তথ্যপ্রযুক্তি ডেস্ক:: পৃথিবী জুড়ে পেট্রল-ডিজেল সহ খনিজ তেলের ভাণ্ডার ক্রমশ ফুরিয়ে আসছে।ভবিষ্যতে দেখা দিবে জ্বালানির অভাব।বিজ্ঞানীরা খোঁজ চালাচ্ছেন বিকল্প জ্বালানির। এই পরিস্থিতিতে যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক গ্রেগ রাউ বলেছেন বিকল্প রয়েছে হাতের নাগালেই।শুধু একটু পরিশ্রম করলেই তা মিলবে।
গ্রেগ বলেছেন, সমুদ্রের পানি থেকেই তৈরি হতে পারে বিকল্প জ্বালানি।সমুদ্রের পানির অণুগুলি ভেঙে তৈরি করতে হবে হাইড্রোজেন গ্যাস।এর জন্য ব্যবহার করতে হবে ইলেকট্রোলাইসিস পদ্ধতি।পানির তড়িৎায়ন হয়ে রাসায়নিক বিক্রিয়ায় এই জ্বালানি উৎপাদন করা সম্ভব।
হাইড্রোঅক্সাইড আয়ন ও হাইড্রোজেন আয়নগুলিকে আলাদা করতে পারা যাবে ইলেকট্রোলাইসিসের মধ্যে দিয়ে।এই হাইড্রোঅক্সাইড বাতাস থেকে কার্বন ডাই অক্সাইড শোষণ করবে। তৈরি করবে বায়ো কার্বোনেট৷তারপর সেখান থেকেই তৈরি করা যাবে বিশেষ জ্বালানি।
এই বায়ো কার্বেনেট কোনও ভাবেই সমুদ্রের ইকো সিস্টেমকে দূষিত করবে না।সমীক্ষা বলছে সৌর বিদ্যুৎ ও বায়ুশক্তি দিয়ে তৈরি বিদ্যুৎ যেভাবে বিকল্প জ্বালানি হিসেবে মর্যাদা পেয়েছে, তেমনই এই সমুদ্রের জল থেকে তৈরি জ্বালানি নতুন দিশা দেখাবে বিশ্বকে।
এই জ্বালানিকে বলা হচ্ছে হাইড্রোজেন ফুয়েল। এর খরচও অনেক কম বলে জানাচ্ছেন বিজ্ঞানীরা। এতে বাতাসে কার্বন ডাই অক্সাইডের পরিমাণও উল্লেখযোগ্য হারে কমে যাবে বলে মনে করছেন বিজ্ঞানীরা।
এর আগে, আয়ারল্যান্ডে একটি ইউরোপীয় গবেষণা প্রকল্পে সাগরের পানির নীচে সি-উইড বা অ্যালজি থেকে জ্বালানি উৎপাদনের নমুনা দেওয়া হয়। গবেষকরা ঐ সামুদ্রিক শ্যাওলা থেকে যে তেল উৎপাদন করেছেন, তা বায়োফুয়েল তৈরিতে কাজে লাগানো যায়। বিজ্ঞানীরা জানান সি-উইডের চাষ করতে কোনো সার লাগে না, চাষের জমি লাগে না। কিন্তু মাটিতে যে সব ফসলের চাষ হয়, সেখানে জমি নিয়ে টানাটানি। এছাড়া সি-উইড খুব তাড়াতাড়ি বাড়ে, ছ’মাসেই পুরো গজিয়ে যায়।
কিছু ধরণের অ্যালজি অর্থাৎ সামুদ্রিক শ্যাওলায় শর্করা আছে, যা বায়োএথানল তৈরিতে ব্যবহার করা যায়৷ অপর কিছু অ্যালজিতে তেল আছে, যা বায়োডিজেলে পরিণত করা যায়।
গবেষকরা এ ধরনের জ্বালানিকে ব্যবসায়িক দিক থেকে ব্যবহারযোগ্য করতে সচেষ্ট – তারা প্রধানত অ্যালজির বাড় ও অ্যালজিতে তেলের পরিমাণ বাড়ানোর চেষ্টা করছেন। গবেষক জুলি ম্যাগওয়ার বললেন, গবেষণা থেকে দেখা গেছে যে, এই শ্যাওলায় মাটিতে চাষ করা ফসলের চেয়ে ৭ থেকে ৩১ গুণ বেশি তেল থাকবে।