cialis fiyat cialis sipariş http://umraniyetip.org/
Fapperman.com DoEscortscialis viagra viagra cialis cialis viagra cialis20mgsite.com geciktirici sprey azdırıcı damla
নিউজ ডেস্ক::
বাংলাদেশে ২০১৭ সালে ১৪টি ছেলে শিশু ধর্ষণ ও যৌন নির্যাতনের শিকার হয়েছে বলে খবর এসেছে। বছর জুড়ে ১০ টি সংবাদমাধ্যমের খবর পর্যবেক্ষণ করে এই তথ্য দিচ্ছে শিশু অধিকার ফোরাম।
যদিও শিশু অধিকার সংগঠনগুলো মনে করে বাস্তবে এর সংখ্যা আরো অনেক বেশি। কিন্তু ছেলে শিশুদের যৌন নির্যাতনের বিষয়টি বাংলাদেশের সমাজে বা দেশের আইনে একেবারেই গুরুত্ব পাচ্ছে না। অথচ এমন ঘটনা সমাজে ঘটছে।
ঢাকার একটি আবাসিক এলাকায় কথা হচ্ছিলো ত্রিশোর্ধ এক যুবকের সাথে। তিনি বলছেন একের অধিকবার বার তিনি এমন ঘটনার শিকার। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই যুবক বলেন,‘আমার বয়স তখন আট। আমরা যে বাসায় থাকতাম তার দোতলায় একটি ছেলে থাকতো। সে প্রায়ই আমাকে সিঁড়িতে চেপে ধরত। দুই পায়ের মাঝখানে হাত দিতো। আমার খুবই খারাপ লাগতো।’
তিনি ছোটবেলায় খুব দুষ্টুমি করতেন। তাকে মনোযোগী করতে বাবা-মা তার জন্য একজন গৃহশিক্ষক রেখেছিলেন। তার দ্বারাই ভয়াবহ অভিজ্ঞতার শিকার হয়েছেন এই ব্যক্তি।
`আমার জীবনের সবচাইতে ভয়াবহ অভিজ্ঞতাটি হয় আমার বয়স যখন ১২ বছর তখন। আমার বাবা মা আমার জন্য একজন গৃহশিক্ষক রেখেছিলেন, কারণ আমি পড়াশুনো করতে চাইতাম না। তাকে খুব মেধাবী বলে মনে করা হতো। সে আমাদের বাসায় থেকেই আমাকে পড়াতো এবং আমার সাথে এক ঘরেই তাকে থাকতে দেয়া হয়েছিলো। একদিন রাতে হঠাৎ টের পেলাম আমার সারা শরীরে কারোর হাত।’
বাকি কথাটুকু বলতে গিয়ে বেশ কিছুক্ষণ চুপ করে ছিলেন তিনি। এর পর তিনি যা বললেন তার মর্ম হল ঐ গৃহ শিক্ষক তার উপর টানা তিনমাস নানা ধরনের যৌন নির্যাতন চালিয়েছে। ধর্ষণের শিকারও হয়েছেন তিনি। কিন্তু সেটি তিনি বাবা মায়ের কাছে একেবারেই বলতে পারেন নি। ‘দুষ্ট’ বালক গৃহ শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনছে তাই পাছে যদি তার কথা কেউ বিশ্বাস না করে সেই ভয়ে। বয়স ৩০ হওয়ার পরই তিনি নিজের কষ্টের কথা কেবল বন্ধুদের কাছে শেয়ার করেছেন।
কিন্তু বাবা-মা বিষয়টি কখনো বুঝতেও পারেননি যে তাদের ছাদের নিচেই ছেলের উপর কি ভয়াবহ অন্যায় ঘটে গেছে।
অভিভাবকেরা ছেলে সন্তানদের যৌন নির্যাতনের বিষয়টি নিয়ে কতোটা চিন্তা করেন – সেটি বুঝতে আমি কথা বলছিলাম ধানমন্ডিতে এক মায়ের সাথে।
খুব অল্প কদিন বাদেই তার মেয়েটি কিশোরী হয়ে উঠবে। সাড়ে সাত বছর বয়সী একটি ছেলেও রয়েছে তার।
তিনি বলছিলেন, ‘আমার মেয়েকে নিয়ে আমি ওর খুব কম বয়স থেকেই উদ্বিগ্ন। যখন ও খুব ছোট ছিল তখন কেউ কোলে নিলে তাকিয়ে থাকতাম। আট সাড়ে আট হওয়ার পর থেকেই ওকে শেখাতে শুরু করলাম ক্লাসের বড় কোন ভাইয়া, কোন ছেলে টিচার বা এরকম কেউ যদি তোমাকে কোথাও একা ডাকে, যাবে না। মুখের ওপর বলে দিও যে মা বারণ করেছে। কিন্তু ছেলের বেলায় এমন চিন্তা আমার মাথায় কখনো আসেনি বা এখনো আসে না।’
জানতে চেয়েছিলাম ছেলে বাচ্চাকে নিয়ে তিনি কেন চিন্তা বোধ করেন নি?
তিনি বললেন, ‘এটা হয়ত কোন সামাজিক বিষয়। হয়ত মানসিক বিষয়ও হতে পারে। যেহেতু আমরা শুনি মেয়েরাই এই ঘটনার শিকার হয়। আমার ছেলের ক্ষেত্রে কেউ তুলে নিয়ে যাবে, হয়ত এমন ভেবেছি কিন্তু সেক্সুয়াল কিছু কখনো ভাবি নি।’
তার মানে ছেলেরা যে যৌন নির্যাতনের শিকার হয় সেটি নিয়ে সেভাবে ভাবছেই না বাংলাদেশের লোকজন। এ নিয়ে বাংলাদেশে তেমন কোন গবেষণা নেই। কিন্তু ঘটনার খবর নানা সময়ে সংবাদমাধ্যমে আসছে।
২০১৭ সালে এমন অন্তত ১৪ টি ঘটনার খবর সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। মানবাধিকার সংগঠনগুলো মনে করে সংখ্যাটি এর চেয়ে আরো অনেক বেশি হবে।
আইন ও সালিশ কেন্দ্রের শিশু অধিকার ইউনিটের প্রধান মকসুদ মালেক। তিনি একই সাথে একজন মনোরোগ চিকিৎসকও। তিনি বলছেন ছেলে শিশু যৌন নির্যাতনের শিকার হয় না, সেটি নিয়ে সামাজিক ধারনা আগে ভাঙা দরকার।
তিনি বলছিলেন, ‘ছেলে হোক, মেয়ে হোক তারা একটা সামাজিক ধারণা নিয়ে বড় হয়। যেমন প্রথমত হল এই ধারণা তার মধ্যে থাকে না যে ছেলে শিশু যৌন নির্যাতনের শিকার হতে পারে। সেই মেসেজটা ছেলে শিশুর কাছে আছে। আর ধরেই নেয়া হয় নির্যাতনের শিকার মেয়েরাই হয়।’
তার মতে এই ধারণা আসলে মিথ্যা। তিনি বলছেন, ‘আমাদের সমাজে মায়েরা মেয়েদের শেখায় কোনটা খারাপ স্পর্শ কিন্তু ছেলেটাকে কেউ শেখায় না। এই পুরো বিষয়টা আমাদের ভাঙা দরকার। ছেলে শিশু হোক বা মেয়ে শিশু দুজনেই কিন্তু সমান ভালনারেবল। সবাইকে জানানো উচিত যে আপনার ছেলে শিশুটিও যে কোন সময় ভালনারেবল হতে পারে।’
মকসূদ মালেক বলছেন, ৮৫ শতাংশ ক্ষেত্রেই কাছের কারো যেমন আত্মীয়, শিক্ষক, পারিবারিক বন্ধু ও প্রতিবেশীদের দ্বারাই শিশুরা যৌন নির্যাতনের শিকার যে। ছেলেদের ক্ষেত্রেও তার কোন ব্যতিক্রম নেই।
মকসূদ মালেক বলছেন দরিদ্র ছেলে শিশুরা একটু বেশি ঝুঁকিতে থাকে। তিনি পথ শিশুদের নিয়ে তাদের নিয়মিত কাজ করেন। সেখানে ছেলেদের মধ্যে এই ধরনের ঘটনা তারা মাঝে মধ্যেই পান। তিনি বলছেন তাদের সাথে মেয়ে শিশুদের মানসিক ট্রমার কোন তফাত নেই। বরং ছেলেদের বাড়তি চাপের মধ্যে দিয়ে যেতে হয়।
মি: মালেক বলছেন, ‘ট্রমা যখন সংজ্ঞায়িত করা হয় তখন সেটি ছেলে বা মেয়েদের জন্য আলাদা করে বলা হয়না। এর কনসেকোয়েন্স সবার জন্যেই একই রকম। তার ফ্ল্যাসব্যাক হতেই পারে, ডিপ্রেশন, ফোবিয়া, উদ্বেগ হতেই পারে। নির্যাতনের শিকার ছেলে শিশুর মধ্যে এই বিষয়গুলো কিন্তু থাকবেই। মানুষ হিসেবে তার শরীর, মন, আচরণ, বিশ্বাস ও কাজের ক্ষেত্রে অবশ্যই প্রভাব ফেলবে। ছেলে বলে তাতে কোন ভিন্নতা নেই। সে একই ভাবে সাফার করবে।’
একই সাথে তিনি নিজেই বলছেন মানবাধিকার ও উন্নয়ন সংস্থাগুলো কিশোরী ও মেয়ে শিশুদের নিয়েই কাজ করে। ছেলে শিশুদের যৌন নির্যাতনের বিষয়টি তারাও কখনো বিবেচনায় আনে না।
এই প্রতিবেদনটি তৈরি করতে শিশুদের নিয়ে কাজ করে এরকম দশটি সংস্থার সাথে যোগাযোগ করা হয়েছে। কিন্তু তাদের ছেলেদের নিয়ে কোন ধরনের কাজ পাওয়া যায়নি। বাংলাদেশে মাত্র একটি গবেষণা পাওয়া গেছে যদিও সেটি হয়েছে খুব স্বল্প পরিসরে এবং একটি শিক্ষার্থীদের তৈরি সংগঠনের দ্বারা।
নিরাপদ শৈশবের উদ্দেশ্যে বা নিশু নামের এই সংগঠনটি ঢাকা ও সাতক্ষীরায় ৯ টি স্কুলে এক জরিপ চালায়। সেখানে তারা ১২শ শিশুর সাথে কথা বলেছে। তাতে দেখা যাচ্ছে, প্রতি দশজনের একজন ছেলে যৌন নির্যাতন বা অশোভন আচরণের শিকার হয়েছে বলে জানিয়েছে।
কিন্তু কেন বাংলাদেশে সমাজে বিষয়টি নিয়ে খুব একটা কথা হয় না? এ প্রশ্নের জবাবে সমাজবিজ্ঞানী এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সাদেকা হালিমা বলছেন, ‘যুগে যুগে আমরা এটাই দেখে এসেছি নারী পুরুষের মধ্যে যে বৈষম্য রয়েছে সেটি আরো শক্তিশালী করার জন্য যৌন নির্যাতনকে একটি হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা হয়। ধর্ষণ যৌন নির্যাতনের মধ্যে সর্বোচ্চ একটি ধরন। এর মাধ্যমে নারীকে নিয়ন্ত্রণ করা হয়। আর সেটা করে পুরুষ। কিন্তু আমাদের সমাজে আমরা যে বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে চাইনা সেটি হল নারী শিশুকেই শুধু ব্যবহার করা হয়না। পুরুষ শিশুকেও যৌন আকাঙ্ক্ষা হাসিল করার জন্য বা যৌন উত্তেজক ছবির জন্য ব্যবহার করা হচ্ছে।’
ছেলে শিশুদের যৌন নির্যাতন নিয়ে কথাবার্তা বলার ক্ষেত্রে এমন সামাজিক অনীহার কারণে এমন ঘটনা ঘটলেও সেটির বিচার একদমই হচ্ছে না।
কারণ বাংলাদেশের প্রচলিত আইনে পুরুষের বা ছেলে শিশুর বিরুদ্ধে যৌন নির্যাতন সম্পর্কে কিছুই বলা নেই, বলছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাধ বিজ্ঞানের শিক্ষক খন্দকার ফারজানা রহমান।
তিনি বলছেন, ‘যদি স্পষ্ট করে বলতে চান পুরুষের বিরুদ্ধে সেক্সুয়াল হ্যারাসমেন্ট হলে তার শাস্তি কি? এইভাবে বাংলাদেশে কোন আইন নেই। পুরুষকে ভিক্টিম করার জন্য কোন শাস্তি বাংলাদেশে এখনো দেয়াও হয়নি।’
তার কাছে প্রশ্ন রেখেছিলাম এর মানে কি কোন ছেলেকে যদি কেউ যৌন নির্যাতন করে বা ধর্ষণ করে সেটি কি আদৌ ধর্ষণ হিসেবে বিবেচিত হয়?
তিনি বলছেন, ” না……বাংলাদেশে প্রচলিত আইনে রেপ বা যৌন নির্যাতনের যে ক্রাইটেরিয়া সেখানে দেখা যাচ্ছে প্রতিটি যায়গাতেই নারী ও মেয়েদের কথাই বলা আছে”।
বাংলাদেশে শিশুদের প্রতি নির্যাতন প্রতিরোধে যে আইন রয়েছে তার নাম নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন। সেখানে শিশুর প্রতি যৌন নির্যাতনের শিকার হিসেবে শুধু কন্যা শিশুর কথাই বলা হয়েছে।
তাদের কথা মাথায় রেখেই এমন নির্যাতনকে সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে।
এর বিচার ও শাস্তির কথাও বলা হয়েছে শুধু নারী ও কন্যা শিশুদের কথা মাথায় রেখেই। যদিও পাশের বাড়ির ছেলেটি তার থেকে কম বয়সী কোন বালকের দু পায়ের মাঝখানে চেপে ধরার ঢের নমুনা বাংলাদেশে পাওয়া যাবে। অথবা শিক্ষক বা আত্মীয়র কাছে ধর্ষণের খবর।
কিন্তু ছেলে শিশুদের যৌন নির্যাতনের বিচারের বিষয়টি নিয়ে বাংলাদেশে ব্যাপক ধোঁয়াশা রয়েই গেছে। বরং ছেলে বা কোন পুরুষ যৌন নির্যাতনের শিকার হলে তা নিয়ে কথা বললে উল্টো তাকে হাসির পাত্র হতে হচ্ছে।
বাড়তি ঝুঁকিতে থাকে গরীব ছেলে শিশুরা
সূত্র: বিবিসি