সর্বশেষ আপডেট : ৪ ঘন্টা আগে
বৃহস্পতিবার, ১ জুন ২০২৩ খ্রীষ্টাব্দ | ১৮ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩০ বঙ্গাব্দ |

DAILYSYLHET
Fapperman.com DoEscorts

সিলেট থেকে আফগানিস্তানে রাজ্জাক কীভাবে গেলেন?

সিলেট নগরের লামাবাজার এলাকায় ভাইয়ের বাসায় থাকতের আব্দুর রাজ্জাক (২০)। ওই এলাকারই ম’দন মোহন কলেজের দ্বাদশ শ্রেণীতে পড়তেন। স্বভাবে নম্র ও ধ’র্মপরায়ন ছিলেন। কারো সাথেই কোনো বিরোধ নেই। সেই রাজ্জাক হঠাৎ করেই নি’খোঁজ হয়ে যান গত ২৫ মা’র্চ।

‘বন্ধুর বাড়িতে যাচ্ছি, দুদিন পর ফিরে আসবো’- ভাইকে এমনটি বলে সেদিন বাসা থেকে বের হয়েছিলেন রাজ্জাক। এরপর আর ফিরেননি। অনেক খোঁজাখুঁজি করেও ভাইকে না পেয়ে গত ১ এপ্রিল সিলেট কতোয়ালি থা’নায় সাধারণ ডায়রি করেন রাজ্জাকের বড় ভাই সালমান খান।

পু’লিশের জ’ঙ্গিবিরোধী বিশেষ শাখা কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রা’ইম বিভাগ (সিটিটিসি) বলছে, তা’লেবানদের হয়ে ল’ড়তে আ’ফগা’নিস্তান পাড়ি জমিয়েছেন রাজ্জাক।

রাজ্জাকদের মূল বাড়ি কুমিল্লার বঙ্গুরা থা’নায়। তবে ছোটবেলা থেকেই সিলেটে ভাইয়ের বাসায় থেকে পড়ালেখা করতেন তিনি। নগরের দি এইডেড হাই স্কুল থেকে মাধ্যমিক পাশ করেছেন।

নগরের লামাবাজারের বিলপাড় এলাকার যে বাসাটিতে থাকতেন রাজ্জাক রোববার সেখানে গিয়ে দেখা যায়, বাসায় রাজ্জাকের ভাইসহ তার পরিবারের কেউ নেই।

মোবাইল ফোনে কথা হয় রাজ্জাকের বড় ভাই সালমান খানের সাথে। পেশায় তিনি মাইক্রোবাস চালক।

সালমান বলেন, সাম্প্রতিক লকডাউনে চাকরি হারিয়েছি। তাই মাস দুয়েক আগে সিলেট থেকে পরিবার নিয়ে কুমিল্লায় গ্রামের বাড়িতে চলে আসছি।

ভাই কোথায় আছে জানেন না জানিয়ে সালমান বলেন, পু’লিশও কোনো খোঁজ দিতে পারছে না। তবে শনিবার থেকে কয়েকজন সাংবাদিক ফোন দিয়ে তার তথ্য নিয়েছে।

তিনি বলেন, এক পু’লিশ বলেছেন সে দেশ ছেড়ে চলে গেছে। আ’ফগা’নিস্তানে চলে গেছে বলে জানিয়েছে পু’লিশ।

সালমানের ভাষ্যমতে, ছোটবেলা থেকেই নামাজ পড়তেন রাজ্জাক। বন্ধুদের সাথে তাবলিগে যেতেন। পরবিারের অন্যদেরও নামাজ পড়তে বলতেন। ইস’লামী রীতি অনুসারে জীবন যাপন করতে বলতেন।

তার মতে, রাজ্জাকের বন্ধুরাও খুব ভালো। তাদের সকলকেই আম’রা চিনি। একটাও খা’রাপ ছে’লে নেই। এলাকার সকলেও রাজ্জাককে ভালো ছে’লে হিসেব্ইে চেনে।

ভাইয়ের নি’খোঁজ হওয়া প্রসঙ্গে সালমান বলেন, ২৫ মা’র্চ সে আমাকে জানায় তার এক বন্ধুর বাড়িতে যাবে। দুদিন পর ফিরে আসবে। বন্ধুর বাড়ি সিলেটের লালাবাজারে। একটা মাদ্রাসায় পড়ে। নামটা এখান ভুলে গেছি। কিন্তু দুইদিন পেরিয়ে গেলেও সে ফিরে আসেনি। ওই বন্ধুর বাসায়ও সে নেই। এমনকি ওই বন্ধুও নি’খোঁজ রয়েছে। এরপর অনেক খোঁজাখুঁজি করে না পেয়ে ১ এপ্রিল থা’নায় জিডি করি। পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দেই।

সালমান বলেন, রাজ্জাক মাঝেমাঝেই বন্ধুদের বাড়ি যেতো। থাকতোও অনেক সময়। এরপর আবার ফিরে আসতো। তবে এবার আসেনি। তার সেই বন্ধুটিরও খোঁজ মিলছে না।

রাজ্জাকের নি’খোঁজের ব্যাপারে থা’নার ভাইয়ের করা সাধারণ ডায়রি ত’দন্ত করছেন নগরের লামাবাজার থা’নার ইনচার্জ উপ পরিদর্শক (এসআই) আল আমিন।

তিনি বলেন, রাজ্জাকের মোবাইল নাম্বার ট্রেস করে আম’রা তার সর্বশেষ অবস্থান দেখতে পেয়েছি নগরের কতোয়ালি ও জালালাবাদ থা’নার মধ্যবর্তী খালপাড় নামক একটা স্থানে। ওই জায়গায় গিওেয় তাকে পাওয়া যায়নি। এরপর আর তাকে ট্রেস করা যাচ্ছে না। এখন বিভিন্ন মাধ্যমে শুনতে পাচ্ছি, সে তা’লেবানের পক্ষে যু’দ্ধে অংশ নিতে আ’ফগা’নিস্তান চলে গেছে। তবে এ ব্যাপারে আম’রা নিশ্চিত নই।

রাজ্জাক যে বন্ধুর বাড়ি যাওয়ার কথা বলে বাসা থেকে বের হয়েছিলেন, তার বাড়ি লালবাজারে বলে রাজ্জাকের ভাই সালমান জানিয়েছিলেন। তবে এসআই আল আমিন বলেন, ওই ছে’লের বাড়ি মৌলভীবাজারে। তার নাম ফরিদ উদ্দিন। তাকে কিছুদিন আগে ঢাকার একটি মা’মলায় পু’লিশ গ্রে’প্তার করে। সে এখন কাশিমপুর কারাগারে আছে।

এসআই আল আমিনের ধারণা ফরিদ উদ্দিনের দেওয়া তথ্য থেকেই রাজ্জাকের আ’ফগা’নিস্থান যাওয়ার তথ্য জেনে থাকতে পারে আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর কোনো টিম। তবে এ ব্যাপারে তিনি নিশ্চত নন বলে আবারও জানান।

কতোয়ালি থা’নার ভা’রপ্রাপ্ত কর্মক’র্তা (ওসি) এসএম ফরহাদ হোসেন বলেন, একটি ছে’লে নিঁেখাজ হওয়ার অ’ভিযোগে বেশ আগে একটা জিডি হয়েছিলো। তবে তার সন্ধান আম’রা পাইনি। সে কোথায় আছে তাও বলতে পারবো না।

সিটিটিসির একজন কর্মক’র্তা নাম প্রকাশ না করার অনুরোধ করে বলেন, ‘সম্প্রতি কয়েকজন বাংলাদেশ থেকে আ’ফগা’নিস্তানে গিয়েছে। তাদের তিনজনের নাম পেয়েছি। তাদের একজন রাজ্জাক।’

আ’ফগা’নিস্তানে সোভিয়েত বাহিনীর বি’রুদ্ধে যখন দেশটির মুজাহিদিনরা আশির দশকে যু’দ্ধ করেছে, তখনও বাংলাদেশ থেকে কওমিপন্থিদের একটি দল সেই যু’দ্ধে অংশ নিয়েছে। আর ৯০ দশকে তাদের হাত ধরেই বাংলাদেশে জ’ঙ্গি তৎপরতার উদ্ভব।

৯০ দশকে বিএনপি শাসনামলে জাতীয় প্রেস ক্লাবে রীতিমতো সংবাদ সম্মেলন করে হরকাতুল জিহাদ বাংলাদেশ-এর প্রতিষ্ঠা করা হয়।

১৯৯৬ সালে তা’লেবানরা কাবুল দখল করার সময়ও বাংলাদেশ থেকে একদল যোদ্ধা আ’ফগা’নিস্তানে যায়।

চলতি বছর যু’ক্তরাষ্ট্রের সে’নাবাহিনী আ’ফগা’নিস্তান ছেড়ে চলে যাওয়ার পরপরই দেশটি আবার তা’লেবানের দখলে চলে যাবে বলে আশ’ঙ্কা করা হচ্ছিল। দেশটির গোয়েন্দা সংস্থা আশ’ঙ্কা করছিল ৯০ দিনের মধ্যে এই ঘটনাটি ঘটবে। তবে তার আগেই পতন হলো কাবুলের। শুরুর দিকে ল’ড়াই হলেও গত কয়েক দিনে বিনা যু’দ্ধে আত্মসম’র্পণ করেছে সরকারি বাহিনী।

সংবাদটি শেয়ার করুন

Comments are closed.

নোটিশ : ডেইলি সিলেটে প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, আলোকচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও বিনা অনুমতিতে ব্যবহার করা বেআইনি -সম্পাদক

© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত

২০১১-২০১৭

সম্পাদকমন্ডলীর সভাপতি: মকিস মনসুর আহমদ
সম্পাদক ও প্রকাশক: খন্দকার আব্দুর রহিম, নির্বাহী সম্পাদক: মারুফ হাসান
অফিস: ৯/আই, ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি, ৯ম তলা, জিন্দাবাজার, সিলেট।
ফোন: ০৮২১-৭২৬৫২৭, মোবাইল: ০১৭১৭৬৮১২১৪
ই-মেইল: dailysylhet@gmail.com

Developed by: