নিজস্ব প্রতিবেদক ::
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ জাফর ইকবাল-এর উপর হামলার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তার বিষয়টি সবাইকে ভাবিয়ে তুলেছে। ছাত্র শিক্ষকরা এখন নিজেদের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত। কেননা বিশাল এই ক্যাম্পাসের কোথাও নেই সীমানা প্রাচীর। ক্যাম্পাসটি অরক্ষিত থাকায় ঘটছে নানা রকম অপরাধ।
৩শ ২০ একর জায়গা জুড়ে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়। বিশাল এই ক্যাম্পাসের কোথাও নেই সীমানা প্রাচীর। পূর্ব ও পশ্চিমে মানুষের বসতভিটা ও কৃষিজমি, দক্ষিণে সুনামগঞ্জ সড়ক ও উত্তরে টিলা। সীমানা প্রাচীর না থাকায় গ্রাম ও টিলার সাথে মিশে একাকার বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা।
ফলে বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় বহিরাগতদের আনাগোনা অহরহ। ঘন ঘন ছিনতাইয়ের শিকার হচ্ছেন শিক্ষার্থীরা। মেয়েদের হলে নিয়মিত ঘটছে চুরির ঘটনা। শিক্ষার্থীরা জানান, সীমানা প্রাচীর না থাকায় ছিনতাইকারীরা খুব দ্রুত পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়। তাছাড়া শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাস এলাকায় সব সময় আতঙ্ক নিয়ে চলাফেরা করেন।
শিক্ষার্থীরা প্রশ্ন রাখেন, যেখানে পুলিশ প্রহরা থাকার পরও আমাদের শিক্ষকের উপর হামলা হয়েছে সেখানে আমাদের জীবনের নিরাপত্তা কতটুকু।
তাদের দাবি অনতি বিলম্বে বিশ্ববিদ্যালয়ের সীমানা প্রাচীর নির্মাণ করা হোক। পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢুকার সময় নিরাপত্তাকর্মীদের ধারা একটি চেকআপ ব্যবস্থা রাখারও দাবি তুলেন শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থীদের মতো প্রক্টর জহির উদ্দিন আহমদ নিজেও শঙ্কিত বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে। তিনি বলেন সিসি ক্যামেরা দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা নিয়ন্ত্রণ করতে গেলে হাজার হাজার সিসি ক্যামেরা লাগবে তাছাড়া এগুলো নিয়ন্ত্রণ করতে কিংবা মনিটরিং করতেও ব্যাপক জনবল প্রয়োজন হবে। তিনি মনে করেন সীমানা প্রাচীর নির্মাণ হলে কিছুটা শস্তি ফিরে আসবে ক্যাম্পাস এলাকায়।
শিক্ষক সমিতির সভায় বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তার বিষয়টি আলোচনা আসলে উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমদ সীমানা প্রাচীর নির্মাণের আশ্বাস প্রদান করেন। উপাচার্য বলেন, আশ-পাশের অনেকেই বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতর দিয়ে চলাফেরা করেন আমরা সেগুলো নজরদারির মধ্যে নিয়ে আসবো। সীমানা প্রাচীরসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তার স্বার্থে যা করণীয় সংশ্লিষ্ট সকলের সাথে আলোচনা করে খুব দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
নিরাপত্তার স্বার্থে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতরের সড়ক দিয়ে গ্রামের মানুষ কিংবা বহিরাগতদের চলাচল বন্ধের দাবি দীর্ঘদিনের। এই দাবি পূরণে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এমনটাই আশা করেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
উল্লেখ্য, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, প্রকৌশল শাস্ত্রে বিশেষ অবদান প্রদানকারী ও বাংলাদেশে নেতৃত্ব স্থানীয় এ বিশ্ববিদ্যালয়টি ২৫শে আগষ্ট ১৯৮৬ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় এবং ১৯৯১ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি তিনটি বিভাগ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কার্যক্রম শুরু হয়। এর ক্যাম্পাসটি সিলেট শহর হতে প্রায় ৫ কিলোমিটার দূরে কুমারগাঁওয়ে অবস্থিত। বিশ্ববিদ্যালয়ে ৬টি অনুষদের অধীনে ২৮ টি ডিপার্টমেন্ট রয়েছে।