cialis fiyat cialis sipariş http://umraniyetip.org/
Fapperman.com DoEscortscialis viagra viagra cialis cialis viagra cialis20mgsite.com geciktirici sprey azdırıcı damla
করো’নার মহামা’রিতে প্রায় দেড় বছর পর গত ১২ সেপ্টেম্বর খুলেছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। দমবন্ধ অবস্থা থেকে যেন মুক্তির আনন্দে মেতেছে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। কিন্তু কুড়িগ্রাম সদর উপজে’লার হলোখানা ইউনিয়নের সারডোব উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছা’ত্রী নার্গিস নাহারের মনটা বিষণ্ন। শ্রেণিটিতে একমাত্র ছা’ত্রী সে। ফলে ছে’লে সহপাঠীদের সঙ্গে একা বসতে হচ্ছে। একদিকে অস্বস্তি। কারণ এভাবে একা কখনো বসেনি সে। অন্যদিকে চোখেমুখে আতঙ্ক, কারণ আট বান্ধবীর সবার বিয়ে হয়ে গেছে। তার ভাগ্যে কী’ আছে কে জানে!
মহামা’রির কারণে দেড় বছর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ। নিম্ন আয়ের মানুষেরা মে’য়েকে ঘরে বসিয়ে রাখার ‘ঝুঁ’কি’ নিতে চাননি। শ্বশুরবাড়ি পাঠিয়ে দিয়ে নিশ্চিন্ত থাকতে চেয়েছেন তাঁরা। নার্গিস নাহারের বান্ধবীদের সেই নিয়তিই বরণ করতে হয়েছে। নূরবানু খাতুন, নাজমা খাতুন, স্বপ্না খাতুন, হেলেনা খাতুন, চ’ম্পা খাতুন, লুৎফা খাতুন, চাঁদনী খাতুন এবং আরফিনা খাতুন (ছদ্মনাম) সবারই বিয়ে গেছে। একই অবস্থা নার্গিসের বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণিরও। ওই শ্রেণিতে চার ছা’ত্রীর মধ্যে জেসমিন ছাড়া বাকি তিনজনেরই বিয়ে হয়ে গেছে। এ ছাড়া ষষ্ঠ শ্রেণির একজন, সপ্তম শ্রেণির দু’জন, অষ্টম শ্রেণির চারজনকে পরিবার গো’পনে বিয়ে দিয়েছে।
নার্গিস নাহার জানায়, দেড় বছরের মধ্যে আমা’র আট বান্ধবীর বিয়ে হয়েছে। এখন শুধু আমিই বাকি। স্কুল খোলার পর আমা’র বান্ধবীদের বিয়ের কথা জানতে পারি। আমি আমা’র বাবা-মাকে বলেছি সেই কথা। তাদের এও বলেছি, আমা’র পড়াশোনা শেষ করে একটি চাকরি করে নিজের অবস্থা তৈরি করেই বিয়ে করব। এর আগে নয়। নিজে স্বাবলম্বী না হয়ে অন্যের কাছে বোঝা হয়ে থাকতে চাই না।
এই এলাকার বাসিন্দা নাজিম আলী বলেন, ‘মে’য়ে লোকের ফুট ভাসলে বিয়ে দিতে হয়। আমাদের সরকার কি কবাইছে জানে ২১,২২, ২৩,১৮, ১৯,২০ বছর হলে কে নিবে মে’য়েকে? কেউ নেবেন নয়। মে’য়ে যত বড় হবে-দু, আড়াই, তিন, পাঁচ লাখ ডিমান্ড হবে। মে’য়ের একটু বয়স হলেই কয় এক লাখে হবার নয়, হাত-পায়ের সোনা দেওয়া নাগবে। সে জন্য প্রত্যন্ত এলাকার মে’য়েদের অল্প বয়সেই বিয়ে দেয় বাবা-মা।’
বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আব্দুল মজিদ চৌধুরী বলেন, নবম শ্রেণিতে ৩৬ জন ছাত্র-ছা’ত্রী। এর মধ্যে নয় জন ছা’ত্রী আর ২৭ জন ছাত্র। স্কুল খোলার পর বাল্যবিয়ের বিষয়টি প্রকাশ পেয়েছে যা খুবই দুঃখজনক। তারপরেও আম’রা চেষ্টা করছি মে’য়েদের পড়ালেখামুখী করতে।
সারডোব উচ্চ বিদ্যালয়ে ৬ষ্ঠ থেকে ১০ম শ্রেণি পর্যন্ত ২২৫ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে ৬৩ জন ছা’ত্রী। প্রধান শিক্ষক ফজলে রহমান বলেন, প্রায় ৮০ শতাংশ ছা’ত্রী এবং ৭০ শতাংশ ছাত্র বিদ্যালয়ে উপস্থিত হচ্ছে। বাকিদের খোঁজ খবর নিতে শিক্ষকদের নিয়ে একটি টিম গঠন করা হয়েছে। তাঁরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে বিদ্যালয়ে না আসার প্রকৃত কারণ তুলে ধরবেন।
একই এলাকার উত্তর হলোখানা নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আব্দুল রাজ্জাক বলেন, তাঁর বিদ্যালয়ে ৬ষ্ঠ শ্রেণিতে ৪২ ছা’ত্রীর মধ্যে ২ জন,৭ম শ্রেণিতে ৪৫ ছা’ত্রীর মধ্যে ২ জন এবং ৮ম শ্রেণিতে ৩৩ জন ছা’ত্রীর মধ্যে ৫ জনের বিয়ে হয়ে যাওয়ার কথা জানা গেছে।
এভাবে কি’শোরীদের বিয়ে দেওয়ার কারণ জানতে চাইলে একই এলাকার বাসিন্দা বুলবুলি বেগম বলেন, তাড়াতাড়ি বিয়ে দিই, হাম’রা গরিব মানুষ। মে’য়ে ছইল যত বড় হইবো তত ডিমান্ড (যৌতুক) হার বাড়বো। মে’য়ে যদি মেট্রিক পাস করাই, তাইলে ছে’লে নেওয়া লাগব ইন্টার পাস। সেই সাম’র্থ্য যদি হাম’রা করবার না পারি সে জন্য ছোটতে মে’য়ের বিয়ে দিই।
একই এলাকার আহাম্ম’দ আলী বলেন, বাল্যবিয়ে তো এলাকায় হয় না। মে’য়ে পক্ষের আত্মীয়স্বজনের বাড়িতে নিয়ে গিয়ে বিয়ে দেয় গো’পনে। কেউ এক ইউনিয়ন থেকে অন্য ইউনিয়ন, আবার কেউ উপজে’লা থেকে অন্য উপজে’লায় নিয়ে গিয়ে বিয়ে দেয়। বিয়ের কথা সঙ্গে সঙ্গে প্রকাশ না করে পনেরো দিন, এক মাস পর প্রকাশ করে বাবা-মা।
ইউনিয়নের ৪ নং ইউপি সদস্য বাহিনুর রহমান জানান, জে’লা সদর হলেও হলোখানা ইউনিয়নে ওই ওয়ার্ড ধরলা নদী দিয়ে বিচ্ছিন্ন। যোগাযোগ ব্যবস্থা খা’রাপ। আর বাল্যবিয়েও হয় গো’পনে। এ কারণে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের কাছেও সেখবর পৌঁছায় না। এই এলাকায় বাল্যবিয়ের সমস্যা নিরসনে যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত করা সবচেয়ে জরুরি বলে মনে করেন তিনি।
এদিকে জে’লা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মক’র্তা শামসুল আলম জানান, সদরের পাঁচটি স্কুল পর্যবেক্ষণ করে ৬৩ ছা’ত্রীর বিয়ে হয়ে যাওয়ার কথা জেনেছেন তাঁরা। শিক্ষক এবং কর্মক’র্তাদের সংগৃহীত তথ্য অনুযায়ী, ১৩ শতাংশ শিক্ষার্থী ঝরে পড়েছে। ঝরে পড়া কন্যা শি’শুদের অধিকাংশই বাল্যবিয়ের শিকার হয়েছে। এ হিসাবে জে’লায় গত দেড় বছরে ঝরে পড়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় ৫০ হাজার। অন্য স্কুলগুলোর অবস্থা জানতে উপজে’লাতে তথ্য সংগ্রহের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। আগামী সপ্তাহে জে’লার প্রকৃত চিত্র উঠে আসবে বলে জানান তিনি।
এই তথ্য জে’লা প্রশাসক, পু’লিশ সুপারসহ আইনশৃঙ্খলা মিটিংয়ে উত্থাপন করে বিবাহ রেজিস্ট্রার কাজিদের কী’ভাবে নিয়ন্ত্রণে আনা যায় এবং বাল্যবিয়ে রোধ করা যায় সেটি নিয়ে আলোচনা করবেন বলে উল্লেখ করেন শিক্ষা কর্মক’র্তা শামসুল আলম।
বেসরকারি সংস্থা প্ল্যান বাংলাদেশের তথ্যানুযায়ী, ২০১৮ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২১ সালের আগস্ট পর্যন্ত কুড়িগ্রামে মোট বিয়ে সংগঠিত হয়েছে ২২ হাজার ৩৯১ টি। এর মধ্যে নিবন্ধিত বিয়ে ১৯ হাজার ২২১টি এবং অনিবন্ধিত বিয়ে ৩ হাজার ১৭০ টি। জে’লার নয়টি উপজে’লায় বাল্যবিয়ে সংগঠিত হয়েছে ৩ হাজার ১৯ টি। এর মধ্যে কুড়িগ্রাম সদরে ৭৩০ টি, রাজারহাটে ৭৪ টি, উলিপুরে ২৬১ টি, চিলমা’রীতে ১৪৬ টি, রৌমা’রী ৮৮ টি, রাজিবপুর ৫০ টি, নাগেশ্বরী ১ হাজার ১৪০ টি, ফুলবাড়ী ২৯১ টি, ভূরুঙ্গামা’রীতে ২৩৯টি বাল্যবিয়ে সংগঠিত হয়েছে। এ ছাড়া বাল্যবিয়ে প্রতিরোধ হয়েছে ১ হাজার ১৩৬ টি।
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার পর প্রকাশ পেতে শুরু করেছে কুড়িগ্রামে বাল্যবিয়ের ভ’য়াবহ চিত্র। অ’ভিভাবক মহল বলছে-দারিদ্র্য, যোগাযোগ বিচ্ছন্নতাসহ নানা প্রতিবন্ধকতার জন্য বাল্যবিয়ের হার বেড়েছে।