সর্বশেষ আপডেট : ৮ ঘন্টা আগে
সোমবার, ২০ মার্চ ২০২৩ খ্রীষ্টাব্দ | ৬ চৈত্র ১৪২৯ বঙ্গাব্দ |

DAILYSYLHET
Fapperman.com DoEscorts

করোনাকালে দেশে বেড়েছে আত্মহত্যা, বছরে মৃত্যু ১৪ হাজার

“আত্মহ’ত্যা জীবনে সবচেয়ে বড় কাপুরুষতার পরিচয়”- উক্তিটি জগদ্বিখ্যাত নেপোলিয়ন বোনাপার্টের। ভা’রতবর্ষের মহান সাধক ফকির লালন সাঁই জীবনকে দেখেছেন আশ্চর্য এক সাধনার মঞ্চ হিসেবে। সেই জীবনের টানেই জীবনানন্দ দাশ কবিতার পঙক্তিতে ঢেলেছেন সুরিয়ালিস্টিক ভাবধারা। মনীষীরা মৃ’ত্যুকে তুচ্ছজ্ঞান করে জীবনকেই করেছেন মহিমান্বিত। তবে কেন এ আত্মহনন? কেন এ জীবনবিমুখতা? চিকিৎসাবিজ্ঞান আত্মহ’ত্যার চেষ্টাকে মানসিক অবসাদজনিত গুরুতর উপসর্গ হিসেবে দেখেন। বিশ্বের অনেক দেশ আত্মঘা’তকদের অ’প’রাধী হিসেবে চিহ্নিত করে। অথচ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার জ’রিপ বলছে, প্রতিবছর বিশ্বে যেসব কারণে মানুষের মৃ’ত্যু ঘটে এর মধ্যে আত্মহ’ত্যা ১৩তম প্রধান কারণ।

এইতো মাত্র বছর দুই আগের ঘটনা। ভা’রতের জনপ্রিয় টিভি ও চলচ্চিত্র অ’ভিনেতা, মডেল, ড্যান্সার সুশান্ত সিং রাজপুতের মৃ’ত্যু ঘিরে গোটা বলিউড কেঁপে উঠেছিল। এর ঝাঁকুনি এসে পড়েছিল বিশ্ব বিনোদন অঙ্গনে। তবে ৩৪ বছর বয়সী এ অ’ভিনেতা আদৌ আত্মহ’ত্যা করেছিলেন কি না, সেটি এখনো নিশ্চিত নয়। যদিও ২০২০ সালের ১৪ জুন মুম্বাইয়ের বান্দ্রার বাড়ি সুশান্তের ঝুলন্ত ম’রদেহ উ’দ্ধার করেছিল পু’লিশ।

সবশেষ গত বুধবার (২ ফেব্রুয়ারি) রাত ৯টার দিকে রাজধানীর ধানমন্ডি এলাকায় ফেসবুক লাইভে এসে নিজের মা’থায় গু’লি চালিয়ে আত্মহ’ত্যা করেন ব্যবসায়ী আবু মহসিন খান। তার আগে তিনি বেশ কিছুক্ষণ কথা বলেন। সেসময় জীবনের নানা হতাশা ও দুঃখের কথা তুলে ধরেন তিনি।

আবু মহসিন খান চিত্রনায়ক রিয়াজের শ্বশুর। তার এ আত্মহ’ত্যা হতবাক করেছে পুরো জাতিকে। সচেতন সমাজ কিছুতেই মেনে নিতে পারছে না এমন অনাকাঙ্ক্ষিত মৃ’ত্যু। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমও এ নিয়ে সরব। শুধু মহসিন খানই নন, দেশে প্রতিবছর প্রায় ১৪ হাজার মানুষ আত্মহ’ত্যার পথ বেছে নেন।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) আত্মহ’ত্যার এ প্রবণতা কমাতে কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। বিবিএস-এর হিসাব মতে, বর্তমানে দেশে প্রতি লাখে ৮ দশমিক শূণ্য ৫ শতাংশ মানুষ আত্মহ’ত্যা করছেন। এটাকে ২০৩০ সালের মধ্যে ২ দশমিক ৪ শতাংশে নামিয়ে আনতে সামাজিকভাবে নানা পদক্ষেপ নেওয়ার কথাও জানিয়েছে বিবিএস।

বিবিএস সূত্র জানায়, বর্তমানে (২০২০ সালের জ’রিপ) প্রতি লাখে ৮ দশমিক শূণ্য ৫ শতাংশ মানুষ আত্মহ’ত্যা করেন। সে সময়ে দেশের মোট জনসংখ্যা ধ’রা হয় ১৭ কোটি ১৬ লাখ। ২০২০ সালে সারাদেশে মোট ১৩ হাজার ৮১৪ জন মানুষ আত্মহ’ত্যা করেন। আত্মহ’ত্যার ক্ষেত্রে নারী-পুরুষের গড় প্রায় সমান।

২০১৯ সালে প্রতি লাখে আত্মহ’ত্যার হার ছিল ৭ দশমিক ৫৬ শতাংশ। তখন দেশের মোট জনসংখ্যা ধ’রা হয়েছিল ১৬ কোটি ৫৯ লাখ। সে হিসাবে ওই সময়ে দেশে মোট জনসংখ্যার ১২ হাজার ৯৫৮ জন মানুষ আত্মহ’ত্যা করেছিলেন। এতেই স্পষ্ট হয়, দেশে আত্মহ’ত্যার হার বাড়ছে।

২০১৫ সালে প্রতি লাখে ৭ দশমিক ৬৮, ২০১৬ সালে ৭ দশমিক ৮৪, ২০১৭ সালে ৩ দশমিক ৭৯ ও ২০১৮ সালে ৭ দশমিক ৬৮ শতাংশ মানুষ আত্মহ’ত্যা করেছিলেন। ২০১৫ সাল থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত প্রতি লাখে আত্মহ’ত্যার হার ৭ শতাংশের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকলেও এটা এখন ৮ শতাংশের ওপরে চলে এসেছে।

বিবিএস সূত্র জানায়, ২০২১ সালের প্রথম ১০ মাসে দেশে মোট মৃ’ত্যুর কিছু কারণ খুঁজে বের করে বিবিএস। ১০ মাসে যখন করো’নাভাই’রাসের সংক্রমণে ৫ হাজার ২০০ মানুষের মৃ’ত্যু হয়েছে, তখন ১১ হাজারের বেশি মানুষ আত্মহ’ত্যা করেছেন। মহামা’রির এ সময়ে দেশে শুধু হার্ট-অ্যাটাক, হার্ট-ফেইলিওর ও হৃদরোগে প্রায় ১ লাখ ৮০ হাজার মানুষের মৃ’ত্যুর তথ্য পাওয়া গেছে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, প্রতিবছর বিশ্বে ৮ লাখ লোক আত্মহ’ত্যা করেন। মৃ’ত্যুর হার প্রতি লাখে ১৬ জন। ২০১৪ সালে জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইন্সটিটিউটের এক গবেষণায় বলা হয়, বাংলাদেশে গড়ে প্রতিদিন ২৮ জন মানুষ আত্মহ’ত্যা করেন৷ আর পু’লিশ সদর দপ্তরের হিসাবে, বছরে গড়ে ১০ হাজার মানুষ ফাঁ’সিতে ঝুলে ও বিষপান করে আত্মহ’ত্যা করেন৷ এর বাইরে ঘুমের ওষুধ সেবন, ছাদ কিংবা উঁচু স্থান থেকে লাফিয়ে পড়া কিংবা রেললাইনে ঝাঁপ দেওয়ার মতো ঘটনাগুলোও বিরল নয়।

‘বাংলাদেশ স্যাম্পল ভাইটাল স্ট্যাটিসটিকস-২০২০’ জ’রিপে মানুষের মৃ’ত্যুর কারণগুলো খুঁজে বের করেছে বিবিএস।

বয়স্ক মানুষ হার্ট অ্যাটাকে বেশি মা’রা যাচ্ছে, বাড়ছে আত্মহ’ত্যাও: ৬০ বছর বয়সী মানুষের মৃ’ত্যুহার হিসাব করলে হার্ট অ্যাটাক প্রথমে। মোট মৃ’ত্যুর ২৩ দশমিক ৮ শতাংশই হার্ট অ্যাটাকে মা’রা যান। এর পরে রয়েছে ব্রেন স্ট্রোক ১১ দশমিক ৫, শ্বা’সক’ষ্টজনিত রোগে ১১, হার্ট ডিজিস ৬, অ্যাজমা ৫ দশমিক ২, হাই ব্লাড প্রেশার ৩ দশমিক ৭, ডায়াবেটিস ৩ দশমিক ৩, কিডনি রোগে ২ দশমিক ৯, লিভা’র ক্যানসার ২ দশমিক ৮, প্যারালাইসিসে ২ দশমিক ২, ব্লাড ক্যান্সারে ১ দশমিক ৯, নিউমোনিয়া ১ দশমিক ৫ ও স্টমাক ক্যান্সারে ১ শতাংশ মানুষ মা’রা যান। এসব রোগের বাইরে অন্য কারণে দেশের দশমিক ২ শতাংশ মানুষের মৃ’ত্যু হয়।

অ’পরাপর কারণের মধ্যে আত্মহ’ত্যা, খু’ন, সা’পের কা’মড়, সড়ক দুর্ঘ’টনা ও অ’গ্নিদ’গ্ধ হয়ে মৃ’ত্যু অন্যতম। বিবিএস মানুষের মৃ’ত্যুর ১০০টি কারণ উল্লেখ করেছে। এর মধ্যে অন্যতম আত্মহ’ত্যা। সামনে বাংলাদেশ স্যাম্পল ভাইটাল স্ট্যাটিসটিকস জ’রিপের মাধ্যমে পৃথকভাবে আত্মহ’ত্যা নিয়ে রিপোর্ট প্রকাশ করবে সংস্থাটি। এখন পু’লিশের কাছ থেকে তথ্য সংগ্রহ করে বিবিএস এসডিজি ট্র্যাকারে আত্মহ’ত্যার রিপোর্ট ইনপুট দিয়ে থাকে। সামনে এ নিয়ে পৃথকভাবে কাজ করার পরিকল্পনা সংস্থাটির।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর এসডিজি ফোকাল পয়েন্ট আলমগীর হোসেন বলেন, বর্তমানে নানা কারণে আত্মহ’ত্যার প্রবণতা বেড়েছে। এর হার প্রতি লাখে ৮ দশমিক শূণ্য ৫ শতাংশ। এটি আম’রা ২০২৫ সালে ৩ দশমিক ৫ ও ২০৩০ সালে ২ দশমিক ৮ শতাংশে নামিয়ে আনার চ্যালেঞ্জ নিয়েছি। তবে এটা কারোর একার পক্ষে সম্ভব নয়, সমাজের সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। এর জন্য মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর জো’র দিতে হবে। জনস্বাস্থ্যে মানসিক স্বাস্থ্যখাতকে গুরুত্ব দিতে হবে। বিবিএস ভবিষ্যতে আত্মহ’ত্যা জ’রিপ প্রকাশ করবে বাংলাদেশ স্যাম্পল ভাইটাল স্ট্যাটিসটিকসের আওতায়।

জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, মানুষের আত্মহ’ত্যার নানামাত্রিক কারণ থাকে। জীবনকে অ’প্রয়োজনীয় মনে করা, বেঁচে থাকা অর্থহীন, বেঁচে থেকে কী’ লাভ, বেঁচে থাকার কারণ নেই, ইশ- যদি আমা’র জন্ম না হতো, এ জীবন নিয়ে বেঁচে থেকে কী’ লাভ, তোমাকে ছাড়া আমা’র জীবন অর্থহীন- এসব নেতিবাচক ভাব-ভাবনা মানুষকে আত্মহননের পথে তাড়িত করে।

মানসিক রোগ বিশেষজ্ঞ ও জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের ফেলো ডা. নাঈম আকতার আব্বাসী জাগো নিউজকে বলেন, যারা আত্মহ’ত্যা করেন তারা সামাজিক ও মানসিকভাবে অ’তিরিক্ত বিষণ্ণতায় ভুগেন। আত্মহননকারী ব্যক্তি নিজেকে পৃথিবীতে অর্থহীন মনে করেন। ব্যবসায়ী মহসিন সাহেবের মৃ’ত্যুটা খুবই হৃদয়বিদারক। এটা মনে করলেই ক’ষ্ট হচ্ছে। উনি কিন্তু বাঁচতে চেয়েছিলেন, পারেননি। এটা নানা কারণে হতে পারে।

আত্মহ’ত্যার কারণ:
জেনেটিক: আত্মহ’ত্যার প্রবণতার অন্যতম কারণ জেনেটিক (বংশানুক্রমিক) কারণ। আত্মহ’ত্যার প্রায় ৫০ শতাংশ ক্ষেত্রেই জিন দায়ী। ফলে কোনো পরিবারে একজন আত্মহ’ত্যা করলে এর প্রভাব অন্য সদস্যদের ওপরও পড়ে।

হঠকারিতা বা ইমপালসিভিটি: আত্মহ’ত্যার অন্যতম কারণ হঠকারিতাও। মানসিক রোগ না থাকার পরও হঠাৎ করেই অনেকে আত্মহ’ত্যা করে বসেন। ধ’র্ষিত হওয়ার পরপরই আত্মহ’ত্যা, দাম্পত্য কলহে আত্মহ’ত্যা, পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশের সঙ্গে সঙ্গে আত্মহ’ত্যা, প্রে’মে প্রত্যাখ্যাত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আত্মহ’ত্যা, প্রিয়জনের মৃ’ত্যুসংবাদে আত্মহ’ত্যা ইত্যাদি যার মধ্যে অন্যতম।

মানসিক রোগ: আত্মহ’ত্যার জন্য অন্যতম কারণ মানসিক রোগ। বিষণ্ণতা, ম্যানিক-ডিপ্রেসিভ, সিজোফ্রেনিয়া, পারসোনালিটি ডিসঅর্ডার ও লাভ অবসেশন এর মধ্যে অন্যতম।

প্রত্যাশার মানসিক চাপ: কারও কারও প্রত্যাশা অনেক বেশি। পাশাপাশি পরশ্রীকাতরতাও আছে। কেউ যদি নিজে ব্যর্থ হন এবং পাশাপাশি কাছের কেউ সফল হন তবে সেই গ্লানিবোধ থেকে আত্মহ’ত্যার পথ বেছে নেন। অনেকসময় আম’রা নিজেরাই নিজেদের ওপর প্রত্যাশার চাপ বাড়িয়ে দিই।

পারিবারিক কলহ: দাম্পত্য কলহের কারণে অনেকসময় স্বামী বা স্ত্রী’ আত্মহ’ত্যা করে বসেন। অনেক সময় সন্তানরা বাবা-মায়ের নিত্যকলহের যন্ত্র’ণা সহ্য করতে না পেরে এ পথে পা বাড়ান।

দারিদ্র্য: বিশেষত, আমাদের উপমহাদেশে আত্মহ’ত্যার অন্যতম কারণ দারিদ্র্য। অনেকে বেশিরভাগ সময় ঋণগ্রস্ত থাকেন। সেটা তার মা’থার ওপর বাড়তি চাপ তৈরি করে। ব্যক্তি তখন চাইলেই ফুরফুরে মুডে থাকতে পারে না। ঋণ পরিশোধ না করতে পেরে তখন বেছে নেন আত্মহ’ত্যার পথ।

অ’পরিক’ল্পিত নারীর ক্ষমতায়ন: নারীর ক্ষমতায়নে সরকার এবং বেসরকারি এনজিও ও উদ্যোক্তাদের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় নারীদের আজ ঘরের বাইরে নানা ক্ষেত্রে সরব উপস্থিতি। শিল্প কলকারখানা থেকে শুরু করে শিক্ষা-দীক্ষা এমনকি সাম’রিক বাহিনীতেও নারীদের জয়জয়কার। কিন্তু নারী ক্ষমতায়নের অ’ত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অংশ ঘরের বাইরে নারীর নিরাপত্তার বিষয়টি যথেষ্ট গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। ফলে কর্মক্ষেত্রে যাওয়ার পথে ইভটিজিং বা শ্লীলতাহানি বা যৌ’ন নি’র্যা’তনের শিকার হয়ে অনেককেই আত্মাহুতি দিতে বাধ্য হন।

রাত জাগার বদভ্যাস: মানসিক রোগে ভুগে আত্মহ’ত্যা করেছেন, তাদের বেশিরভাগেরই অন্যতম উপসর্গ রাতে ঠিকমতো ঘুম না হওয়া।

মা’দকাসক্তি: ম’দ্যপায়ীদের মধ্যে আত্মহ’ত্যার হার বেশি। হিরোইনসেবীদের আত্মহ’ত্যার হার সাধারণ মানুষের তুলনায় প্রায় ১৪ গুণ বেশি। ইয়াবা সেবনেও আত্মহ’ত্যার ঝুঁ’কি বাড়ে।

জুয়া খেলা: জুয়াড়িদের মধ্যে আত্মহ’ত্যার প্রবণতা বেশি। অনেক জুয়াড়ি সবকিছু বিক্রি করে সর্বস্বান্ত হন। এর পরে আত্মহ’ত্যার পথ বেছে নেন মূলত ঋণের কারণে। এদের ঘরের স্ত্রী’দের আত্মহ’ত্যার হার সাধারণ মানুষের তুলনায় প্রায় তিনগুণ বেশি।

দীর্ঘমেয়াদি পীড়াদায়ক রোগ: দীর্ঘমেয়াদি ব্যথা, ক্যানসার, কিডনি নষ্ট হওয়া, অনিদ্রা (ইনসোমনিয়া), হাঁপানি ইত্যাদি দীর্ঘমেয়াদি, ক’ষ্টদায়ক ও ব্যয়বহুল রোগের রোগীদের মধ্যে আত্মহ’ত্যার প্রবণতা বেশি দেখা যায়। কোনো ব্যক্তির ক্যানসার ডায়াগনোসিস হলে তার আত্মহ’ত্যার সম্ভাবনা প্রায় দ্বিগুণ বেড়ে যায়।

লাভ অবসেশন: অনেক প্রে’ম ‘লাভ অবসেশন’ নামে মানসিক রোগের জন্ম দেয়। ফলে এ রোগে আ’ক্রান্ত ব্যক্তি ভালোবাসার মানুষের সামান্যতম অবহেলাও সহ্য করতে পারেন না। প্রে’মে ব্যর্থ হয়ে তিনি মানসিক রোগাক্রান্ত হয়ে যাওয়ায় ভালোবাসার মানুষটিকে ফিরে পেতে কিংবা তার বিরহে আত্মহ’ত্যার পথ ধরেন।

আত্মহ’ত্যার লক্ষণ
নিজেকে অন্যের জন্য বোঝা মনে করা বা সীমাহীন ক’ষ্টের কথা প্রকাশ করতে না পারাও আত্মহ’ত্যার অন্যতম লক্ষণ। এছাড়া হঠাৎ করেই নিজের সব জিনিস অন্যদের দিয়ে দেওয়া, মৃ’ত্যু বিষয়ে নানা চিন্তা-ভাবনার কথা প্রকাশ করা, আত্মহ’ত্যা সংক্রান্ত বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ করা, মনের বিক্ষিপ্ততা দৃশ্যমান হওয়া যেমন- একটুতেই উত্তেজিত হওয়া, প্রতিশোধ নেওয়ার কথা বলা, অকারণে কেঁদে ফেলা, নিজেকে গুটিয়ে রাখা, অস্বাভাবিক শান্ত হয়ে যাওয়া- এসব লক্ষণেও বুঝতে হবে ওই ব্যক্তি হয়তো আত্মহ’ত্যার পরিকল্পনা করেছেন।

এমন লক্ষণ দেখতে পাওয়া মানুষের পাশে সমাজ ও পরিবারকে সবসময় থাকতে হবে বলে জানাচ্ছে জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট। সরকারি এ প্রতিষ্ঠানে চিকিৎসা নিয়ে অনেক মানসিক রোগী এখন সুস্থ ও স্বাভাবিক জীবনযাপনে ফিরেছেন বলে দাবি ইনস্টিটিউটের।

মানসিক রোগ বিশেষজ্ঞ ডা. নাঈম আকতার আব্বাসী  বলেন, রাজধানীর কাঁঠালবাগান এলাকার এক শিক্ষার্থী প্রে’মে ব্যর্থ হয়ে ভেঙে পড়েছিলেন। কয়েকবার আত্মহ’ত্যা করতে গিয়েও ব্যর্থ হন। এরপর আমাদের কাছে চিকিৎসা নিয়ে এখন তিনি সুস্থ এবং একটি বেসরকারি ব্যাংকে চাকুরিও করছেন। ফলে আমা’র পরাম’র্শ- আত্মহ’ত্যা কোনো সমাধান নয়। জীবনকে ভালোবাসতে হবে।

সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

নোটিশ : ডেইলি সিলেটে প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, আলোকচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও বিনা অনুমতিতে ব্যবহার করা বেআইনি -সম্পাদক

© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত

২০১১-২০১৭

সম্পাদকমন্ডলীর সভাপতি: মকিস মনসুর আহমদ
সম্পাদক ও প্রকাশক: খন্দকার আব্দুর রহিম, নির্বাহী সম্পাদক: মারুফ হাসান
অফিস: ৯/আই, ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি, ৯ম তলা, জিন্দাবাজার, সিলেট।
ফোন: ০৮২১-৭২৬৫২৭, মোবাইল: ০১৭১৭৬৮১২১৪
ই-মেইল: dailysylhet@gmail.com

Developed by: