সর্বশেষ আপডেট : ১ ঘন্টা আগে
সোমবার, ৫ জুন ২০২৩ খ্রীষ্টাব্দ | ২২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩০ বঙ্গাব্দ |

DAILYSYLHET
Fapperman.com DoEscorts

কৃষি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের একটি সাউন্ড সিস্টেমের দাম ১৭ লাখ টাকা!

প্রকল্পে কেনাকাটায় অতিরিক্ত ব্যয় এখন আর কোনো নতুন বিষয় নয়। তবে অতিরিক্ত ব্যয়ের ক্ষেত্রে যুক্ত হচ্ছে নতুন মাত্রা। সুনামগঞ্জ জেলার জগন্নাথপুর এবং নেত্রকোনা জেলার মোহনগঞ্জ উপজেলায় দুটি কৃষি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের কনফারেন্স রুমের সাউন্ড সিস্টেমের প্রতিটির দাম ধরা হয়েছে ১৭ লাখ টাকা করে। অর্থাৎ দুটি প্রশিক্ষণকেন্দ্রের জন্য দুটি সাউন্ড সিস্টেম কিনতে খরচ পড়বে ৩৪ লাখ টাকা।

অথচ দেশের বাজারে একটি সাউন্ড সিস্টেমের দাম সর্বোচ্চ দেড় লাখ থেকে পাঁচ লাখ টাকা পর্যন্ত। সেগুলো মূলত ব্যবহার করা হয় সিনেপ্লেক্স অথবা বড় থিয়েটারে। আর সাধারণ কনফারেন্স রুমের জন্য ব্যবহার করা সাউন্ড সিস্টেমের দাম শুরু ১০ হাজার টাকা থেকে। এসব কারণে কৃষি মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবিত অস্বাভাবিক দামে এই কেনাকাটার ব্যাপারে আপত্তি জানিয়েছে পরিকল্পনা কমিশনের কৃষি, পানিসম্পদ ও পল্লী প্রতিষ্ঠান বিভাগ।

জিনিসপত্র কেনার ক্ষেত্রে দরগুলোতে দেখা যায়, ডিজিটাল নোটিশ বোর্ড প্রতিটি তিন লাখ ৬০ হাজার টাকা, ডিজিটাল ডিসপ্লে বোর্ড প্রতিটি চার লাখ ২০ হাজার টাকা, ডিজিটাল সাউন্ড সিস্টেম প্রতিটি ৬০ হাজার টাকা। এক লাখ ৮০ হাজার টাকা দরে ১১টি টেলিভিশন কেনা হবে, যাতে ব্যয় ধরা হয়েছে ১৯ লাখ ৮০ হাজার টাকা। এয়ারকুলার দুই লাখ ৮৮ হাজার টাকা করে ১০টি মোট ২৮ লাখ ৮০ হাজার টাকা। ফটোকপিয়ার প্রতিটি চার লাখ ৯৮ হাজার টাকা দরে আটটিতে মোট ৩৯ লাখ ৮৪ হাজার টাকা। চারটি জাতীয় সেমিনার করতেই ব্যয় ধরা হয়েছে ৩৫ লাখ ২৮ হাজার টাকা। এসব যন্ত্রাংশ কেনাকাটার জন্যও পরামর্শক ব্যয় ধরা হয়েছে প্রতি মাসে তিন লাখ ৬০ হাজার টাকা। পুরো প্রকল্প মেয়াদে পরামর্শক খাতে ব্যয় হবে এক কোটি ৩০ লাখ টাকা।

কেনাকাটা দরপত্র প্রসঙ্গে জানতে চাইলে কৃষি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (পরিকল্পনা অনুবিভাগ) ড. মো. আবদুর রৌফ বলেন, ‘আসলে আপাতদৃষ্টিতে একটি সাউন্ড সিস্টেমের দাম ১৭ লাখ টাকা বেশিই মনে হচ্ছে। তবে সেটা দেখতে হবে কোন ব্র্যান্ডের। আর প্রকল্পটি তো পাস হয়নি, এখনো একনেকে যায়নি। দরপত্র সংশোধনের এখনো সুযোগ আছে।’

কৃষি মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে দেশে ১৮টি কৃষি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট (এটিআই) আছে, যেখানে তিন হাজার ৩৮০ জন শিক্ষার্থীর ভর্তির সুযোগ রয়েছে। গড়ে প্রতিবছর দেড় হাজার শিক্ষার্থী ডিপ্লোমা সনদ অর্জন করছেন। ডিপ্লোমা কৃষি শিক্ষা শেষে বিভিন্ন সংস্থায় তাঁরা চাকরিতে নিয়োজিত। সরকারের কৃষি সম্প্রসারণ কার্যক্রমকে আরো ত্বরান্বিত করতে ডিপ্লোমা কৃষিবিদ প্রয়োজন অনেক। কিন্তু সুনামগঞ্জ ও মৌলভীবাজার জেলার কাছে কোনো কৃষি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট নেই। অন্যদিকে নেত্রকোনা জেলা ও এর পাশের কিশোরগঞ্জ ও ময়মনসিংহ জেলায়ও কোনো প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট নেই। এ অবস্থায় জগন্নাথপুর ও মোহনগঞ্জ উপজেলায় দুটি কৃষি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট স্থাপনের প্রস্তাব করা হয়েছে কৃষি মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে। এই দুটি প্রতিষ্ঠান স্থাপনে ব্যয় প্রস্তাব করা হয়েছে ২৮৮ কোটি ৬৫ লাখ ৪১ হাজার টাকা, যা সরকারের রাজস্ব খাত থেকে বহন করা হবে।

প্রকল্পের আওতায় কাজগুলো হলো—প্রতিটিতে শিক্ষা ও প্রশাসনিক ভবন, ২০০ ছাত্রের জন্য ছাত্রাবাস, ২০০ ছাত্রীর জন্য ছাত্রীনিবাস, অধ্যক্ষের জন্য ডুপ্লেক্স বাসভবন, কর্মকর্তাদের জন্য ডরমিটরি, কর্মচারীদের জন্য ডরমিটরি, অডিটরিয়াম, অতিথিশালাসহ অন্যান্য স্থাপনা নির্মাণ। এ ছাড়া অধ্যক্ষ-উপাধ্যক্ষ, এটিআই অফিসার ও কৃষকদের প্রশিক্ষণ দেওয়া। তা ছাড়া দোতলা ভিতে ২৬০ বর্গমিটারের অধ্যক্ষ ভবন নির্মাণে ব্যয় এক কোটি ২০ লাখ টাকা। অতিথি ভবনের খরচই বেশি। প্রায় এক হাজার ৪৮৫ বর্গমিটারের তিনতলা ভিতে তিনতলা ভবন নির্মাণে খরচ হবে সাত কোটি চার লাখ টাকা। ২৩০.৪০ বর্গমিটারের মসজিদ নির্মাণে খরচ ধরা হয়েছে দুই কোটি আট লাখ টাকা।

দুটি ইনস্টিটিউট স্থাপনের জন্য ৩০ একর জমি অধিগ্রহণ বা কেনার জন্য ৩২ কোটি ৩১ লাখ টাকা ধরা হয়েছে। এই জমি নির্বাচন সম্পন্ন ও মৌজার দর অনুযায়ী জমির মূল্য নির্ধারণ জেলা প্রশাসকের মাধ্যমেই করতে হবে। কিন্তু জমি এখনো নির্বাচন না করে কিসের ভিত্তিতে ভূমি অধিগ্রহণ খাতে ব্যয় প্রাক্কলন করা হয়েছে, ডিপিপিতে তা উল্লখ করা হয়নি।

পরিকল্পনা কমিশনের কৃষি, পানিসম্পদ ও পল্লী প্রতিষ্ঠান বিভাগের অভিমতে বলা হয়, নির্মাণ ও পূর্ত খাতে প্রায় ২৭৩ কোটি ৬৬ লাখ টাকা প্রস্তাব করা হয়েছে, যা মোট খরচের ৭০.৪১ শতাংশ। নির্মাণ কার্যক্রমগুলো গণপূর্ত অধিদপ্তর সম্পাদন করবে। প্রকল্পে সেসব জিনিসপত্র কেনা হবে তার যে দাম ধরা হয়েছে, তা অতিরিক্ত। এসব দাম ও ব্যয় যৌক্তিক পর্যায়ে কমিয়ে আনতে এবং বাজারের সঙ্গে মূল্যায়ন দেখাতে হবে। জনবল কমিটির সুপারিশের আলোকে জনবল নিয়োগ, যানবাহনের সংখ্যা ও ব্যয় নির্ধারণ করতে হবে। সৌজন্যেঃ কালের কণ্ঠ

সংবাদটি শেয়ার করুন

Comments are closed.

এ বিভাগের অন্যান্য খবর

নোটিশ : ডেইলি সিলেটে প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, আলোকচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও বিনা অনুমতিতে ব্যবহার করা বেআইনি -সম্পাদক

© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত

২০১১-২০১৭

সম্পাদকমন্ডলীর সভাপতি: মকিস মনসুর আহমদ
সম্পাদক ও প্রকাশক: খন্দকার আব্দুর রহিম, নির্বাহী সম্পাদক: মারুফ হাসান
অফিস: ৯/আই, ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি, ৯ম তলা, জিন্দাবাজার, সিলেট।
ফোন: ০৮২১-৭২৬৫২৭, মোবাইল: ০১৭১৭৬৮১২১৪
ই-মেইল: dailysylhet@gmail.com

Developed by: