cialis fiyat cialis sipariş http://umraniyetip.org/
Fapperman.com DoEscortscialis viagra viagra cialis cialis viagra cialis20mgsite.com geciktirici sprey azdırıcı damla
দিল্লির জাতিগত দাঙ্গা মামলায় গণহারে মুসলমানদের গ্রেফতার করা হচ্ছে। গ্রেফতার এড়াতে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন পুরুষরা। উত্তর পূর্ব ভারতের বিভিন্ন এলাকার পরিবারগুলো উপার্জনক্ষম ব্যক্তির অনুপস্থিতিতে মানবেতর দিন কাটাচ্ছে।
করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ রোধে জারি করা অবরোধ শিথিলের পর উত্তরপূর্ব দিল্লিতে স্বাভাবিক কর্মকাণ্ড শুরু হয়েছে। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে খাজুরি খাস লেনে সংঘটিত হয় নৃশংস জাতিগত দাঙ্গা। সেখানে এখনও সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা চলমান। বিরাজ করছে ভীতিকর পরিস্থিতি।
সাদাসিধে স্বভাবের মেহবুব আলমকে ২৭ নভেম্বর গ্রেফতার করা হয়। ২৯ বছর বয়সী এ যুবকের বিরুদ্ধে আনা হয় দাঙ্গায় জড়িত থাকার অভিযোগ। ভীতিকর পরিবেশ এবং গ্রেফতার আতঙ্কে মহল্লা ছেড়েছেন অনেক পুরুষ। ভিন এলাকায় আত্মগোপনে কেউ কেউ। কেউ ছেড়েছেন শহর। ২০টির বেশি পরিবারে কোনো পুরুষ সদস্য নেই। উপার্জনক্ষম এ ব্যক্তিদের উপর পুরো পরিবার নির্ভর করতো।
আলমকে গ্রেফতারের ঘটনা অতি সাম্প্রতিক। করোনা লকডাউন চলাকালে এবং এর আগেও গ্রেফতার কার্যক্রম অব্যাহত ছিল। এ আতঙ্কে প্রতিনিয়ত ঘর ছাড়ছেন মুসলমান পুরুষরা।
ভারতীয় গণমাধ্যম দ্য হিন্দু জানিয়েছে, সংঘাতে ক্ষতিগ্রস্ত উত্তর পূর্ব দিল্লির মুসলিম অধ্যুষিত এলাকাটি থেকে মার্চ থেকে মধ্য এপ্রিল পর্যন্ত ২৫ থেকে ৩০ জনকে দাঙ্গায় জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস জানায়, মোট গ্রেফতারের সংখ্যা ৮০২ জন। লকডাউন চলাকালে গ্রেফতার করা হয় ৫০ জনকে। তবে কিছু গণমাধ্যমে বলা হয়েছে, দাঙ্গায় জড়িতের অভিযোগে গড়ে প্রতিদিন ৬ থেকে ৭ জনকে গ্রেফতার করা হচ্ছে।
চলতি বছরের শুরুতে দিল্লি সংখ্যালঘু পরিষদ (ডিএমসি) দিল্লির পুলিশ কমিশনার এস এন শ্রীবাস্তবকে পাঠানো এক নোটিশে জানায়, উত্তর পূর্বাঞ্চলীয় জেলা থেকে প্রতিদিন ১২ থেকে ১৪ জন মুসলিম যুবককে গ্রেফতার করছে স্থানীয় পুলিশ কর্মকর্তারা। লকডাউনের পরও গ্রেফতার কার্যক্রম চলমান বলে পরবর্তীতে আরেক নোটিশে জানানো হয়।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, মুসলিম সম্প্রদায়কে চাপে রাখতে, গ্রেফতার কার্যক্রম চালিয়ে যেতে দাঙ্গার ভুয়া ভিডিও ব্যবহার করা হচ্ছে। গ্রেফতারের কারণে এলাকার বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্ক বাড়ছে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনে থাকা দিল্লি পুলিশের উদ্দেশ্য নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অনেকে। তাদের অভিযোগ, দাঙ্গায় জড়িত থাকার অভিযোগ তুলে সাধারণ মানুষকে গণহারে গ্রেফতার করছে পুলিশ।
‘আমি বিশ্বাস করি তিনি অন্তত বেঁচে আছেন’
ভারতীয় গণমাধ্যম নিউজক্লিকের সঙ্গে কথা বলেছেন পারভীন। গ্রেফতার এড়াতে ২০ দিন আগে ঘর ছাড়েন তার স্বামী। বলেন, আমাদের হারানোর কিছু নেই। তবুও আতঙ্ক তাড়া করছে। আমরা অনেক কিছু হারিয়েছি। আমাদের ঘর পর্যন্ত জ্বালিয়ে দেয়া হয়েছে। এখন হয়তো স্বামীকে সরিয়ে দেয়া হবে। ন্যায় বিচার পাবো না। পুলিশ হয়তো স্বামীর বিরুদ্ধে নিজের ঘর জ্বালিয়ে দেয়ার মিথ্যা মামলা দিতে পারে। জড়াতে পারে দাঙ্গায় জড়িত থাকার অপবাদে।
দাঙ্গায় ক্ষতিগ্রস্ত আরেক নারী রুবিনা (ছদ্মনাম)। বলেন, ২৫ ফেব্রুয়ারি আমি নিশ্চিত ছিলাম আমাদের মহল্লায় কোনো ঝামেলা হবে না। এখানে বিশৃঙ্খলাকারীরা প্রবেশ করতে পারবে না। কিন্তু, কি হলো? দাঙ্গা হয়েছে। জ্বালাও, পোড়াও, বহু মানুষ হতাহত হয়েছে। আমরা কাকে বিশ্বাস করবো? অন্যদের মতো আমার স্বামী গ্রেফতার হলে কি করবো? কোথায় যাবো? আমি তাকে ছাড়া বাঁচতে পারবো; কিন্তু মিথ্যে মামলায় এক ঘণ্টাও আমি তাকে জেলখানায় আটক দেখতে পারবো না।
স্থানীয় মসজিদ সম্প্রসারণ এবং আলমের গ্রেফতারের ঘটনায় উত্তেজনা বিরাজ করছে বলে ধারণা এলাকাবাসীর। পারভীন (ছদ্মনাম) বলেন, আমরা কোমায় আছি। না জীবিত, না মৃত। গেলো ২০ দিন ধরে আমার স্বামী আমাদের সঙ্গে নেই। স্বাভাবিক জীবন থেকে পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন বসবাস করছি। কোনো স্বস্তি নেই আমাদের মধ্যে।
২৫ ফেব্রুয়ারি দাঙ্গায় পারভীনদের তিনতলা ভবনটি পুড়িয়ে দেয়া হয়। বলেন, বাড়ি হারানোর পর অনেকে আমাদের প্রতি সহানুভূতি প্রকাশ করেছে। সহায়তা দিয়েছে। কিন্তু এখন, আমার স্বামী নেই। সত্যি কেউ খবর নেয় না; কতটা যন্ত্রণায় আমাদের দিন কাটছে। মানুষ হয়তো মনে করছে, আমরা স্বাভাবিক জীবনযাপন করছি। কোনো সহায়তা নেই; সহানুভূতি নেই।
‘বেঁচে থাকার জন্য খাবার কেনার অর্থ নেই’
এক বছর হতে চললো দাঙ্গার। ব্যাপকভাবে আর্থিক ক্ষতি হয়েছে। কিন্তু পুনরুদ্ধারে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। পরিবারগুলো ভাঙনের দ্বারপ্রান্তে। পুরুষরাই পরিবারগুলোর একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি। সন্তান লালনপালন এবং সংসার দেখভাল করেই জীবন পার করতেন নারীরা।
সায়রা (ছন্দনাম) বলেন, আমরা কেউ তেমন শিক্ষিত না। স্বামীদের ছাড়া আমাদের জীবনধারণ খুব কঠিন হয়ে যাচ্ছে। আমাদের পুরো জীবনধারা পরিবর্তন হয়ে গেছে। আমার তিন সন্তান। তারা সবাই ছোট ছোট। তাদের পড়াশোনার খরচ, খাবার কেনা, ইউটিলিটি বিল পরিশোধ করতে হয়। দাঙ্গার পর অবশিষ্ট যা সম্বল ছিল তাও শেষ। মহামারী এবং দাঙ্গা মোকাবিলা করে আমরা কোনো রকম বেঁচে আছি।
সায়রা বিয়ে করেছেন ১৫ বছর প্রায়। স্বামীকে ছাড়া কখনোই থাকেননি তিনি। তার প্রত্যাশা সবকিছু স্বাভাবিক হয়ে যাবে। তার স্বামী বাড়ি ফিরবে। বলেন, সংসার চালানোর জন্য আত্মীয়দের কাছ থেকে ধারদেনা করছি। মাঝে মাঝে এনজিওর দেয়া সহায়তার জন্য অপেক্ষা করে থাকি।
মহামারীর কারণে বিদ্যালয় বন্ধ। অনলাইন ক্লাস গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে। নারীরা একা হাতে সংসার সামলাচ্ছেন। শিশুদের বিদ্যালয়ের খরচ বহন তাদের জন্য কষ্টসাধ্য হয়ে যাচ্ছে। ‘স্কুলের ফি দিতে ব্যর্থ হলে, সন্তানদের অনলাইন ক্লাসে অংশ নিতে দেয়া হয় না। তারা জানে, আমরা কতটা কষ্টের মধ্যে আছি। বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এগুলো আমলেই নেয় না।’ বলছিলেন রুকশার। স্কুলের ফি দিতে না পারায় তার দুই সন্তানকে অনলাইন ক্লাস থেকে বহিষ্কার করেছে স্থানীয় ফারহান ইন্টারন্যাশনাল স্কুল।
বাড়ি ছেড়ে যারা আত্মগোপনে গেছেন, তাদের নিয়েও শঙ্কিত পরিবারের লোকজন। অধিকাংশ পুরুষ দিনভিত্তিক মজুরি খাটে। তাদের পরিবার এখন আত্মীয়ের উপর নির্ভরশীল। ‘যারা ঘর ছেড়েছে তারা কিভাবে দু’বেলা খাবার জুটাচ্ছে? আরো গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে তারা কোথায় আছে? কখন ফিরবে? কিছুই আমরা জানি না।’ বলেন পারভীন।
শিশুদের মিথ্যে সান্ত্বনা দিতে হচ্ছে
রুবিনা, আতিফা এবং কাউসার নিউজক্লিককে জানান, দুশ্চিন্তায় গেলো ১৫ দিন ধরে ঘুমাতে পারছেন না তারা। রুবিনার স্বামী রঙমিস্ত্রী। বলেন, বাচ্চাদের একলা রেখে ওয়াশরুমে যেতেও ভয় করে আমার। আগামীকাল আমার মেয়ের প্রথম জন্মবার্ষিকী। বাবাকে ছাড়াই মেয়ের জন্মদিন কাটবে।
আফিয়ার স্বামী ১৫ দিন হলো বাড়ি ছেড়েছে। পুলিশি গ্রেফতার এড়াতে বাড়ি ছাড়েন তিনি। আফিয়া বলেন, বাচ্চারা তাদের বাবার খবর জানতে চায়। আমি বলি, তাদের বাবা অসুস্থ। হাসপাতালে ভর্তি। মেয়েকে বলেছি, সুস্থ হলে তোমার বাবা ফিরে আসবে। সে পাল্টা প্রশ্ন করে, বাবা অসুস্থ, তুমি কেনো তাকে হাসপাতালে দেখতে যাও না? তখন আমরা কোনো উত্তর থাকে না।
উত্তর পূর্ব দিল্লির ওই এলাকায় সাম্প্রদায়িক দাঙ্গায় ৫৩ জন নিহত হয়। যাদের অধিকাংশই মুসলমান। উগ্রবাদী হিন্দুরা ওই দাঙ্গা বাঁধায়। দাঙ্গা থামানোর পরিবর্তে হামলাকারীদের সহযোগিতায় অংশ নেয় দিল্লি পুলিশ।সূত্র: নিউজক্লিক।