সর্বশেষ আপডেট : ২ ঘন্টা আগে
মঙ্গলবার, ৩ অক্টোবর ২০২৩ খ্রীষ্টাব্দ | ১৮ আশ্বিন ১৪৩০ বঙ্গাব্দ |

DAILYSYLHET
Fapperman.com DoEscorts

দক্ষিণ আমেরিকায় সবচেয়ে বেশি মুসলমান সুরিনামে

দক্ষিণ আ’মেরিকার দেশ সুরিনামের দাপ্তরিক নাম রিপাবলিক অব সুরিনাম। উত্তর-পূর্ব আটলান্টিক উপকূলে অবস্থিত দেশটির উত্তরে আটলান্টিক মহাসাগর, পূর্বে ফ্রেঞ্জ গায়ানা, পশ্চিমে গায়ানা এবং দক্ষিণে ব্রাজিল।

সুরিনামের মোট আয়তন এক লাখ ৬৫ হাজার বর্গকিলোমিটার। এটি দক্ষিণ আ’মেরিকার সবচেয়ে ক্ষুদ্র আয়তনের সার্বভৌম রাষ্ট্র। জনসংখ্যা পাঁচ লাখ ৭৫ হাজার ৯৯০ জন। যাদের বেশির ভাগ বসবাস করে উত্তর উপকূলে অবস্থিত দেশটির বৃহত্তম শহর ও রাজধানী পারমা’রিবো ও তার আশপাশে।

জনসংখ্যার ১৪.৩ শতাংশ মু’সলিম। মু’সলিম’রা দেশটির তৃতীয় বৃহত্তম ধ’র্মীয় জনগোষ্ঠী। জনসংখ্যায় মু’সলিম’দের চেয়ে এগিয়ে থাকা অ’পর দুটি সম্প্রদায় হলো খ্রিস্টান (৫২.৩ শতাংশ) এবং হিন্দু (১৮.৮ শতাংশ)।

বিপুল প্রাকৃতিক সম্পদে ভরপুর সুরিনামের প্রধান আয়ের উৎস বক্সাইট, গোল্ড, পেট্রোলিয়াম ও কৃষি পণ্য। দেশটিতে বিস্তৃত প্রাকৃতিক বনভূমি আছে। দক্ষিণ আ’মেরিকার দেশগুলোর মধ্যে সুরিনামেই সবচেয়ে বেশি মু’সলমান বসবাস করে।

ধারণা করা হয়, সুরিনামে মানব বসতি গড়ে ওঠে খ্রিস্টপূর্ব তিন হাজার বছর আগে। ১৬৬০ থেকে ১৬৬৭ সালের মধ্যে সুরিনামে ডাচ উপনিবেশ প্রতিষ্ঠিত হয়। মূলত ডাচ ঔপনিবেশিক শাসকদের মাধ্যমে সুরিনামে মু’সলিম আগমন ঘটে। ডাচ উপনিবেশ প্রতিষ্ঠার পর সুরিনামে শ্রমিক হিসেবে আফ্রিকান দাসদের নিয়ে আসা হয়, যাদের বিপুলসংখ্যক ছিল মু’সলিম।

যদিও দাসদের কোনো ধ’র্মীয় স্বাধীনতা ছিল না এবং তাদের বৃহদাংশকে খ্রিস্ট ধ’র্ম গ্রহণে বাধ্য করা হয়। ১৮৭৩ ব’ন্দি ভা’রতীয় মু’সলিম’দের নিয়ে আসা হয় এই উপকূলীয় রাষ্ট্রে। ঔপনিবেশিক শাসনের সূত্র ধরে সুরিনামে বিপুলসংখ্যক ইন্দোনেশিয়ান মু’সলমানের আগমন ঘটে। যারা ১৯০২ থেকে ১৯৩৫ সালের মধ্যে সুরিনামে আগমন করে এবং কৃষিকাজে স্থির হয়।

বর্তমান সুরিনামের মু’সলিম জনসংখ্যার ৬৫ শতাংশ ইন্দোনেশিয়ান, ৩০ শতাংশ ভা’রতীয় এবং অন্য আফ্রিকার ধ’র্মান্তরিত মু’সলিম। এ ছাড়া বাংলাদেশ, ভা’রত, পা’কিস্তানসহ দক্ষিণ এশিয়ার একাধিক দেশের মু’সলিম অ’ভিবাসী শ্রমিক আছে সুরিনামে।

সুরিনাম ধ’র্মীয় ও সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য ও সহনশীলতার জন্য বিখ্যাত। দেশটিতে সব ধ’র্মের লোকেরা স্বাধীনভাবে ধ’র্মপালন ও সংস্কৃতিচর্চার সুযোগ পায়। তবে দুঃখজনক ব্যাপার হলো দেশটিতে মু’সলিম জনসংখ্যা ক্রমহ্রাসমান।

১৯৭৫ সালে নেদারল্যান্ডস থেকে স্বাধীনতা লাভের আগে সুরিনামের মু’সলিম জনসংখ্যা ছিল ২৫ শতাংশের বেশি। স্বাধীনতার সময় নেদারল্যান্ডস নাগরিকত্ব গ্রহণের প্রস্তাব দিলে প্রায় দুই লাখ সুরিনামিজ দেশত্যাগ করে।

এ সময় বহু মু’সলিমও দেশত্যাগ করে। মু’সলিম’দের দেশত্যাগের ধারা এখনো অব্যাহত আছে। পিউ ফোরামের বর্ণনামতে ২০৫০ সালে সুরিনামের মু’সলিম জনসংখ্যার ১১.৮ শতাংশে নেমে যাবে।

সুরিনামে দেড় শতাধিক সরকার অনুমোদিত ম’সজিদ ও একাধিক মু’সলিম সামাজিক, দাতব্য ও ধ’র্মীয় সংগঠন আছে। সুরিনামের বেশির ভাগ মু’সলিম সুন্নি মতাদর্শী এবং তারা হানাফি ও শাফেয়ি মাজহাবের অনুসারী।

মু’সলিম’রা প্রধান সরকারি ভাষা ডাচের পাশাপাশি দৈনন্দিন জীবনে আরবি ও উর্দু ভাষা ব্যবহার করেন। ১৯৮০ সালে রাজধানী পারমা’রিবোর প্রা’ণকেন্দ্রে দেশটির সর্ববৃহৎ ম’সজিদ উদ্বোধন করা হয়। কায়জারস্ট্রাট ম’সজিদের আছে চারটি ৩০ মিটার মিনার। এতে প্রায় এক হাজার মু’সল্লি একসঙ্গে নামাজ আদায় করতে পারে।

সুরিনাম দেশটির রাষ্ট্র স্বীকৃত সাতটি ধ’র্মের একটি ইস’লাম। ১৯৭০ সাল থেকে ঈদুল ফিতরে মু’সলিম’রা রাষ্ট্রীয় ছুটি উদ্যাপন করছে। ধ’র্মীয় স্বাধীনতা থাকলেও সুরিনামের মু’সলিম’রা ধ’র্মীয় শিক্ষায় পিছিয়ে।

দেশটির মু’সলিম জনসংখ্যার মাত্র তিন আরবি বলতে বা পড়তে পারে। সুরিনামে ইস’লামী শিক্ষা বিস্তারে পা’কিস্তানি ও ইন্দোনেশিয়ান মু’সলিম’রা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।

তথ্যসূত্র : ইস’লামিকআস ডটঅর্গ, প্রবন্ধ : ইস’লাম অ্যান্ড ইন্ডিয়ান মু’সলিমস ইন সুরিনাম, উইকিপিডিয়া

সংবাদটি শেয়ার করুন

Comments are closed.

নোটিশ : ডেইলি সিলেটে প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, আলোকচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও বিনা অনুমতিতে ব্যবহার করা বেআইনি -সম্পাদক

© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত

২০১১-২০১৭

সম্পাদকমন্ডলীর সভাপতি: মকিস মনসুর আহমদ
সম্পাদক ও প্রকাশক: খন্দকার আব্দুর রহিম, নির্বাহী সম্পাদক: মারুফ হাসান
অফিস: ৯/আই, ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি, ৯ম তলা, জিন্দাবাজার, সিলেট।
ফোন: ০৮২১-৭২৬৫২৭, মোবাইল: ০১৭১৭৬৮১২১৪
ই-মেইল: dailysylhet@gmail.com

Developed by: