আন্তর্জাতিক ডেস্ক:: ভারতের লোকসভা নির্বাচনের ৬ মাস বাকি। নির্বাচনে প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতে দুর্নীতি কৌশল নিয়ে মাঠে সরব হয়েছে নরেন্দ্র মোদির সরকার। নির্বাচনকে সামনে রেখে পশ্চিমবঙ্গের তিনটি চাঞ্চল্যকর আর্থিক দুর্নীতি মামলার তদন্তে গতি বাড়িয়েছে ক্ষমতাসীন বিজেপি সরকার।
ভারতের দুই কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা সিবিআই ও ইডি (এনফোর্সমেন্ট ডাইরেক্টরেট) এগুলো তদন্ত করছে। দুটি সংস্থাই কেন্দ্রীয় সরকারের অধীন। নির্বাচনে বিরোধী দল তৃণমূল কংগ্রেসের নেত্রী মমতা ব্যানার্জিকে বেকায়দায় ফেলতে দুর্নীতি তদন্ত দিয়ে দলটির নেতাদের কুপোকাত করতে চাইছে মোদি সরকার। খবর এএনআই নিউজ ও টাইমস অব ইন্ডিয়ার। রোজভ্যালি আর্থিক দুর্নীতি মামলা আবারও সচল করা হয়েছে।
এ মামলায় জেরা করতে দুই সংসদ সদস্য তাপস পাল ও সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়কে কলকাতা ইডি অফিসে হাজির হওয়ার জন্য মঙ্গলবার নোটিশ পাঠানো হয়েছে। বৃহস্পতিবার তাপস পালকে হাজির হতে হবে আর শুক্রবার সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়কে।
ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে রাজনৈতিক বিবাদ রয়েছে পশ্চিমবঙ্গের তৃণমূল কংগ্রেসের।মোদি সরকারকে আগামী বছরের নির্বাচনের মাধ্যমে দেশ থেকে বিতাড়িত করার শপথ নিয়ে মাঠে নেমেছে তৃণমূল কংগ্রেস।
অন্যদিকে পশ্চিমবঙ্গে মমতাকে ঘায়েল করতে বিজেপিও রাজনীতির মাঠে নানা কৌশল খাটিয়ে যাচ্ছে।লোকসভা নির্বাচনে পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূল ঘাঁটিতে হানা দিতে চায় বিজেপি।পশ্চিমবঙ্গের ৪২টি লোকসভা আসনের মধ্যে বিজেপির রয়েছে মাত্র দুটি আসন।তাই রাজনীতির মাঠে তৃণমূলকে ধরাশয়ী করতে দলীয় এমপিদের ঠিকুজি খুঁজে দেখছে কেন্দ্রীয় সরকার।
রোজভ্যালি হোটেল, রোজভ্যালি এন্টারটেইনমেন্ট ও রোজভ্যালি রিয়েল এস্টেট মামলায় দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছিল দুই তৃণমূল সংসদ সদস্য তাপস পাল ও সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে। এ মামলায় রোজভ্যালির ১৭ হাজার ৫২০ কোটি রুপি আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে। রোজভ্যালির চেয়ারম্যান গৌতম কুণ্ডু বর্তমানে কারাগারে রয়েছেন।
তাপস ও সুদীপ গ্রেফতার হলেও তারা শর্তাধীন জামিনে মুক্ত রয়েছেন। সুদীপ জামিনের আগে চার মাস ও তাপস ১৩ মাস কারাবন্দি ছিলেন। গত জানুয়ারি মাসে উড়িষ্যা হাইকোর্ট তাপসকে জামিনে মুক্তি দেন। রোজভ্যালি থেকে বিভিন্ন আর্থিক সুবিধা গ্রহণ ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে ২০১৬ সালের ৩০ ডিসেম্বর সিবিআইর হাতে গ্রেফতার হন তিনি।
এরপরই তাকে উড়িষ্যার রাজধানী ভুবনেশ্বরের কারাগারে পাঠানো হয়। সেখানে জানুয়ারিতে অসুস্থ হয়ে পড়লে উড়িষ্যার হাইকোর্ট তার জামিন মঞ্জুর করেন। এক কোটি রুপি মুচলেকা দিয়ে জামিন পান তিনি। পাশাপাশি আদালত তার পাসপোর্ট জমা রাখেন।
তাপস পাল রোজভ্যালির চলচ্চিত্র বিভাগের পরিচালক ছিলেন। এই সংস্থা থেকে তিনি ও তার পরিবারের সদস্যরা প্রচুর আর্থিক সুবিধা নিয়েছেন। অভিযোগ ওঠার পর সিবিআই তাপসকে জেরা করে। তিনি অভিযোগ অস্বীকার করেন। তবে তাপস পালের দক্ষিণ কলকাতার বাসভবনে তল্লাশি চালিয়ে বেশ কিছু নথি বাজেয়াপ্ত করে সিবিআই। ওই সব নথির মাধ্যমে তার জড়িত থাকার বিষয়ে প্রমাণ পান গোয়েন্দারা