয়ারি দুই মেয়েকে নিয়ে বাংলাদেশে চলে আসেন তিনি। ছোট মেয়ে জাপানে রয়েছে। তবে ইমরানের কাছ থেকে ১০ ও ১১ বছর বয়সী দুই মেয়েকে ফিরে পেতে ঢাকায় এসে গত ১৯ আগস্ট রিট করেন তার স্ত্রী নাকানো এরিকো। এতে দুই মেয়েকে বে-আইনিভাবে আটক রাখা হয়নি, তা নিশ্চিতে তাদের আদালতে হাজির করার নির্দেশনা চাওয়া হয়। অন্যদিকে, ছোট মেয়েকে ফিরে পেতে আরেকটি রিট করেন ইমরান।

নাকানো এরিকো ও ইমরানের পৃথক রিটের ওপর শুনানি নিয়ে দুই শিশু তাদের বাবা ইমরানের হেফাজতে থাকবে বলে গত ২১ নভেম্বর হাইকোর্ট আদেশ দেন। এই আদেশ স্থগিত চেয়ে আপিল বিভাগে আবেদন করেন এরিকো, যা চেম্বার জজ আদালত হয়ে আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে শুনানির জন্য ওঠে।

পরে আপিল বিভাগ দুই শিশুকে তাদের মায়ের কাছে রাখার আদেশ দেন। বাবা শিশুদের সঙ্গে নির্ধারিত সময়ে দেখা করতে পারবেন বলেও আদেশে বলা হয়। পাশাপাশি আবেদনকারীপক্ষকে (শিশুদের মা) নিয়মিত লিভ টু আপিলও দায়ের করতে বলা হয়। হাইকোর্টের পূর্ণাঙ্গ আদেশ প্রকাশের পর শিশুদের মা গত ২ ফেব্রুয়ারি নিয়মিত লিভ টু আপিল করেন। এর ওপর শুনানি শেষে এই আদেশ দেওয়া হয়।

জ্যেষ্ঠ আইনজীবী আহসানুল করিম বলেন, ‘দুই শিশুকে তাদের বাবার হেফাজতে আটক রাখা বেআইনি ঘোষণা করেছেন আপিল বিভাগ। আপিল বিভাগের এর আগের আদেশের পর দুই শিশু কূটনৈতিকপাড়ায় অবস্থিত একটি আবাসিক হোটেলে তাদের মায়ের সঙ্গে আছে। এখন ঢাকার পারিবারিক আদালতে থাকা মামলাটির নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত শিশুরা আগের মতোই মায়ের কাছে থাকবে।’

সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

নোটিশ : ডেইলি সিলেটে প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, আলোকচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও বিনা অনুমতিতে ব্যবহার করা বেআইনি -সম্পাদক

© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত

২০১১-২০১৭

সম্পাদকমন্ডলীর সভাপতি: মকিস মনসুর আহমদ
সম্পাদক ও প্রকাশক: খন্দকার আব্দুর রহিম, নির্বাহী সম্পাদক: মারুফ হাসান
অফিস: ৯/আই, ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি, ৯ম তলা, জিন্দাবাজার, সিলেট।
ফোন: ০৮২১-৭২৬৫২৭, মোবাইল: ০১৭১৭৬৮১২১৪
ই-মেইল: dailysylhet@gmail.com

Developed by: