সর্বশেষ আপডেট : ১৯ ঘন্টা আগে
শুক্রবার, ৮ ডিসেম্বর ২০২৩ খ্রীষ্টাব্দ | ২৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩০ বঙ্গাব্দ |

DAILYSYLHET
Fapperman.com DoEscorts

কমলগঞ্জে বন্যা আতংকে ধলাই পাড়ের মানুষ, মাটি যাচ্ছে ইটভাটায়

পিন্টু দেবনাথ, কমলগঞ্জ:: প্রতিবছর বন্যায় ধলাই নদীর বাঁধ ভেঙ্গে ব্যাপক ক্ষতি সাধিত হয়। এ ক্ষতি পুষিয়ে উঠতে ধলাইপাড়ের মানুষ নানা কষ্ট ও ভোগান্তি পেতে হয়। ধলাই নদীর বাঁধ থেকে ইটভাটার জন্য প্রভাবশারীরা অবৈধভাবে মাটি নিচ্ছেন। মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার উপর দিয়ে প্রবাহিত ধলাই নদীর পাড়ের মাটি অবৈধভাবে যাচ্ছে ইটভাটায়। কোন নিয়মের তোয়াক্কা না করে স্থানীয় প্রভাবশালীরা নদীর পাড় কেটে এসব মাটি বিক্রি করছেন বিভিন্ন ইটভাটায়। এতে চরম হুমকির মুখে পড়েছে ধলাই নদীর প্রতিরক্ষা বাঁধ। উপজেলার বিভিন্ন ইটভাটার মালিক স্থানীয় প্রভাবশালীদের মাধ্যমে এসব মাটি নিয়ে যাচ্ছে ভাটায়।

স্থানীয় লোকজন অভিযোগ করে বলেন, কমলগঞ্জ উপজেলার ৩নং মুন্সিবাজার ইউনিয়নের সুরানন্দপুর-কুমারটেকি এলাকার নদী পাড় কাটছেন প্রভাবশালী গফুর মিয়া, মনা চৌকিদার, মখাই মিয়া গংরা প্রতিবছর ধলাই নদীর পাড়ের মাটি কেটে বিক্রি করেন। এবছরও ধলাই নদীর পাড় কেটে মাটি নেওয়া হচ্ছে বিভিন্ন ব্রিকস ফিল্টে। আর ট্রাক্টরে করে এসব মাটি আনা-নেওয়ার ফলে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে গ্রামীণ রাস্তা ও বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ। এলাকাবাসী এ কাজে অনেক বার বাঁধা দিলেও তাতে কোনো কাজ হয়নি। বরং বিভিন্নভাবে নেতাদের নাম ভাংগিয়ে তাদের ভয় দেখিয়ে ধমিয়ে রাখা হচ্ছে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, মাটি কাটার মেশিন দিয়ে ও কোদাল দিয়ে নদীর পাড় খনন করে মাটি নেওয়া হয়েছে ইটভাটায়। প্রতিরক্ষা বাঁধ কেটে তৈরি করা হয়েছে মাটিবাহী গাড়ি চলাচলের রাস্তা। ভারী ওজনের মাটিবাহী ট্রাক ও ট্রাক্টরের চলাচলে রাস্তার বিভিন্ন স্থানে গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। গাড়ি চলাচল করায় রাস্তার ধুলাবালিতে এলাকাবাসী বিপাকে পড়েছেন। এলাকাবাসী জানান, নদী পাড়ের মাটি কাটার ফলে বন্যার সময় দ্রুত পানি এসে প্রতিরক্ষা বাঁধে আক্রমণ করবে। তাদের মাটির গাড়ি চলাচলে যে ক্ষতি হচ্ছে তাতে বাঁধ ভেঙে যেতে পারে। এতে আশপাশের প্রায় অর্ধশত গ্রাম প্লাবিত হতে পারে।

ভুক্তভোগী এলাকার বাসিন্দারা বলেন, আমরা বারবার নিষেধ করার পরও তারা কোনো কথা শুনছে না। বন্যা হলে বাঁধ ভাঙার আতঙ্কে থাকি। এর জন্য দায়ী এই অসাধু মাটি বিক্রেতা ও ক্রেতারা। এবার যেভাবে বন্যা হয়েছে, আগামী বছর যদি এভাবে বন্যা হয়, তাহলে ভাঙন নিশ্চিত। মাটি বিক্রেতা গফুর বলেন, প্রতিবছর মাটি বিক্রি করছি এতে কোন সমস্যা হচ্ছেনা। স্থানীয় ইউপি সদস্য সুমন মল্লিক বলেন, এব্যাপারে এলাকাবাসী প্রতিবাদ করেছেন। আমি নিজেও অনেক ফরিয়াদি হয়েছি কোন সফলতা আসেনি।

পরিবেশ সাংবাদিক ফোরাম, মৌলভীবাজার এর সাধারণ সম্পাদক নুরুল মোহাইমীন মিল্টন বলেন, জমির উর্বর মাটি চলে যাওয়ায় এমনিতেই কৃষির ক্ষতি বয়ে আনছে। এর পাশাপাশি ইটভাটার ধোঁয়া এবং নদী পারের মাটি কেটে নেয়ায় পরিবেশের মারাত্মক বিপর্যয় ও এলাকার জন্য হুমকির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড, মৌলভীবাজার এর নির্বাহী প্রকৌশলী নরেন্দ্র শংকর চক্রবর্ত্তী জানান, নদী পাড়ের মাটি কাটা বা বিক্রি করা সম্পূর্ণ অবৈধ। নদীর পাড় ক্ষতিগ্রস্থ হলে প্রতিরক্ষা বাঁধে তার প্রভাব পড়বে। এভাবে মাটি কাটা সম্পুর্ণ নিষেধ। এ ব্যাপারে কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ মাহমুদুল হক বলেন, এ বিষয়টি আমার জানা নাই, তবে খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

 

 

সংবাদটি শেয়ার করুন

Comments are closed.

এ বিভাগের অন্যান্য খবর

নোটিশ : ডেইলি সিলেটে প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, আলোকচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও বিনা অনুমতিতে ব্যবহার করা বেআইনি -সম্পাদক

© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত

২০১১-২০১৭

সম্পাদকমন্ডলীর সভাপতি: মকিস মনসুর আহমদ
সম্পাদক ও প্রকাশক: খন্দকার আব্দুর রহিম, নির্বাহী সম্পাদক: মারুফ হাসান
অফিস: ৯/আই, ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি, ৯ম তলা, জিন্দাবাজার, সিলেট।
ফোন: ০৮২১-৭২৬৫২৭, মোবাইল: ০১৭১৭৬৮১২১৪
ই-মেইল: dailysylhet@gmail.com

Developed by: