জগন্নাথপুর প্রতিনিধি:: সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরে পূর্ব বিরোধের জের ধরে প্রতিপক্ষের হামলায় যুবক আহত হওয়ার ঘটনাকে ধামাচাপা দিতে সাজানো অগ্নিকা-ের অভিযোগ পাওয়া গেছে। ঘটনাটি ঘটেছে জগন্নাথপুর উপজেলার কলকলিয়া ইউনিয়নের শ্রীধরপাশা গ্রামে। এ নিয়ে আবারো উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে এলাকা।
জানাগেছে, মাদ্রাসার জমি নিলাম নিয়ে সম্প্রতি-শ্রীধরপাশা গ্রামের ফয়সল মিয়া ও জাবেদ আলমের লোকজনের মধ্যে সংঘর্ষে প্রতিপক্ষের বন্দুকের গুলিতে ফয়সল পক্ষের ১ জন নিহত সহ ৭০ জন আহত হওয়ার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় উভয় পক্ষের মধ্যে মামলা ও পাল্টা মামলা চলছে। এর মধ্যে হত্যা মামলার অধিকাংশ আসামি জামিনে মুক্তি পেয়ে বাড়িতে এসে প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতে একের পর এক নতুন ঘটনা ঘটিয়ে চলেছে। এরই জের ধরে শনিবার সকালে প্রতিপক্ষের হামলায় ফয়সল পক্ষের সাহিদ আহমদ (২২) নামের এক যুবক আহত হন। আহতকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। এ ঘটনাকে ধামাচাপা দিতে একটি সাজানো অগ্নিকা-ের ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে জগন্নাথপুর ফায়ার সার্ভিসের দমকল বাহিনী গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রনে আনেন এবং জগন্নাথপুর থানা পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে।
সরজমিনে দেখা যায়, অগ্নিকা-ে মাটির বেড়া ও টিনের ছাউনির পুরনো ছোট একটি বাংলো ও গোয়াল ঘর পুড়েছে।
এ সময় জাবেদ আলম পক্ষের লোকজন অভিযোগ করে বলেন, প্রতিপক্ষের লোকজনের লাগানো আগুনে ঘর পুড়েছে। এদিকে-ফয়সল পক্ষের লোকজন পাল্টা অভিযোগ করে বলেন, প্রতিপক্ষের কদ্দুছ মিয়ার নেতেৃত্বে মতিন, মিজানুর, আমিনুর, আলী নুর, শিবলু, মারুফ, খালিক, রাজু, সুমন, সালমান, লোকমান, গিলমান সহ ১০/১৫ জন লোক মিলে বাড়ি থেকে স্থানীয় মোহাম্মদগঞ্জ বাজারে যাওয়ার পথে তাদের বাড়ির সামনে রাস্তায় আমাদের পক্ষের যুবক সাহিদ আহমদের উপর অতর্কিত হামলা করে। এ ঘটনাকে ধামাচাপা দিতে এবং সাজানো মামলায় ফাসাতে তারা নিজেরা নিজের ঘর আগুন লাগিয়ে পুড়েছে।
এ সময় জানতে চাইলে গ্রামের নিরপেক্ষ ও প্রত্যক্ষদর্শী ব্যক্তি বালু কাজের শ্রমিক আজিজুর রহমান বলেন, প্রথমে যুবক সাহিদ আহমদকে মারপিট করে কদ্দুছ মিয়ার লোকজন। আমরা এগিয়ে গিয়ে তাকে রক্ষা করি। পরে দেখা যায়, কদ্দুছ মিয়া ও তার বোন জমিরুন বেগম মিলে তাদের পুরনো ঘরে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। গ্রামের ছব্বির মিয়া মিয়া নামের আরেক নিরপেক্ষ প্রত্যক্ষদর্শী ব্যক্তি বলেন, সাহিদ আহমদকে মারপিট করে কদ্দুছ মিয়ার লোকজন আবার নিজেরা নিজের ঘরে আগুন দিয়েছে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, প্রতিপক্ষকে ফাসাতে মিথ্যা অগ্নিকা-ের ঘটনা সাজানো হয়েছে।
এছাড়া মুজিবুর রহমান, মাহবুব হোসেন ও হাসান নুর সহ এলাকার গন্যমান্য অনেক নিরপেক্ষ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন, মারপিট ও আগুনের খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নেভাতে চাইলে কদ্দুছ মিয়ার লোকজন আমরা গ্রামবাসীকে আগুন নেভাতে দেয়নি। তারা ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশ যাওয়ার পর আগুন নেভাতে দিয়েছে। এতেই প্রতীয়মান হয়, এটি একটি সাজানো নাটক।
জানতে চাইলে ঘটনাস্থল পরিদর্শনকারী জগন্নাথপুর থানার এসআই হাবিবুর রহমান জানান, এটি একটি সন্দেহ জনক অগ্নিকা-ের ঘটনা।