সর্বশেষ আপডেট : ৪ ঘন্টা আগে
মঙ্গলবার, ৩০ মে ২০২৩ খ্রীষ্টাব্দ | ১৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩০ বঙ্গাব্দ |

DAILYSYLHET
Fapperman.com DoEscorts

মৃত্যুর আগে দেশে ফেরার আকুতি জানান সৌদি প্রবাসী সাজনা

অভাব-অনটন থেকে পরিবারের ভাগ্য ফেরাতে চলতি বছরের ১৯ ফেব্রুয়ারি সৌদি আরবে পাড়ি জমান হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজে’লার কুর্শি ইউনিয়নের এনাতাবাদ গ্রামের মিজানুর রহমানের স্ত্রী’ সাজনা বেগম। বাড়তি আয়ের আশায় ভিনদেশে গিয়ে মাত্র সাড়ে পাঁচ মাসের মা’থায় বরণ করতে হয় মৃ’ত্যুকে। গত ২ আগস্ট সৌদি আরবে ‘র’হস্যজনক’ মৃ’ত্যু হয় এ নারীর। শুক্রবার (২৭ আগস্ট) রিক্রুটিং এজেন্সি মেসার্স কনকর্ড এপেক্সের স্বত্বাধিকারী আবুল হোসেন সাজনার মৃ’ত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেন। এর আগে, ২৫ দিন সাজনার পরিবারের কাছে সংবাদটি গো’পন রাখে এজেন্সিটি।

সাজনার স্বামী মিজানুর রহমান জানান, দরিদ্র পরিবারের অভাব ঘোচাতে নিকটাত্মীয় গো’লাপ মিয়ার প্রলো’ভনে সৌদি গমন করেন। রাজধানীর কনকর্ড এপেক্স নামের একটি দেশীয় রিক্রুটিং এজেন্সি তার সৌদি যাওয়ার যাবতীয় কার্যক্রম সম্পন্ন করে। চলতি বছরের ১৯ ফেব্রুয়ারি চট্টগ্রাম আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর থেকে সালাম এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে সাজনা সৌদি পাড়ি জমান। সেখানে তাকে গ্রহণ করে সৌদির রিক্রুটিং এজেন্সি সাহেল আল বাতেন। সৌদিতে পৌঁছে প্রথম তিন মাস সেখানে ভালোই চলছিল। এরপরই শুরু হয় ‘নি’র্যা’তন’।

স্বামীর অ’ভিযোগ, ‘অসহনীয় নি’র্যা’তন কথা পরিবারকে জানায় সে। দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য বারবার মোবাইল ফোনে আকুতি জানায়। এক পর্যায়ে তাকে মে’রে ফেলারও আশ’ঙ্কাও ব্যক্ত করে।’

স্বজনরা জানিয়েছেন, সাজনার স্বামী মিজানুর রহমান ও স্বজনরা তাকে দেশে ফিরিয়ে আনতে দালাল গো’লাপ ও এজেন্সি কনকর্ড এপেক্সের কাছে ধরনা দেয়। নানা অজুহাতে সময়ক্ষেপণ করে এজেন্সি কর্তৃপক্ষ ও দালাল। এক পর্যায়ে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তি ও ইউপি সদস্য আব্দুল বাছিতের উপস্থিতিতে সালিশ হয়। সাজনাকে ফিরিয়ে আনতে সর্বশেষ দুই লাখ টাকায় সম্মত হয় কনকর্ড এপেক্সের হয়ে কাজ করা গো’লাপ।

সাজনার ভগ্নিপতি আলী আহম’দ গো’লাপের কথামতো নগদ টাকা দেন। গত ১১ জুলাই গো’লাপের শ্যালক দিলকাছ স্থানীয় মুরুব্বিদের উপস্থিতিতে দুই লাখ টাকা নেন। ২০ জুলাইয়ের মধ্যে সাজনাকে দেশে ফিরিয়ে আনার প্রতিশ্রুতি দেয় কনকর্ড এপেক্স ও গো’লাপ মিয়া। কথার হেরফের হয়। নানা অজুহাতে সময়ক্ষেপণ করে। করে টালবাহানা। ২ আগস্ট সৌদি আরবে সাজনা বেগমের ‘র’হস্যজনক’ মৃ’ত্যু হয়।

স্বামী মিজানুর রহমান বলেন, ‘গবাদি পশু বিক্রি করে স্ত্রী’কে দেশে ফেরানোর জন্য টাকা দেই। কিন্তু এজেন্সি নানাভাবে সময়ক্ষেপণ করতে থাকে। আমা’র স্ত্রী’ সাজনার সৌদিতে র’হস্যজনক মৃ’ত্যু হয়েছে। আম’রা জেনেছি, তবে বিষয়টি আমাদের কাছে গো’পন করে কনকর্ড এপেক্স। অন্য আরেকটি মাধ্যমে আমি আমা’র স্ত্রী’র মৃ’ত্যুর খবর পাই। জীবিত স্ত্রী’কে ফিরিয়ে আনার জন্য শতচেষ্টা করেও পারলাম না।’ তিনি এ ঘটনার বিচার দাবি করেন।

এসব বিষয়ে জানতে গো’লাপকে কল করা হলে তিনি বলেন, ‘আমি নেটওয়ার্কের বাইরে আছি। পরে ফোন দিয়েন।’ এরপর বেশ কয়েকবার কল করা হলেও তিনি ধরেননি।

এ বিষয়ে মেসার্স কনকর্ড এপেক্সের স্বত্বাধিকারী আবুল হোসেন সাজনার মৃ’ত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘আম’রা যতদূর জানতে পেরেছি, রাতে ঘুমানোর পর সকালে মৃ’ত অবস্থায় তাকে পাওয়া যায়। স্বাভাবিকভাবেই মৃ’ত্যু হয়েছে বলে জানা গেছে। তবে সৌদি পু’লিশ এ ঘটনার ত’দন্ত করছে এবং সাজনার লা’শ ময়নাত’দন্তের জন্য দেশে আসতে দেরি হচ্ছে। ময়নাত’দন্তের পর এলে বিস্তারিত বলা যাবে কী’ভাবে মৃ’ত্যু হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘ইতোমধ্যে সৌদি আরবের বাংলাদেশ দূতাবাসের কাছে লিখিত আবেদনের প্রেক্ষিতে তারা লা’শ দ্রুত দেশে পাঠানোর জন্য চেষ্টা করছে। সেখানে নিয়মিত যোগাযোগ রাখা হচ্ছে। আমিও প্রতিনিয়ত দূতাবাসের কর্মক’র্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করছি।’

তবে এজেন্সির পক্ষ থেকে ২৫ দিন ধরে সাজনার পরিবারকে মৃ’ত্যুর খবর না জানানোর বিষয়টি তিনি অস্বীকার করেন। আবুল হোসেন আরও বলেন, ‘আম’রা তাকে ফেরানোর জন্য দুই লাখ টাকা নিইনি। এসব বিষয়ে গো’লাপ ভালো বলতে পারে। তাছাড়া মৃ’ত্যুর পর সাজনার পরিবারকে জানানো হয়েছে।’

সংবাদটি শেয়ার করুন

Comments are closed.

এ বিভাগের অন্যান্য খবর

নোটিশ : ডেইলি সিলেটে প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, আলোকচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও বিনা অনুমতিতে ব্যবহার করা বেআইনি -সম্পাদক

© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত

২০১১-২০১৭

সম্পাদকমন্ডলীর সভাপতি: মকিস মনসুর আহমদ
সম্পাদক ও প্রকাশক: খন্দকার আব্দুর রহিম, নির্বাহী সম্পাদক: মারুফ হাসান
অফিস: ৯/আই, ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি, ৯ম তলা, জিন্দাবাজার, সিলেট।
ফোন: ০৮২১-৭২৬৫২৭, মোবাইল: ০১৭১৭৬৮১২১৪
ই-মেইল: dailysylhet@gmail.com

Developed by: