cialis fiyat cialis sipariş http://umraniyetip.org/
Fapperman.com DoEscortscialis viagra viagra cialis cialis viagra cialis20mgsite.com geciktirici sprey azdırıcı damla
স্বাধীনতা যুদ্ধে ব্যবহৃত পতাকার আদলেই এসেছিল বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা। স্বাধীনতা যুদ্ধে ব্যবহৃত পতাকার লাল বৃত্তের মাঝে ছিল বাংলাদেশের মানচিত্র। সেটি নকশা করেছিলেন তৎকালীন ছাত্র নেতা শিবনারায়ণ দাশ। পরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সেই পতাকাকে নতুনরূপে সাজানোর দায়িত্ব দেন বাংলাদেশের প্রখ্যাত চিত্রশিল্পী কামরুল হাসানকে। তার পরিমার্জন করা লাল সবুজের পতাকা বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা হিসেবে আত্মপ্রকাশ পায়।
পতাকার মূল পরিকল্পনাকারীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ১৯৭১ সালের ২ মার্চ পাকিস্তানিদের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে ছাত্র সমাজের উদ্যোগে প্রথমবারের মতো বাংলাদেশের পতাকা ওড়ানো হয়েছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ভবনের সামনে বটতলায়। সে সময় উপস্থিত শিক্ষার্থী-আন্দোলনকারীদের ভাষায়, ১৯৭১ সালের ২ মার্চ পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়েই স্বাধীনতা অর্জনের পথে যাত্রা শুরু হয়েছিল। মূলত ১৯৭১ সালের ১ মার্চ জাতীয় পরিষদের অধিবেশন স্থগিত করে দেওয়ায় সশস্ত্র সংগ্রামের বিকল্প নেই—এই চিন্তা থেকেই পতাকা তৈরির পরিকল্পনা করা হয়।
স্বাধীনতা অর্জনের পরের বছর ১৯৭২ সালের ২ মার্চ দৈনিক বাংলা পত্রিকার পাঁচ এর পাতায় লেখা হয় সেই স্মৃতি। সেখানে ‘বিক্ষোভে উদ্বেল সেই দিনগুলো’ শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ভবনে ছাত্রলীগ সভাপতি নূরে আলম সিদ্দিকীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৃহত্তম ছাত্র সভায় বাংলাদেশের পূর্ণ স্বাধিকার প্রতিষ্ঠার কথা ঘোষিত হলো। এ সভাতেই ছাত্র সমাজ সর্বপ্রথম উড়িয়েছিলেন স্বাধীন বাংলার পতাকা। সেই যে পতাকা উড়েছিল, তা আর নামেনি।
সে দিন আ স ম আবদুর রব ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলাভবনের সামনে বটতলায় এক ছাত্র সমাবেশে স্বাধীন বাংলার স্বপ্নের লাল-সবুজের পতাকা সর্বপ্রথম উত্তোলন করেন। তবে এর প্রস্তুতি শুরু হয়েছিল আরও অনেক আগে। ১৯৭০ সালের ৭ জুন তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের রাজধানী ঢাকার পল্টন ময়দানে অনুষ্ঠিত ছাত্রদের এক সামরিক কুচকাওয়াজে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অংশগ্রহণের কথা ছিল। এ লক্ষ্যে ছাত্রদের নিয়ে একটি বাহিনী গঠন করে, যার নাম জয় বাংলা বাহিনী। এর প্রধান ছিলেন তৎকালীন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদের (ডাকসুর) ভাইস প্রেসিডেন্ট আ স ম আব্দুর রব।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন ইকবাল হলের (বর্তমানে সার্জেন্ট জহুরুল হক হল) ১১৬ নম্বর রুমে অবস্থান করছিলেন ছাত্রনেতা আ স ম আব্দুর রব এবং ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শাহজাহান সিরাজ। সেই রুমে বসে স্বাধীন বাংলা বিপ্লবী পরিষদ যা পরে ‘নিউক্লিয়াস’ হিসেবে পরিচিতি পায়, সেটার সভাপতি সিরাজুল আলম খানের নির্দেশনা ও পরিকল্পনায় আ স ম আব্দুর রব, শাহজাহান সিরাজ, কাজী আরেফ আহমেদ, মার্শাল মনিসহ আরও কয়েকজন ছাত্রনেতা পতাকা তৈরির পরিকল্পনা করেন।
এ প্রসঙ্গে আ স ম আবদুর রব বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, আলাপ আলোচনার মাধ্যমে সে সময় পতাকা তৈরির পরিকল্পনা সব ঠিকঠাক ছিল। আমাদের মানসিকভাবেই প্রস্তুতি ছিল পতাকা তৈরির জন্য। পাকিস্তানিরা আমাদের সংসদে যাওয়ার সুযোগ দেবে না। আমাদের সশস্ত্র যুদ্ধ করতেই হবে। পতাকা তৈরির সিদ্ধান্ত হয়ে গেলো, কিন্তু আমরা কেউ আঁকাআঁকি করতে পারি না। তখন শাহজাহান সিরাজ বললো, আমাদের ছাত্রলীগের আরেক নেতা শিব নারায়ণ দাশ ঢাকায় আছে, সে খুব কম সময়ে ভালো ছবি আঁকতে পারে। তখন তাকে ডেকে আনা হলো। সবাই আলোচনা করে পতাকার কাঠামো তৈরি করা হলো।
সংস্কৃতি কর্মী এবং গেরিলা যোদ্ধা কামরুল আলম খান (খসরু) তখন ঢাকা নিউ মার্কেটের এক বিহারী দর্জির দোকান থেকে বড় এক টুকরো সবুজ কাপড়ের মাঝে লাল একটি বৃত্ত সেলাই করে আনেন। এরপর ট্রেসিং পেপারে আঁকা হয় পূর্ব পাকিস্তানের মানচিত্র। ছাত্রনেতা শিবনারায়ণ দাশ পরিশেষে তার মানচিত্রটি লাল বৃত্তের মাঝে আঁকেন।
আব্দুর রব বলেন, পতাকার রঙ নির্ধারণ করা হলো কালচে সবুজ। পাকিস্তানের পতাকার মতো রঙ না। বাংলাদেশের প্রতিটি ঘাসের রঙ , পাতার রঙ কালচে সবুজ। কালচে সবুজের মাঝে রক্ত লাল সূর্যের আকার। তার মাঝে দেওয়া হলো সোনালি বাংলাদেশের মানচিত্র। আগে বাংলাদেশ নামে কেউ চিনত না, হয় পূর্ব বাংলা না হয় পূর্ব পাকিস্তান। ছাত্রলীগের তখন কার্যালয় ছিল বলাকা ভবনে (বর্তমানে বলাকা সিনেমা)। তার পাশেই একটি বিহারী দর্জির দোকান ছিল। সেটার নাম ছিল ‘পাক ফ্যাশন’। সেটার মালিক ছিল মোহাম্মদ হোসেন, নাসিরুল্লাহ, আব্দুল খালেক মেহেদী। আমাদের নির্দেশ অনুযায়ী পতাকা তৈরি করে দিলো। পতাকা তুললাম বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য পাকিস্তানের বিরুদ্ধে। পতাকা যারা তৈরি করে দিল তারাও বিহারী।
রব বলেন, আমি জয় বাংলা বাহিনীর প্রধান ছিলাম। আমার সেকেন্ড ইন কমান্ড ছিল খসরু। ৭ জুন পল্টন ময়দানে প্রায় ৫০০ ছাত্র-ছাত্রী। আমরা গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টির মধ্যেই মারচপাস্ট করে হল থেকে পল্টন ময়দানে গেলাম। কুচকাওয়াজে আমি বাহিনীর পক্ষ থেকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে অভিবাদন জানালাম। আমি বঙ্গবন্ধুকে সবগুলো বাহিনীর সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেই। আমার হাতে স্বাধীনতার সেই পতাকা মোড়ানো ছিল। আমি হাঁটু গেড়ে বসে সামরিক কায়দায় পতাকা খুলে বঙ্গবন্ধুর হাতে সেটা হস্তান্তর করলাম। উনি পতাকা দেখে আমাকে তার বাসায় সেদিন সন্ধ্যায় আমন্ত্রণ০ জানালেন এবং সেটি মুড়িয়ে আবার আমার হাতে দিয়ে দিলেন। বাহিনীর একটা পতাকার প্রয়োজন হয় সেখান থেকেও পতাকার ধারণাটি আসে।
পরে ১৯৭১ সালের ২৩ মার্চ জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তার বাসভবনে ও স্বাধীনতা ঘোষণার প্রাক্কালে সেই পতাকা উত্তোলন করেছিলেন। পরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সরকার গঠনের পর প্রখ্যাত চিত্রশিল্পী কামরুল হাসানকে দায়িত্ব দেন পতাকা পরিমার্জন করার। কামরুল হাসান লাল বৃত্তের মাঝ থেকে মানচিত্র বাদ দিয়ে শুধু লাল বৃত্ত পরিমার্জন করে দেন। সেটিই বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা হিসেবে আত্মপ্রকাশ পায়।