সর্বশেষ আপডেট : ১৫ ঘন্টা আগে
শুক্রবার, ২ জুন ২০২৩ খ্রীষ্টাব্দ | ১৯ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩০ বঙ্গাব্দ |

DAILYSYLHET
Fapperman.com DoEscorts

আকাশপথের ভাড়া নিয়েও অরাজকতা

মধ্যপ্রাচ্যের সব রুটে আকাশপথের ভাড়া নিয়ে চলছে অরাজকতা। কোনো কারণ ছাড়া বিমান সংস্থাগুলো হঠাৎ এসব রুটে ভাড়া হাকাচ্ছে দ্বিগুণের বেশি। কোথাও ৩-৪ গুণ ভাড়া গুনতে হচ্ছে যাত্রীদের। মা’র্চ পর্যন্ত সৌদি আরবের টিকিট নেই ট্রাভেল এজেন্টগুলোর কাছে।

সরাসরি এয়ারলাইন্সগুলোতে এ রুটের ভাড়া দিতে হয় ২-৩ গুণ বেশি। ৪০ হাজার টাকা ঢাকা-রিয়াদ রুটে বিমান ভাড়া এখন ৬৫ হাজার থেকে ১ লাখ টাকা। তাও মিলছে না।

৪৫ হাজার টাকার ঢাকা দুবাইয়ের রিটার্ন ভাড়া এখন ৯০ হাজার থেকে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা। বাহরাইন, কুয়েত, কাতার ও আমিরাতসহ মধ্যপ্রাচ্যের সব রুটের ভাড়া নিয়ে এভাবে চলছে অরাজকতা।

ভাড়া কমানোর জন্য সম্প্রতি আটাব (অ্যাসোসিয়েশন অব ট্রাভেল এজেন্ট অব বাংলাদেশ) ও বায়রা (বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্টারন্যাশনাল রিক্রুটিং এজেন্সি) নেতারা বসেছেন। সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও বেসাম’রিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত অ’ভিযোগ দিয়েছেন। কিন্তু কোনো ফল পায়নি।

এ অবস্থায় মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে বাংলাদেশি কর্মীদের জন্য বিমান ভাড়া কমাতে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কা’মনা করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আবদুল মোমেন। সম্প্রতি তিনি ঢাকার এক অনুষ্ঠানে একথা জানান। ভাড়া নিয়ে অরাজকতা বন্ধে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় একাধিকবার বেসাম’রিক বিমান পরিবহণ ও পর্যটন মন্ত্রণালয়কে চিঠি দিলেও কাজ হয়নি।

বেবিচক চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মা’র্শল এম মফিদুর রহমান বলেছেন, এভাবে কোনো কারণ ছাড়া আকাশপথের ভাড়া বৃদ্ধির ঘটনা দুঃখজনক।

তিনি বলেন, কমা’র্শিয়াল ইস্যুতে বেবিচকের হস্তক্ষেপ করার তেমন সুযোগ নেই। তারপরও আম’রা এয়ারলাইন্সগুলোকে ডেকে ভাড়া কমানোর নির্দেশ দিয়েছি। কারণ ভা’রত, নেপাল, পা’কিস্তানসহ আশপাশের কোনো দেশের বিমান ভাড়া বাড়েনি।

শুধু ঢাকা থেকে কেন এত ভাড়া বাড়বে? কিন্তু এমন যু’ক্তি দেখিয়ে কৈফিয়ত চাওয়ার পরও তারা কোনো সায় দেয়নি। উলটো এয়ারলাইন্সগুলো ব্যাখ্যা দিয়ে বলেছে, বিমান গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিংয়ের চার্জ বাড়িয়েছে, তাই ভাড়া বেড়েছে।

সংশ্লিষ্টরা বলেছেন, শুধু মধ্যপ্রাচ্য নয়, ইউরোপের রুটগুলোতেও ভাড়া নিয়ে চলছে অরাজকতা। ঢাকা থেকে দুবাই হয়ে কানাডায় যেতে আগে ভাড়া ছিল ৭০ হাজার টাকা।

বিদেশি টার্কিস এয়ারলাইন্স এখন ভাড়া নিচ্ছে ১ লাখ ৫০ হাজার টাকার বেশি। দুবাই যেতে কাতার এয়ারওয়েজের কাছে গুনতে হচ্ছে ১ লাখ ৫২ হাজার টাকার বেশি অর্থ। যতই ঘণ্টা পেরুচ্ছে ততই দম বাড়ছে টিকিটের। অথচ সপ্তাহ খানেক আগে একই টিকিটের দাম ছিল ৬৫ হাজার টাকা।

এই অবস্থায় সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছেন মধ্যপ্রাচ্যগামী শ্রমিক ও ওম’রাহ যাত্রীরা। বাংলাদেশ বিমান আর সৌদি এয়ারলাইন্সের এ রুটের টিকিট উধাও হয়ে গেছে অনেক আগে। মা’র্চ পর্যন্ত এ দুটি বিমান সংস্থার ঢাকা-জেদ্দা রুটের টিকিট মিলছে না।

ভুক্তভোগীরা মনে করছেন, প্রতি বছর এ সময়ে একটি সিন্ডিকেট কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে বিমানের ভাড়া বাড়ায়। এভাবে হাতিয়ে নেয় শত শত কোটি টাকা।

বিমান ভাড়া বাড়ানোর প্রতিবাদে গত সপ্তাহে রিক্রুটিং এজেন্সিগুলো মানববন্ধন ও সংবাদ সম্মেলন করে সরকারের কাছে প্রতিকার চেয়েছে। বেসাম’রিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ এ ঘটনায় জরুরি অনলাইন বৈঠকও হয়েছে। বেসাম’রিক বিমান চলাচল ও পর্যটন মন্ত্রণালয় জানিয়েছে ভাড়া কমানোর দায়িত্ব সরকারের নয়। এটি এ খাতের ব্যবসায়ীরাই ঠিক করবেন।

জানা গেছে, বিদেশি এয়ারলাইন্সগুলো পার্শ্ববর্তী দেশ ভা’রত ও নেপালের চেয়ে প্রায় দুই থেকে তিনগুণ ভাড়া বেশি নিচ্ছে ঢাকার যাত্রীদের কাছ থেকে। কলকাতা থেকে দুবাই যেতে একজন যাত্রীকে ওয়ানওয়ে বিমান ভাড়া দিতে হয় ১৮ থেকে ২০ হাজার টাকা।

সেখানে ঢাকা থেকে বিমান ভাড়া গুনতে হচ্ছে ৬৫ থেকে ৭৫ হাজার টাকা। আবার নেপাল থেকে দুবাই যেতে লাগে ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকা। সেই একই রুটে বাংলাদেশিদের কাছ থেকে আদায় করছে তিনগুণ বেশি।

যাত্রীরা বলেছেন-বাংলাদেশ বিমান, এমিরেটস, কাতার, টার্কিশ, ফ্লাই দুবাইসহ সব এয়ারলাইন্সের ভাড়া আকাশচুম্বী। এ অস্বাভাবিক ভাড়ায় দিশেহারা প্রবাসীকর্মীরা। তারা বছরে যে পরিমাণ রেমিট্যান্স দেশে পাঠান তার একটি বড় অংশ লুটে নিয়ে যাচ্ছে এয়ারলাইন্সগুলো

আটাব নেতা শাহাদাত হোসেন তসলিম বলেন, টিকিটের দাম বৃদ্ধি ও বুকিং পদ্ধতিতে আরও স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা দরকার।

এয়ারলাইন্সগুলোকে একটা সুনির্দিষ্ট নীতিমালায় ভাড়া নির্ধারণ করে যাত্রীদের স্বার্থটা দেখতে হবে সবার আগে। এপ্রিল থেকেই আকাশপথের ভাড়ায় অস্বাভাবিক অবস্থা বিরাজ করছে।

ভাড়া বৃদ্ধির অস্বাভাবিকতা দূর করতে কিছু সুপারিশ করেছে আটাব ও বায়রা। বিশেষ করে মধ্যপ্রাচ্যের যাত্রীদের ফিরতি টিকিটের স্বার্থে বিমান, সাউদিয়া ও অন্যান্য এয়ারলাইন্সের ভাড়া বৃদ্ধি না করে আগের মতো বহাল রাখার প্রস্তাব করা হয়।

প্রয়োজনে ভাড়ার সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন মাত্রা নির্ধারণ করে দেওয়া ব্যবসায়িক দায়বদ্ধতা। এটা অমান্য করার কোনো সুযোগ নেই। বিমান ও সাউদিয়ার ফ্লাইট সংখ্যা বাড়ানো এবং জেদ্দা ও রিয়াদ ছাড়া অন্য গন্তব্যের যাত্রীদের টিকিট রি-রুট করার দাবি জানান তারা।

সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

নোটিশ : ডেইলি সিলেটে প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, আলোকচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও বিনা অনুমতিতে ব্যবহার করা বেআইনি -সম্পাদক

© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত

২০১১-২০১৭

সম্পাদকমন্ডলীর সভাপতি: মকিস মনসুর আহমদ
সম্পাদক ও প্রকাশক: খন্দকার আব্দুর রহিম, নির্বাহী সম্পাদক: মারুফ হাসান
অফিস: ৯/আই, ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি, ৯ম তলা, জিন্দাবাজার, সিলেট।
ফোন: ০৮২১-৭২৬৫২৭, মোবাইল: ০১৭১৭৬৮১২১৪
ই-মেইল: dailysylhet@gmail.com

Developed by: