সর্বশেষ আপডেট : ২ ঘন্টা আগে
মঙ্গলবার, ৬ জুন ২০২৩ খ্রীষ্টাব্দ | ২৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩০ বঙ্গাব্দ |

DAILYSYLHET
Fapperman.com DoEscorts

১৮ দিন ধরে ‘ঘরবন্দি’ শাবি উপাচার্য

বাসার ফট’কের সামনে শিক্ষার্থীদের অবস্থান নেই, ব্যারিকেড নেই, ক্যাম্পাসে বড় কোনো বিক্ষোভও নেই এখন- তবু ঘর থেকে বের হচ্ছেন না সিলেটের শাহ’জালাল বিজ্ঞান ও প্রযু’ক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ। ১৮ দিন ধরেই ঘরব’ন্দি আছেন তিনি।

উপাচার্যকে গত ১৬ জানুয়ারি অব’রুদ্ধ করেছিলেন শিক্ষার্থীরা। ওই দিন সন্ধ্যায় পু’লিশ শিক্ষার্থীদের লা’ঠিপে’টা করে উপাচার্যকে মুক্ত করে নিজ বাসভবনে নিয়ে যায়। এরপর থেকে আর বাসা থেকে বের হননি উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন।

এর মধ্যে টানা নয় দিন উপাচার্যের পদত্যাগ দাবিতে তার বাসার সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থীরা। বাসার সামনে অনশনেও বসেন আন্দোলনকারী কয়েকজন। এ সময় এক দিনের জন্য তার (উপাচার্য) বাসার বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়াসহ বাসার ভেতরে, বাইরে থেকে কারও প্রবেশ বন্ধ করে দেন শিক্ষার্থীরা।

তবে ২৬ জানুয়ারি সকালে অনশন ভাঙার পর উপাচার্যের বাসার সামনের অবস্থান তুলে নেন শিক্ষার্থীরা। ওই দিন সন্ধ্যায় উপাচার্যের বাসার ফট’কের সামনে থেকে ব্যারিকেডও তুলে নেয়া হয়। এরপর পেরিয়ে গেছে আরও ৬ দিন। তবে এখন পর্যন্ত বাসা থেকে বের হননি উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন।

তবে ক্যাম্পাসে না এলে বাসায় থেকেই উপাচার্য দাপ্তরিক কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন বলে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মক’র্তারা জানিয়েছেন। আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা বলছেন, এই উপাচার্যকে ক্যাম্পাসে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেছেন তারা। পদত্যাগ করার আগে তিনি ক্যাম্পাসে এলে শিক্ষার্থীদের ক্ষোভ আরও বেড়ে যেতে পারে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের সব প্রশাসনিক ও অ্যাকাডেমিক ভবনে ১৭ জানুয়ারি তালা ঝুলিয়ে দিয়েছিলেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। ওই দিন থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। তবে শিক্ষার্থীদের অনশন ভাঙার পর দিন ২৭ জানুয়ারি থেকে শুরু হয় প্রশাসনিক কার্যক্রম।

মঙ্গলবার শাহ’জালাল বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শ্রেণি কার্যক্রম বন্ধ থাকলেও প্রশাসনিক কার্যক্রম চলছে। অফিস করছেন প্রশাসনের কর্মক’র্তা ও কর্মচারীরা। উপাচার্যের কার্যালয়ের কর্মক’র্তা-কর্মচারীরাও কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। তবে নিজ দপ্তরে আসেননি উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন আহমেদ।

উপাচার্যের বাসার সামনে গিয়ে দেখা যায়, বাসার ফট’কটি তালাবদ্ধ। ভেতরে কয়েকজন পু’লিশ সদস্য রয়েছেন। এই ফট’কের সামনের সড়কে রং-তুলি দিয়ে ‘মৃ’ত্যু অথবা মুক্তি’ লিখে রেখেছেন শিক্ষার্থীরা।

এ ব্যাপারে উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।

উপাচার্য কার্যালয়ে না আসা প্রসঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মো. ইশফাকুল হোসেন বলেন, ‘উপাচার্য মহোদয় নিজ বাসায় আছেন। বাসায় বসেই তিনি দাপ্তরিক কাজ করছেন। জরুরি ফাইলগুলো আম’রা তার বাসায় পাঠিয়ে দিচ্ছি।’

অনশন তুলে নিলেও উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন অব্যাহত রেখেছেন শিক্ষার্থীরা। গান, আলোকচিত্র প্রদর্শনী, রোড পেইন্টিং, মুক্ত আলোচনার মাধ্যমে কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছেন তারা। সোমবার ক্যাম্পাসে তারা ‘আলোকচিত্রে এক দফা’ নামে আলোকচিত্র প্রদর্শনীর আয়োজন করেন। যা মঙ্গলবার পর্যন্ত অব্যাহত রয়েছে।

আ’ন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের মুখপাত্র মোহাইমিনুল বাশার রাজ বলেন, ‘উপাচার্যের পদত্যাগের আগ পর্যন্ত আম’রা আন্দোলন চালিয়ে যাব।’

তিনি বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের ওপর হা’মলা ও গু’লি ছোড়ার পরই এই উপাচার্যকে আম’রা ক্যাম্পাসে অবাঞ্ছিত করেছি। কোনো শিক্ষার্থীই তাকে ক্যাম্পাসে দেখতে চায় না। আমাদের এক দফা দাবি দ্রুত মেনে নেয়া হবে এই আশ্বা’সে আম’রা অনশন ভেঙেছি। আশা করছি আমাদের দাবি মেনে উপাচার্য দ্রুতই পদত্যাগ করবেন।’

গত ১৩ জানুয়ারি রাতে বেগম সিরাজুন্নেছা চৌধুরী ছা’ত্রী হলের অব্যবস্থাপনা দূর ও ওই হলের প্রাধ্যক্ষ জাফরিন আহমেদ লিজার পদত্যাগ দাবিতে আন্দোলনে নামেন ছা’ত্রীরা। এই দাবিতে আন্দোলন চলাকালে গত ১৬ জানুয়ারি উপাচার্যকে অব’রুদ্ধ করেন আন্দোলনকারীরা। ওই দিন সন্ধ্যায় পু’লিশ শিক্ষার্থীদের ওপর লা’ঠিচার্জ করলে দুই পক্ষে সং’ঘর্ষ বাধে। এরপর রাবার বুলেট এবং সাউন্ড গ্রেনেড ছুড়ে শিক্ষার্থীদের ছত্রভঙ্গ করে উপাচার্যকে মুক্ত করে বাসায় নিয়ে যায়।

রাতে নিজ বাসায় জরুরি সিন্ডিকেট সভা ডেকে বিশ্ববিদ্যালয় অনির্দিষ্ট’কালের জন্য বন্ধ ঘোষণা ও পরদিন দুপুর ১২টার মধ্যে হল ছাড়ার নির্দেশ দেন উপাচার্য। তবে শিক্ষার্থীরা ওই সিদ্ধান্ত না মেনে ওই রাত থেকেই উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে আ’ন্দোলনে নামেন। পরদিন থেকে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে টানা অবস্থান নেন তারা। সেখানে অনশনও শুরু করেন ২৯ শিক্ষার্থী। ২০ জানুয়ারি উপাচার্য ভবনের ফট’কে ব্যারিকেড দিয়ে বাইরের কারও প্রবেশ বন্ধ করে দেন শিক্ষার্থীরা।

গত ২৬ জানুয়ারি সকালে অধ্যাপক ড. মুহম্ম’দ জাফর ইকবালের আশ্বা’সে শিক্ষার্থীরা অনশন ভেঙে উপাচার্য ভবনের ফট’কের ব্যারিকেড তুলে নেন।

সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ বিভাগের অন্যান্য খবর

নোটিশ : ডেইলি সিলেটে প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, আলোকচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও বিনা অনুমতিতে ব্যবহার করা বেআইনি -সম্পাদক

© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত

২০১১-২০১৭

সম্পাদকমন্ডলীর সভাপতি: মকিস মনসুর আহমদ
সম্পাদক ও প্রকাশক: খন্দকার আব্দুর রহিম, নির্বাহী সম্পাদক: মারুফ হাসান
অফিস: ৯/আই, ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি, ৯ম তলা, জিন্দাবাজার, সিলেট।
ফোন: ০৮২১-৭২৬৫২৭, মোবাইল: ০১৭১৭৬৮১২১৪
ই-মেইল: dailysylhet@gmail.com

Developed by: