cialis fiyat cialis sipariş http://umraniyetip.org/
Fapperman.com DoEscortscialis viagra viagra cialis cialis viagra cialis20mgsite.com geciktirici sprey azdırıcı damla
জালাল আহমদ:: পানি প্রবাহ কমে যাওয়া, নদীর তলদেশ ভরাট, ভরাট নদীর অংশ বেদখল হয়ে যাওয়ার কারণে মৌলভীবাজার জেলার ১৪টি নদী ক্রমশ বিপন্ন হতে চলেছে। এক সময়ের খরস্রোতা বরাক ও লংলা এবং শাখা নদী কচুয়ারখাড়া এখন রীতিমত হারিয়ে গেছে। উজানে স্লইস গেইট নির্মাণের কারণে জেলার প্রধান মনু নদীর ভাটির অংশ এখন ধূ ধূ বালুচর। রাবার ড্যামের কারণে বিপন্ন গোপলা নদী। বহু নদী মরা খালে পরিণত হয়েছে। ফলে এর প্রভাব পড়ছে মৌলভীবাজারের কৃষি জমিসহ মানুষের জীবনযাত্রায়। হুমকির মুখে পড়েছে পরিবেশ।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, খরস্রোতা নদী ও শাখা নদীর মধ্যে রাজনগরের লাঘাটা ও উদনা নদী, শ্রীমঙ্গলের বিলাস ও করাঙ্গি নদী, কমলগঞ্জের লাঘাটা নদী, বড়লেখা, কুলাউড়া এবং জুড়ীর মধ্য দিয়ে প্রবাহিত কন্টিনালা নদী, ফানাই ও জুড়ী নদী, বড়লেখার সোনাই নদী, কানলী, মৌলভীবাজারের গোপলা নদী, বরাক ও কচুয়ারখারা নদী বিপন্ন হয়ে গেছে। ধলই নদী ও মনু নদীর তলদেশ ভরাট হয়ে গেছে। তন্মধ্যে মৌলভীবাজারের মাতারকাপনের কাছে বাঁশতলা এলাকায় স্লুইস গেইটের কারণে মনু নদীর ভাটি অংশ শুষ্ক মৌসুমে মরে গেছে। জেগে উঠেছে ধূ ধূ বালুচর।
সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, মৌলভীবাজার সদর উপজেলার খলিলপুর ইউনিয়নের ফতেপুর ও নাসিরপুর গ্রামের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া এক সময়ের খরস্রোতা বরাক নদীকে এখন আর খোঁজে পাওয়া যায় না। রীতিমত একটি খালে পরিণত হয়েছে। এ নদী ভরাট হয়ে পানি প্রবাহ বন্ধ হয়ে গেছে। বিভিন্ন স্থানে এখন লাফ দিয়ে এ নদী পাড় হওয়া যায়। নদীর ভরাট ভূমি স্থানীয় প্রভাবশালীরা জবরদখল করে কোথাও কেউ কেউ ঘরবাড়ি তৈরি করেছে, আবার কোথাও হালি চারা, সবজির ক্ষেতে পরিণত করা হয়েছে। যে যার মতো পারে নদীর ভূমি দখলে নিয়ে ব্যবহার করছে। এমনও আছে, ভরাট হওয়া নদীর কোন কোন স্থানে মাটি ভরাট করে কাঁচা-পাকা ঘরবাড়ি নির্মাণ করে রীতিমত বসবাস করছে অনেকে। অথচ এখন থেকে ১৫-২০ বছর আগে এ নদীটি অনেক গভীর ছিল। এ নদীপথে নৌকা চলাচল করতো। ১৯৯১-৯৩ সালের দিকে এ নদীতে প্রায় ৩ কোটি টাকা ব্যয়ে দীর্ঘ সেতু নির্মাণ করা হয়েছিল। নদীপাড়ের বাসিন্দা আকমল মিয়া (৪০), রহিম উদ্দিন (৫০) জানালেন, দীর্ঘ দিন নদীটি খনন না করায় এ নদীতে চর জেগেছে। পরে দখলের তা-বে এখন বরাক নদীটি হারিয়ে গেছে। এছাড়া ক্রসবর্ডার রিভার মৌলভীবাজারের লংলা নদী হরিয়ে গেছে। এখন আর এ নদীকে খোঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। এটি রীতিমত ছোট খালে পরিণত হয়েছে। ভরাট অংশের দখল নিয়েছে পাশ্ববর্তী জমির প্রভাবশালী মালিকরা।
কেবল বরাক নয়, হারিয়ে যাওয়ার তালিকাযুক্ত হয়ে হারিয়ে গেছে গোপলা নদীর শাখা নদী কচুয়ারখাড়া। কাগাবলা এলাকার এ নদীতে এখন ধান চাষ হয়। চাষাবাদের জন্য জেলার পশ্চিমাঞ্চলের গোপলা এবং পূর্বাঞ্চলের কন্টিনালা নদীতে রাবার ড্যাম নির্মাণ করা হলেও এগুলো নদী দু’টিকে বিপন্ন করে তুলেছে। তলদেশ ভরাট হয়ে গোপলা নদীর পানি প্রবাহ কমে যাওয়ায় কাগাবলা বাজার থেকে ভাটি অংশ শুকিয়ে গেছে। যদিও সম্প্রতি পৌরসভা কর্তৃপক্ষ এটির খনন করেছে। তবুও এর মারাত্মক প্রভাব পড়েছে ভাটি অঞ্চলের বিজনা নদীতে। বিজনা নদী মৌলভীবাজার জেলার পশ্চিম সীমান্ত থেকে শুরু হয়ে হবিগঞ্জ জেলার মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। নদীর তলদেশ ভরাট এবং পানি প্রবাহ কমে যাওয়ায় বিপন্ন অবস্থায় রয়েছে জেলার অন্যতম নদী ধলই, ফানাই ও কন্টিনালা।
এদিকে মৌলভীবাজার জেলার উত্তর সীমান্ত ঘেঁষে বয়ে যাওয়া কুশিয়ারা নদীটিরও নাব্যতা কমে গেছে। কুশিয়ারার তলদেশ ভরাট হওয়ার কারণে গত বর্ষা মৌসুমে দেশের সর্ববৃহৎ হাওর হাকালুকি এবং ইরিগেশন প্রকল্পভুক্ত রাজনগরের কাউয়াদিঘী হাওরে দীর্ঘ জলাবদ্ধার সৃষ্টি হয়। শ্রীমঙ্গলের বিলাস নদীটির কিছু অংশ এখন মৎস্য খামারের অংশে পরিণত হয়েছে।
সরেজমিন আরও দেখা গেছে, দু’দিকে গড়ে ওঠা মৎস্য খামারের মালিকরা যে যার মতো নিজেদের প্রকল্পের ভেতর ঢুকিয়েছে নদীর ভূমি। নদীতে স্থানে স্থানে বাঁধ দিয়ে পানি প্রবাহ বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। সরকারি কর্তৃপক্ষের অনুমতি না নিয়েই এক মৎস্য খামারের মালিক বিলাস নদীর ওপরে স্থাপন করেছন পাকা কালভার্ট। ফলে অস্তিত্ব সংকটে নদীটি। পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাদের সাথে আলাপকালে জানা গেছে, বর্ষাকালে উজান থেকে স্রোতের সঙ্গে বিপুল পরিমাণ পলি মাটি ও বালি এসে থাকে। এসব পলি-বালি নদীর তলদেশে জমে গিয়ে নদী ধীরে ধীরে ভরাট হয়েছে। এখন এসব নদী খনন ছাড়া আর আগের অবস্থায় ফিরিয়ে নেয়া সম্ভব নয়। কিন্তু এসব নদী ড্রেজিংয়ের কোন প্রকল্প সরকারের হাতে নেই। নদীর তলদেশ ভরাট হওয়ার কারণে একদিকে শুষ্ক মৌসুমে পানি প্রবাহ কমছে অন্যদিকে বর্ষায় বন্যার আশংকা বাড়ছে। মনু নদীর পানি প্রবাহ মারাত্মকভাবে কমে যাওয়ায় ৯০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত মনু নদী প্রকল্প তেমন কাজে আসছে না স্থানীয়দের। এ প্রকল্পের খাল দিয়ে পানি সরবরাহে জটিলতার কারণে প্রকল্প এলাকায় লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী ৩০ হাজার একর জমিতে পানি সেচ দিয়েও পৌঁছানো যাচ্ছে না। ধলাই নদী ভরাট হয়ে যাওয়ার কারণে কমলগঞ্জ উপজেলার ৫৮ হাজার একর জমিতে সেচ সুবিধা প্রদানের লক্ষ্যে ৩৫ কোটি টাকার প্রস্তাবিত প্রকল্পটিও বাস্তবায়িত হয়নি অদ্যাবধি।
অপরদিকে জেলার কণ্টিনালা, জুড়ী ও ফানাই নদীটিও ভরাট হয়ে গেছে অনেকাংশে। পাড় দখল করে বাড়িঘর নির্মাণ করা হয়েছে। তলদেশ ভরাট হওয়ায় বর্ষা মৌসুমে বন্যার আশংকা তাড়া করছে সর্বদা বাসিন্দাদের মাঝে। একই অবস্থা বড়লেখার সোনাই নদীতেও। এ নদীটি এখন মরা সোনাইয়ে পরিণত হয়েছে। দখল হয়ে গেছে শাখা খালগুলো। অনেক স্থানে ভরাট করে নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নেওয়া হয়েছে। শাখা নদী ও খাল দখল করে ফেলা হয়েছে অনেক আগেই। পৌর শহরের অভ্যন্তর দিয়ে বয়ে যাওয়া ষাটমা ছড়াও দখল হয়ে গেছে। খননের অভাবে প্রতি বর্ষা মৌসুমে পৌর এলাকার বাসিন্দা থেকে শুরু করে ব্যবসায়ীরা কৃত্রিম জলাবদ্ধতার শিকার হন। ষাটমা ছড়া দখল করে দু’ধারে গড়ে তোলা হয়েছে বসতবাড়ি ও ব্রিজ-কালভার্ট। শাহবাজপুরের দৌলতপুরে অবস্থিত কানলী নদীও অনেকটা ভরাট হয়ে গেছে।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে বড়লেখা উপজেলা নির্বাহী অফিসার সুহেল মাহমুদ জানান, শীঘ্রই দখলকারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মৌলভীবাজারের জেলা প্রশাসক তোফায়েল ইসলাম জানান, নদীপাড় কেউ দখল করে থাকলে খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেয়া হবে। নদীগুলো ড্রেজিংয়ের ব্যাপারে সংশি¬ষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে আলাপ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।