সর্বশেষ আপডেট : ২৭ সেকেন্ড আগে
রবিবার, ২৮ মে ২০২৩ খ্রীষ্টাব্দ | ১৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩০ বঙ্গাব্দ |

DAILYSYLHET
Fapperman.com DoEscorts

বড়লেখায় স্বেচ্ছাশ্রমে ১৫ কিলোমিটার রাস্তা প্রশস্তকরণ

  • আব্দুর রব, বড়লেখা

বড়লেখা উপজেলার নিজবাহাদুপুর ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দারা প্রায় ১৫ কিলোমিটার রাস্তা প্রশস্ত করতে স্বেচ্ছায় নিজেদের জমি ছেড়ে দিয়েছেন। শুধু জায়গাই ছাড়েননি, নিজেদের অর্থে ও শ্রমে তারা রাস্তাটি প্রশস্ত করছেন। এই কাজে শ্রমিকদের পাশাপাশি অংশ নিয়েছেন এলাকার নানা বয়সী মানুষ। বর্তমানে রাস্তাটির কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। এতে পাল্টে যাচ্ছে ওই এলাকার চিত্র।
সোমবার সরেজমিন গিয়ে দেখা গেছে, সরু রাস্তা বড় করার জন্য দুই পাশের মাটি কাটা হচ্ছে। ঝোঁপ-ঝাড় পরিস্কার করা হচ্ছে। কাটা হচ্ছে প্রশস্তকরণে প্রতিবন্ধতা সৃষ্টিকারী গাছ। শ্রমিকদের পাশাপাশি কাজে যোগ দিয়েছেন এলাকার নানা বয়সি মানুষ। কেউ স্বেচ্ছায় নিজের জায়গা ছেড়ে দিচ্ছেন। কেউ কেউ নিজের জায়গার মাটি নিজেই কেটে দিচ্ছেন।

জানা গেছে, উপজেলার নিজবাহাদুপুর ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের গল্লাসাঙ্গন গ্রামের মধ্য দিয়ে যাওয়া রাস্তাটি বড়লেখা-কুলাউড়া আঞ্চলিক মহাসড়কসহ উপজেলার অন্তত ৭টি গ্রামীণ রাস্তার সঙ্গে সংযুক্ত হয়েছে। এই সড়কের দৈর্ঘ্য প্রায় ১৫ কিলোমিটার। প্রতিদিন ওই রাস্তা দিয়ে নিজবাহাদুরপুর ইউনিয়ন পরিষদের পাশাপাশি বড়লেখা সদর, চান্দগ্রাম, দক্ষিণ শাহবাজপুর, উত্তর শাহবাজপুর এবং পাশের বিয়ানীবাজার উপজেলারসহ প্রায় ১০ হাজার মানুষ আসা-যাওয়া করেন। এছাড়া ছোট এই রাস্তা দিয়ে বিভিন্ন ধরনের যানবাহনও চলাচল করে। কিন্তু রাস্তাটি পাকা হলেও অনেকটা সরু আর ঝোঁপ-ঝাড়ে ঘেরা। এছাড়া রাস্তাটিতে রয়েছে ঘন ঘন বাঁক (টার্নিং)। এ কারণে পাশাপাশি দুটি গাড়ি চলাচল করতে পারে না। ফলে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটে। এতে ভোগান্তিতে পড়েন মানুষজন।

এ জনভোগান্তির কথা চিন্তা করে প্রায় মাসখানেক আগে এলাকার তরুণ তাহের খান, আজাদুর রহমান, আশরাফুল ইসলাম, নাহিদ আহমদ রাস্তাটি প্রশস্তের উদ্যোগ নেন। তারা নিজেদের মধ্যে প্রথমে আলোচনা করেন। পরে বিষয়টি এলাকার মানুষকে জানান। এতে এগিয়ে আসেন এলাকার লোকজনসহ স্থানীয় জনপ্রতিনিধি। এরপর সবাই মিলে রাস্তাটি বড় করার পরিকল্পনা নেন। পরিকল্পনা অনুযায়ী গত বছরের ডিসেম্বরের শেষের দিকে রাস্তাটির প্রশস্তকরণ কাজ শুরু হয়।

এলাকার তরুণ তাহের খান বলেন, ‘আমাদের গ্রামের রাস্তাটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ চলাচল করেন। এছাড়া বিভিন্ন ধরনের যানবাহনও চলাচল করে। কিন্তু রাস্তাটি অনেক ছোট। অনেক স্থানে ট্রানিং আছে। রাস্তার দুই পাশে ঝোঁপঝাড়ে ঘেরা। যার কারণে দুটি যানবাহন একসাথে চলতে পারে না। প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটে। এতে মানুষজন দুর্ভোগে পড়েন। জন দুর্ভোগের কথা চিন্তা করে আমরা চারজন রাস্তাটি বড় করারা উদ্যোগ নেই। বিষয়টি আমরা আমাদের এলাকার মেম্বারসহ স্থানীয়দের জানাই। পরে আমরা সবাই মিলে সভা করে রাস্তার কাজ শুরু করি। এতে এলাকার অনেক প্রবাসীরাও আমাদেরকে সহযোগিতা করেছেন।’

এলাকার বাসিন্দা আব্দুস শুক্কুর, শিক্ষক শফিক উদ্দিন, মুক্তিযোদ্ধা ফয়জুল হক, ইউসুফ আলী বলেন, ‘এলাকার কয়েকজন তরুণ প্রথমে রাস্তাটি বড় করার উদ্যোগ নেন। তারা বিষয়টি আমাদের জানায়। পরে আমরা আলেচনার মাধ্যমে রাস্তার কাজ শুরু করি। শ্রমিকদের পাশাপাশি প্রতিদিন আমরা সবাই মিলে রাস্তার কাজ করছি। ইতিমধ্যে অনেক কাজ শেষ হয়েছে। সবাই সবার জায়গা ছেড়ে দিচ্ছেন। গাছ কেটে দিচ্ছেন। রাস্তাটি এখন অনেক বড় হয়েছে। এখন এলাকাও সুন্দর হচ্ছে।’

এ ব্যাপারে স্থানীয় ইউপি সদস্য রশিদ আহমদ সুনাম জানান, ‘আমাদের এলাকার কয়েকজন তরুণ রাস্তাটি প্রশস্তের উদ্যোগ নেন। তাদের উদ্যোগে আমরা উদ্বুদ্ধ হয়ে রাস্তার কাজ শুরু করি। আগে রাস্তাটি অনেক ছোট ছিল। বিভিন্নস্থানে ট্রানিং রয়েছে। চলাচল অনেকটা ঝুঁকি ছিল। এখন রাস্তা বড় করায় ঝুঁকি কমেছে। মানুষজনের দুর্ভোগ কমেছে। এলাকাও অনেক সুন্দর হয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘রাস্তা প্রশস্তের কাজে এলাকার সবাই স্বতস্ফুর্তভাবে অংশ নিয়েছেন। কেউ কোনো বাঁধা দিচ্ছে না। রাস্তাটির দৈর্ঘ্য প্রায় ১৫ কিলোমিটার। ইতিমধ্যে প্রায় শতভাগ কাজ শেষ হয়েছে। কাজ শেষ হলে ওয়ার্ডের প্রবেশ মুখে ৪টি গেট নির্মাণ করা হবে। এলাকাবাসীর স্বেচ্ছাশ্রমে রাস্তার প্রশস্তকরণ কাজে ব্যয় হচ্ছে প্রায় ৫ লাখ টাকা।’

সংবাদটি শেয়ার করুন

Comments are closed.

নোটিশ : ডেইলি সিলেটে প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, আলোকচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও বিনা অনুমতিতে ব্যবহার করা বেআইনি -সম্পাদক

© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত

২০১১-২০১৭

সম্পাদকমন্ডলীর সভাপতি: মকিস মনসুর আহমদ
সম্পাদক ও প্রকাশক: খন্দকার আব্দুর রহিম, নির্বাহী সম্পাদক: মারুফ হাসান
অফিস: ৯/আই, ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি, ৯ম তলা, জিন্দাবাজার, সিলেট।
ফোন: ০৮২১-৭২৬৫২৭, মোবাইল: ০১৭১৭৬৮১২১৪
ই-মেইল: dailysylhet@gmail.com

Developed by: